মোহমুক্ত বাজেট

উচ্চ জিডিপির প্রতিশ্রুতি নেই, নেই মেগা-প্রকল্প নিয়ে মাতামাতি। সংসদের সেই চিরচেনা টেবিল চাপড়ে উচ্ছ্বাসও দেখা যাবে না। এ বছর বাজেট মানে শুধুই অর্থ উপদেষ্টার বক্তৃতা যা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত হবে।

আজ সোমবার দুপুর ৩টায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, যা তার জীবনেও প্রথম বাজেট। আড়ম্বর আর জাঁকজমক না থাকলেও নতুন বাজেট শোনার অপেক্ষায় দেশের আপামর মানুষ। বলা যেতে পারে, বহু বছরের মধ্যে এটি হতে যাচ্ছে বাস্তবসম্মত কোনো বাজেট। কারণ এই বাজেট দেশের অর্থনীতির জন্য বহু প্রতীক্ষিত 'আর্থিক শুদ্ধিকরণ' নিয়ে আসছে।

আশা করা হচ্ছে সহনশীলতা আর কঠিন সিদ্ধান্তের কথাই সোজাসাপ্টাভাবে বলবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। যে জাতি এতদিন বড় বড় প্রতিশ্রুতি শুনে এসেছে, তারা সম্ভবত এবার 'বাস্তবতার ভাষা' শুনবে, যা তাদের বিভ্রম বা মিথ্যা আশ্বাস দেবে না। বাজেটে ঘাটতি থাকছে জিডিপির মাত্র ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, যা এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন। এটি অতীতের ঢিলেঢালা আর্থিক নীতির থেকে এক সুস্পষ্ট পার্থক্য। আজকের দিনটা হতে পারে আগের সরকারের বিতর্কিত কাজের হিসাব মেলানোর দিন।

সালেহউদ্দিন আহমেদ যে অতীতের ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইবেন তা সহজেই অনুমেয়। তিনি নতুন অর্থবছরের জন্য মোট ব্যয় ৭,০০০ কোটি টাকা কমিয়ে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনতে চাইছেন। এটি খুব বড় কাটছাঁট না হলেও, এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে অর্থনৈতিক খরচ কমানোর রাশ টেনে ধরা হচ্ছে।

সাশ্রয়ী বাজেট মানেই যে এটি গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোকে উপেক্ষা করবে, এমনটা নয়। সরকার চাইলে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামোতে সরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারে। ব্যয় করার সিদ্ধান্ত কেবল একটি আর্থিক বিষয় নয়, এটি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও। যদিও সরকারের হাতেই অর্থের ক্ষমতা নিহিত। তাই খরচ যেন শুধু নিয়মের গাঁটছড়া বা অন্ধ 'সাউন্ড ফিন্যান্স' নীতির পেছনে পড়ে না থাকে।

বহু দিন ধরেই উপেক্ষিত এক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু- বেকারত্ব। এবার এই বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার সময় এসেছে, বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যখন 'শূন্য বেকারত্ব' লক্ষ্য ঠিক করেছেন। দশকের পর দশক অর্থনীতি বড় হয়েছে, কিন্তু কর্মসংস্থান বাড়েনি। সড়ক, সেতু, দালানকোঠা নির্মিত হয়েছে—কিন্তু কোটি মানুষ রয়ে গেছে কর্মহীন। উন্নয়নের আড়ালে এক ধরনের কর্মসংস্থানহীন অর্থনীতি গড়ে উঠেছে, যা নিঃশব্দে মানুষের সম্মান আর আশাকে ধীরে ধীরে ক্ষয় করেছে। এই নীরবতা আর উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। বেকারত্বের এই অভিশাপকে জাতীয় অর্থনৈতিক চিন্তার কেন্দ্রে আনার এখনই সময়। কারণ যে উন্নয়ন মানুষের কাজের সুযোগ তৈরি করে না, সেই উন্নয়ন আসলে মানুষকে বাদ দিয়ে হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, 'আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যে ধরনের দক্ষতা শেখাচ্ছে, আর বেসরকারি খাতে যে ধরনের দক্ষতা দরকার, তার মধ্যে একটা বড় পার্থক্য তৈরি হচ্ছে। এর ফলে চাকরির সুযোগ কমে যাচ্ছে।'

তিনি আরও যোগ করেন, 'একই সাথে, অনেক মানুষ অনিরাপদ বা অস্থায়ী কাজের (যেমন দিনমজুরের কাজ) মধ্যে আটকে আছে, যেখানে চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই এবং সুযোগ-সুবিধাও প্রায় কিছুই থাকে না।'

অন্যদিকে বাজেট এমন এক সময়ে আসছে, যখন দেশের রাজনীতির আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। আশাবাদের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনিশ্চয়তা—কারণ রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন কবে হবে, সেই স্পষ্টতা খুঁজছে। আর এই অসন্তোষের ঢেউ বাইরের দিকেও ছড়িয়ে পড়ছে।

বাজেট ঘোষণার ঠিক আগেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সমর্থিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একটি অধ্যাদেশ নিয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। যা তাদের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটায়। একই সময়ে ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনেও মেয়রের অফিসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তীব্র আন্দোলন শুরু হয়। শুধু তাই নয় নতুন আরেকটি অধ্যাদেশ নিয়ে সচিবালয়েও শুরু হয় বিক্ষোভ। আর এসব কিছুই ঘটে একসঙ্গে, প্রায় একই সময়ে।

কল্পনার ফানুস নয়

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আগেই রেকর্ড করে রাখা বাজেট বক্তব্যে জিডিপি সংক্রান্ত কোনো কল্পকথা এবার প্রচার করবেন না। অন্তত এ বছর কোনো উচ্ছ্বসিত পূর্বাভাস থাকছে না। সরকারের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস আইএমএফের সতর্ক পূর্বাভাসের চেয়েও কম। যেকোনো মূল্যে প্রবৃদ্ধি অর্জনের কিংবা ফাঁকা বুলি আওড়ানোর দিন হয়তো আর থাকছে না।

গত সপ্তাহে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) তাদের প্রাথমিক প্রাক্কলন প্রকাশ করেছে, যা অনেকের আশঙ্কাই সত্য বলে প্রমাণ করে। চলতি অর্থবছরে দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ, যা কোভিড-১৯ মহামারির বছরের পর সর্বনিম্ন। এই ধীরগতির মূল কারণ কৃষি খাত।

তবুও, একটি বড় সংখ্যা আলোচনার টেবিলে ঘুরপাক খাচ্ছে। নতুন অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি ৫০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অনেকে এই অনুমানকে সংশয়ের চোখে দেখলেও, যেখানে সংযমই এবারের মূলমন্ত্র, সেখানে এই অর্জন একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবেই বিবেচিত হবে।

আর এই সংখ্যাগুলোর আড়ালে রয়েছে গভীরতর বাস্তবতা: একটি দেশ অর্থনৈতিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই প্রথমবার বাজেট দেওয়া হচ্ছে অর্থনৈতিক প্রয়োজনকে সামনে রেখে, কোনো রাজনৈতিক খেয়ালখুশি অনুযায়ী নয়।

তবে অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য অন্তর্বর্তী সরকার এখনো স্পষ্ট কোনো রোডম্যাপ তৈরি করেনি। তাদের মতে, বাজেটের হিসাব-নিকাশ বাস্তবসম্মত ও সৎ হলেও, দিকনির্দেশনা না থাকলে তা পথ হারিয়ে ফেলতে পারে। তাদের যুক্তি, বাজেট শুধু এক বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নয়—এটা হতে পারে দেশের অর্থনীতিকে গড়ে তোলার, সংস্কার করার ও নতুনভাবে ভাবার এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।

এ বছর বাজেট মূল্যায়নের মাপকাঠিও পরিবর্তিত হবে। ভর্তুকি কি চালু থাকবে? হ্যাঁ, তবে তা কেবল খাদ্য ও কৃষি উপকরণে। অবকাঠামো খাতে ব্যয় কি বাড়বে? সম্ভবত নয়। এবার দৃষ্টি শহরের চাহিদার পরিবর্তে গ্রামীণ অর্থনীতির প্রয়োজনের দিকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, সরকারের উচিত হবে শ্রমনির্ভর খাতগুলোতে—যেমন কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ, হালকা প্রকৌশল ও তথ্যপ্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়া। এসএমই খাতকে সহায়তা করে, উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিয়ে এবং কারিগরি ও পেশাগত প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়িয়ে একটি শক্তিশালী কর্মসংস্থান কৌশল তৈরি করলে বাস্তব পরিবর্তন আনা সম্ভব।

কর প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টার বার্তা স্পষ্ট। গত ১৮ মে এক অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, 'আমি প্রতিটি কর ছাড় বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে।' তার এই কথায় বোঝা যাচ্ছে, বিশেষ সুবিধা দেওয়ার দিন হয়তো শেষ হতে চলেছে।

এই সরকারকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নয়, সংস্কারে কতটা অগ্রগতি আনতে পারে, তা দিয়েই বিচার করা হবে। আর সংস্কার কখনো সহজ হয় না। ব্যাংক খাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে—আগুন ছড়ানোর আগেই তা নিভিয়ে দিয়েছে। বেপরোয়া ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনতে শুধু নীতি নয়, দরকার শক্ত অবস্থান। এই জায়গায় বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের প্রথম বড় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।

এই সরকার এখন আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ও মূল্যস্ফীতি কমানোকে প্রধান লক্ষ্য হিসেবে নিয়েছে। এই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আসন্ন বাজেট কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য সামাজিক খাতগুলোকে অগ্রাধিকার দেবে।

খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্রতার প্রেক্ষাপটে সরকার সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সম্প্রসারণ এবং খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্যোগে অর্থায়ন করার পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যের ব্যবস্থা থাকবে। একই সঙ্গে, কৃষি খাতের রূপান্তর একটি মূল কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে। গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা এবং ক্ষুদ্র কৃষকদের সহায়তার লক্ষ্যে যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজে ভর্তুকি অব্যাহত থাকবে।

ঋণ ঝুঁকি

আগের সরকারের রেখে যাওয়া আর্থিক বোঝা এখনো বাংলাদেশের কাঁধে। অর্থ উপদেষ্টা যেমনটা ইঙ্গিত দিয়েছেন, সরকারের লক্ষ্য দেশের ঋণের ঝুঁকি মাঝারি থেকে কমিয়ে নিচে নামিয়ে আনা। এটি সহজ কোনো কাজ নয়।

তবে এখানে একটি উল্টো চিত্রও দেখা যাচ্ছে: বিদেশি ঋণ আরও বাড়বে। এই ঋণ বড় বড় বা চমকপ্রদ কোনো প্রকল্পের জন্য নেওয়া হচ্ছে না, বা রাজনৈতিক কারণেও নয়। বরং আগের কিছু সমস্যা মেটাতে এবং অর্থনীতি সচল রাখতে এই ঋণ দরকার। বিদেশি ঋণ বাড়ানোর কারণ হলো এমন কিছু বিল, যা শোধ করা ছাড়া উপায় নেই। জ্বালানি খাতের ঘাটতি পূরণ করা জরুরি সেইসঙ্গে অতিরিক্ত ব্যয়ের অবকাঠামোগুলোর দায় এখনো আর্থিক হিসাবে দৃশ্যমান।

কঠিন সময় ও সতর্কতার এই বছরে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স অর্থনীতিতে জরুরি স্বস্তি এনেছে। বাণিজ্য ঘাটতি সংকুচিত হয়েছে। দীর্ঘকাল ধরে ঋণাত্মক থাকা চলতি হিসাব ইতিবাচক হওয়ার লক্ষণ দেখাচ্ছে। এমনকি বৈদেশিক দুর্বলতার প্রতিফলন হিসেবে বিবেচিত ব্যালেন্স অফ পেমেন্টসও সঠিক দিকে মোড় নিতে শুরু করেছে। ২০ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রয়েছে, যা দেশের স্থিতিস্থাপকতার একটি লক্ষণ।

তবে আলোর বিপরীত চিত্রের গল্পও আছে।

আমদানি কিছুটা বেড়েছে বটে, তবে তা খুবই সামান্য। মেশিনপত্র আমদানি কমেছে, যা বিনিয়োগ আগ্রহের গুরুত্বপূর্ণ দিক। মূলধনী পণ্যের জন্য এলসি (ঋণপত্র) খোলার পরিমাণও কমে গেছে, যা অর্থনীতির দ্বিধাগ্রস্ততাকেই বোঝায়।

বিশ্বজুড়ে পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পরিবেশ আরও অস্থির হয়ে উঠছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টাপাল্টি শুল্ক নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। ভারতের অপ্রত্যক্ষ বাধায় বাণিজ্য পথ সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এত সবকিছুর মধ্যে, দেশের ভেতরে ও বাইরে দর কষাকষি করার ক্ষমতা বাংলাদেশের জন্য এক বড় পরীক্ষা হবে। ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বেরিয়ে আসার পথে এগোচ্ছে। এর ফলে সামনে যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক জটিল আলোচনাগুলো সামাল দিতে হবে সরকারের ওপর তার চাপ আরও বাড়বে।

নতুন অর্থবছর যেন এক খাড়া পাহাড়ি পথের মতো—সরু, অনিশ্চিত এবং এখানে প্রতিটি পদক্ষেপই খুব সাবধানে ফেলতে হবে। এই নতুন শুরুতে, তাই সাবধানতাই একমাত্র নিরাপদ পথ।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh trade deficit July-August FY25

Trade deficit narrows 2.6% in July-April

The country’s trade deficit narrowed by 2.60 percent in the first ten months of the current fiscal year compared to the same period a year ago, thanks to a rise in export earnings coupled with subdued imports..During the July-April period of fiscal year (FY) 2024-25, the trade gap was $18.

5h ago