জুরিখ বাংলা স্কুলের পিঠা মেলা ও বই বিতরণ উৎসব

জুরিখ বাংলা স্কুলের বই বিতরণ উৎসব এবং পিঠা মেলা ২০২৩। ছবি: সংগৃহীত

সুইজারল্যান্ডের জুরিখ বাংলা স্কুলের আয়োজনে শীতের পিঠা মেলা এবং বই বিতরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার ১১৪ নম্বর লিমাট স্ট্রিটের হলরুমে স্কুলের শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শুভাকাঙ্ক্ষী এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ এতে অংশ নেয়।  

উষ্ণ হলরুমের ভেতরে শিশুদের নিয়ে যখন উৎসব চলছিল, তখন বাইরের তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের নিচে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। করোনাকাল ছাড়া শীতের এই সময়টিতে প্রতিবছরই বাংলা স্কুল জুরিখ প্রবাসী শিশু-কিশোরদের সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের মাধ্যমে সরবরাহ করা বই বিতরণ করে। বাংলাদেশের টেক্সট বই, দেশের বই উৎসবের সঙ্গে মিল রেখে আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে শিশু-কিশোরদের মাঝে বই বিতরণ করা হয়। 

আর এই উৎসবটিই বই বিতরণ উৎসব। বইয়ের সঙ্গে শীতের পিঠা থাকলে উৎসবের আমেজটা আরও বেড়ে যায়। প্রবাসী প্রজন্মকে দেশের সংস্কৃতি হাতে-কলমে শেখাতে আয়োজন করা হয় পিঠা উৎসব। 

জুরিখ বাংলা স্কুলের বই বিতরণ উৎসব এবং পিঠা মেলা ২০২৩। ছবি: সংগৃহীত

শিশুরা মা-বাবার সঙ্গে নিজের হাতে তৈরি করে নানা রকমের দেশীয় পিঠা। এমন শিক্ষার মাধ্যমে এই শিশুরাই একদিন সুইস প্রবাসে ধরে রাখবেন দেশের শেকড়ের এই সংস্কৃতি। জুরিখের বাংলা স্কুল চাওয়া দেশীয় সংস্কৃতি ও শিক্ষা বিকাশের কর্মসূচি ছড়িয়ে পড়ুক প্রবাসের সবখানে।

দেশের বই আর পিঠা একসঙ্গে পেয়ে উৎসবে অংশ নেওয়া শিশুরা খুবই আনন্দিত। সুইসরা যেখানে বাংলাদেশের খাবার ও পিঠা আনন্দের সঙ্গে সুস্বাদু বলে গ্রহণ করে, তবে আমাদের সন্তানরা কেন করবে না? বাংলা স্কুলের এসব অনুষ্ঠানে সবসময় উপস্থিত থাকেন স্থানীয় সুইসদের অনেকে।

এ বছরের উৎসবে স্কুলের শুভাকাঙ্ক্ষীদের বাইরেও উপস্থিত ছিলেন জুরিখের সংসদ সদস্য সান্দ্রা বিনেকসহ ভিনদেশীদের অনেকেই।

বাংলা স্কুল জুরিখ ভাষা দিবস, স্বাধীনতা এবং বিজয় দিবসসহ সব জাতীয় দিবসগুলো পালন করে। এ ছাড়া উল্লেখ করার আরেকটি উৎসব আছে, যেটি হলো ফল পরিচিতি উৎসব। দেশে উৎপাদিত প্রায় সব ফলের সমাহার ঘটিয়ে শিশুদের সামনে উপস্থাপন করা হয় ওই উৎসবে। সেখানেই হরেক রকমের ফলের নাম ও স্বাদ জেনে যায় শিশুরা। 

জুরিখ বাংলা স্কুলের বই বিতরণ উৎসব এবং পিঠা মেলা ২০২৩। ছবি: সংগৃহীত

বই বিতরণ উৎসব সবসময় সুইস প্রবাসী শিশুদের উত্সাহিত করে ভিন্নভাবে। আর এর কারণ হলো-সুইজারল্যান্ডের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত বাংলাদেশের মতো পাঠ্যবই নেই, যা শিশুরা তাদের বাসায় নিয়ে যেতে পারে। দেশের শিক্ষার্থীদের মতো পড়ার টেবিলে পাঠ্যপুস্তক সাজিয়ে রাখার সুযোগ সুইস শিশুরা পায় না। অভিভাবকরা জানেনই না তাদের সন্তানের পাঠ্য বই কোনগুলো? দোকান থেকেও কেনার সুযোগ নেই। 

তবে বাজারে আছে বিভিন্ন প্রকাশনীর রকমারি বই। কোন বই কিনলে শিক্ষার্থী হোম ওয়ার্কের জন্য উপকৃত হবে, শিক্ষকরা তার ধারণা দেন। তবে লাইব্রেরিতে সব ধরনের বই পাওয়া যায়। সেখান থেকে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় বই বাসায় নিয়ে যেতে পারে শিক্ষার্থীরা। 

দেশের পাঠ্যপুস্তক এমন করে যখন শিশুরা হাতে পায়, তখন তারা বিশেষ এক আনন্দে অভিভূত হয় এবং হওয়াটাও স্বাভাবিক।

প্রবাসী শিশুদের মাঝে বই বিতরণের আহ্বান জানিয়ে প্রথম একটি টক শোতে আলোচনা করি সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজার সঞ্চালনায় চ্যানেল আই টেলিভিশনের 'আজকের সংবাদপত্র' বিশ্লেষণ অনুষ্ঠানে। বিষয়টি সরকার নজরে নিয়ে কিছুটা সাড়াও দেয়। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় বই পাওয়া সহজ ছিল না। 

আমাদের বক্তব্য ছিল, সব প্রবাসী শিশুদের হাতে যেন রঙিন খামে একটি করে বই দেওয়া হয়। অনেক জটিলতা শেষে স্থায়ী মিশন জেনেভার সর্বাত্মক সহযোগিতায় বাংলা স্কুল জুরিখ এখন নিয়মিত দেশের পাঠ্যবই পাচ্ছে এবং দেশের মতোই উৎসব করে সেগুলো বিতরণ করছে।

বাংলা ভাষা শিক্ষায় প্রবাসে বড় কোনো অর্জন খুবই কষ্টসাধ্য। প্রবাসী সব শিশু ন্যুনতম বাংলা  

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh 2025-26 budget

Budget to shrink amid fiscal strain

Bangladesh’s interim government is preparing to unveil a rare contractionary budget on June 2, driven by a sharp rise in interest payment that is crowding out fiscal space and forcing spending cuts.

12h ago