অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল একাডেমির সাফল্যের ৭ বছর
সিডনিতে উদযাপিত হয়েছে অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল একাডেমির ৭ বছর পূর্তি উৎসব।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাঁচতারা হোটেল রিজেস ওয়ার্ল্ড স্কয়ারের বলরুমে আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ উৎসবে উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউটের কর্মী, শিক্ষক, শতাধিক এজেন্ট, সাংবাদিক, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও কমিউনিটির নেতাসহ ৩ শতাধিক অতিথি।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান শিক্ষাবিদ ও ব্যবসায়ী শ্রাবন্তী আশরাফী প্রতিষ্ঠিত অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল একাডেমিতে বর্তমানে ৬৫ দেশের ১ হাজার ২০০ বেশি শিক্ষার্থী ১৪ কোর্সে সিডনির সিবিডি, প্যারামাট্টা ও বলকাম হিলসের ক্যাম্পাসে পড়ছেন।
উৎসবটি উদ্বোধন করেন কনস্যুলেট জেনারেল অব বাংলাদেশ মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। তিনি অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল একাডেমির অভাবনীয় সাফল্যের জন্য ধন্যবাদ জানান। কনসাল জেনারেল অস্ট্রেলিয়ায় এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনার জন্য শ্রাবন্তী আশরাফীর প্রশংসা করেন। তিনি সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
শ্রাবন্তী আশরাফী শিক্ষার্থী থাকাকালে চিন্তা করতেন, অস্ট্রেলিয়ায় আন্তর্জাতিকমানের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে তিনি সব সময় মনে করতেন, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করুক।
বিশেষ করে, পড়ালেখার পাশাপাশি ভাষাগত কারণে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কাজের সমস্যাটিও তাকে পীড়া দেয়। এর ফলে, তিনি অস্ট্রেলিয়ায় গড়ে তোলেন অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি ও শিক্ষার্থীদের কাজের জন্য বেশ কয়েকটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
শ্রাবন্তী আশরাফী দুঃখ করে বলেন, 'অস্ট্রেলিয়ায় চীন, কোরিয়া, নেপাল, ভারত থেকে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী পড়তে আসলেও বাংলাদেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা এখনো তেমন উল্লেখযোগ্য নয়।' তিনি এই জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও চুক্তির আহবান জানান।
শ্রাবন্তী আশরাফী স্বাগত বক্তব্যে বলেন, 'আমরা ৭ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশন পরিচালিত 'কমপ্লাইন্স অডিটে' শতভাগ নম্বর পাই। এর ৭ বছর পরও একই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য আমাদের ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রেশন আরও ৭ বছরের জন্য দেওয়া হয়।'
'অস্ট্রেলিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশন পরিচালিত জরিপে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নেন' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'শতভাগ শিক্ষার্থী এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি তারা "হাইলি স্যাটিসফাইড" বা অত্যন্ত সন্তুষ্ট বলে মতামত দেয়। উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, ডেডিকেটেড স্টুডেন্ট সার্ভিস, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক ও শতাধিক স্টুডেন্ট এজেন্টদের সহযোগিতার কারণে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।' তিনি সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউটের মার্কেটিং পরিচালক সুবাস শাহ, নন রেসিডেন্ট নেপালিজ অ্যাসোশিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নন্দা গুরাং ও এবিসি এজেন্সির পরিচালক ইয়ার্ন।
অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল একাডেমির পক্ষ থেকে 'টপ পারফর্মিং পারফরমেন্স' ক্যাটাগরিতে এবিসি এডুকেশন, স্ট্যামফোর্ড এডুকেশন, ভাইব্রেন্ট এডুকেশন, অজ স্টাডি সাপোর্ট ও ক্যারিয়ার উইংসকে পুরস্কার দেন। 'বেস্ট সাপোর্টিভ' এজেন্ট ক্যাটাগরিতে ২০ এজেন্সিকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা গান ও নাচ পরিবেশন করেন।
প্রতিবছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান মূল্যায়ন করে অস্ট্রেলিয়া সরকার। অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি মানসম্পন্নভাবে চলছে কিনা ও গুণগত শিক্ষা দিচ্ছে কিনা—এ মূল্যায়নে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এটি আন্তর্জাতিকমানের প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পাচ্ছে।
অস্ট্রেলেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি সময়ের সঙ্গে পাঠ্যক্রম উন্নয়ন ও প্রয়োগকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। পাশাপাশি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ শেষে কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করছে।
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments