মালয়েশিয়ায় স্বর্ণপদক পেলেন বাংলাদেশি গবেষক ড. লায়লা নাহার

স্বর্ণপদক হাতে বাংলাদেশি গবেষক ড. লায়লা নাহার। ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় গ্রিন টেকনোলজির ব্যবহার করে স্বাস্থ্যকর মাশরুম ক্র্যাকার্স উদ্ভাবনে স্বর্ণপদক পেলেন প্রবাসী বাংলাদেশি গবেষক ড. লায়লা নাহার। দেশটির উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে এ সম্মাননা দিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া কেলানতানে (ইউএমকে) অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের শেষ দিন গত ৩ নভেম্বর ড. লায়লা নাহারসহ ৮ জন গবেষককে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া কেলানতানের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. রাজলি বিন চী রাজাক, উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. মোহাম্মদ জাবরি বিন ইউসুফ, ডেপুটি ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আরহাম বিন আব্দুল্লাহ, ডিরেক্টর অব রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন প্রফেসর ড. আহমাদ জাইদ বিন সোলাইমান, ইউএমকের ডিরেক্টর অব আইসিডি, প্রফেসর ড. জুলি বিনতে মোহাম্মাদ।

প্রতি দুই বছর পরপর আয়োজিত এ আন্তর্জাতিক উদ্ভাবন সম্মেলন ও প্রদর্শনীতে মালয়েশিয়ার সব বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, পলিটেকনিক, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি কলেজ, স্কুল, শিল্প-এজেন্সি থেকে গবেষকরা অংশ নেন। 

সম্মেলনে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা গবেষকদের পদক দেওয়া হয়। এবার অংশ নেন ৪৭৭ জন গবেষক। 

ড. লায়লা নাহারের উদ্ভাবিত 'মাশরুম ক্র্যাকার্স' ১০০ শতাংশ জৈব উপাদানের মাধ্যমে তৈরি। এতে কোনো টেস্টিং সল্ট বা কৃত্রিম রঙ মেশানো হয় না, যার কারণে অনেক স্বাস্থ্যকর এবং প্রোটিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ। মাত্র ৪টি উপাদানে তৈরি বলে প্রস্তুত খরচও অনেক কম।

ড. লায়লা নাহার বর্তমানে ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া কেলানতানের কৃষি-ভিত্তিক শিল্প অনুষদে সিনিয়র লেকচারার পদে কর্মরত। এর আগে, তিনি ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়াতে পোস্ট-ডক্টরাল ফেলো ছিলেন।

রাজশাহী উপশহর নিবাসী মোহাম্মদ নাসিম আলী এবং হোসনে আরা বেগমের মেয়ে লায়লা নাহার ২০০৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে তিনি ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়া থেকে মাইকোলজি অ্যান্ড প্ল্যান্ট প্যাথলজি বিষয়ে পিএইচডি  ডিগ্রি অর্জন করেন।

উদ্ভিদের রোগ নির্ণয়, প্যাথোজেনিক জীবাণু শনাক্তকরণ, উদ্ভিদ-প্যাথোজেন মিথস্ক্রিয়া, ছত্রাকের নির্যাস থেকে জৈব হার্বিসাইড যৌগ শনাক্তকরণ, মাশরুম চাষ, ব্যয়িত মাশরুম সাবস্ট্রেট থেকে জৈবসার উৎপাদন এবং পণ্য বিকাশের মতো বিভিন্ন ধরণের গবেষণার ক্ষেত্রে তিনি জড়িত রয়েছেন। 

হাই ইমপ্যাক্ট জার্নালে তার ৪০টি গবেষণাপত্র প্রকাশ হয়েছে। এ পর্যন্ত একটি ট্রেডমার্ক এবং দুটি কপিরাইট পেয়েছেন। তিনি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবেও আমন্ত্রিত হয়েছেন। উচ্চ শিক্ষার পাঠদান এবং কোর্স পরিচালনার পাশাপাশি লায়লা নাহারের  গবেষণার কিছু অংশ স্থানীয় কমিউনিটির উন্নয়নমূলক কাজেও জড়িত রয়েছে।

পদক পাওয়ার অনুভূতি জানাতে গিয়ে ড. লায়লা নাহার বলেন, 'পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি গবেষকরা সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। মালয়েশিয়াতেও এর ব্যতিক্রম নয়। তার প্রমাণ দিতে পেরে গর্ববোধ করছি।'

ড. লায়লা নাহারের এই সাফল্যর পেছনে মা-বাবার সঙ্গে স্বামী সাইনুল ইসলামের অনুপ্রেরণা ও সমর্থনের কথাও জানান।

মালয়েশিয়া প্রবাসী সাইনুল ইসলাম বলেন, 'তার শ্রম আজ সফল হয়েছে। বিদেশের মাটিতে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। আমরা গর্বিত।

লেখক: মালয়েশিয়াপ্রবাসী  সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Teknaf customs in limbo as 19 mt of rice, authorised by AA, reaches port

The consignment of rice weighing 19 metric tonnes arrived at Teknaf land port on Tuesday evening with the documents sealed and signed by the Arakan Army

1h ago