মিশিগানে বাংলাদেশি মেলা
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে 'বাংলাদেশি মেলা' ঘিরে উৎসবে মেতে উঠেছিলেন প্রবাসীরা। ঐতিহ্যর স্বাদের সঙ্গে কেনাকাটা আড্ডা আর আনন্দে বাংলাদেশিদের মহামিলন হয় ৩ দিনের এই মেলায়। শেষ দিনে হাজারো বাংলাদেশির উপস্থিতিতে মেলা প্রাঙ্গণ হয়ে উঠেছিল এক টুকরো বাংলাদেশে।
ডেট্রয়েট সিটির বাংলা টাউন খ্যাত জেইন পার্কের মাঠে মেলার আয়োজন করে নর্থ আমেরিকান বাংলাদেশি ফেস্টিভ্যাল। গত শুক্রবার শুরু হওয়া এই মেলা গত রোববার শেষ হয়েছে।
বাংলাদেশি ঐতিহ্যকে ধরে রাখার সঙ্গে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ২১ বছর ধরে এ মেলা হয়ে আসছে। সারাবছর মিশিগানের বাংলাদেশিরা এ মেলার অপেক্ষায় থাকেন।
শুরুর দিন শুক্রবার কর্মদিবস থাকায় দর্শনার্থীর উপস্থিতি ছিল কিছুটা কম। কিন্তু পরের ২ দিন শনিবার ও রোববার সাপ্তাহিক ছুটিতে দিনভর প্রবাসী বাংলাদেশিদের পদচারণায় মুখরিত ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। মিশিগানের শহরগুলোতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা পরিবার নিয়ে এসেছিলেন মেলায়। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী প্রবাসীর উপচেপড়া ভিড় ছিল।
হরেক রকমের ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি পণ্যের পসরা সাজিয়ে মেলাকে আকর্ষণীয় করে তুলেন সৌখিন প্রবাসী দোকানিরা। বুটিক, মৃৎ ও হস্তশিল্প, পোশাক, জুয়েলারিসহ রকমারি স্টলের পাশাপাশি ছিল দেশীয় স্বাদের খাবারের অনেক দোকান। ক্রেতাদের বেশি নজর কাড়ে মৃৎ ও হস্তশিল্পে জিনিসপত্র।
দেশীয় হুক্কা ও হাত পাখায় আনন্দ খুঁজে পান অনেকে। অনেকে রিকশায় চড়ে দারুণ আনন্দ পেয়েছেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি।
দোকানিরা জানান, বাংলাদেশি ছাড়াও অন্য দেশের প্রবাসীরাও মেলায় এসে কেনাকাটা করছেন। বেশি বিক্রি হয়েছে পোশাক ও দেশি খাবার।
বিনোদনের জন্য ছিল তারকাশিল্পীদের বর্ণাঢ্য সংগীতায়োজন। শেষদিনের মূল আকর্ষণ ছিল সংগীত শিল্পী বেবী নাজনিন।
সন্ধ্যার পরে মঞ্চে আসেন বেবী নাজনীন। নিউইয়র্কের পরে মিশিগানে এত বাংলাদেশিদের উপস্থিতি দেখে দারুণ উচ্ছ্বাসিত হন তিনি।
'বাংলাদেশ' শিরোনামের প্রথম গান দিয়ে শুরু, একে একে নিজের জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশনের সময় নেচে গেয়ে পুরোটা সময় মঞ্চ মাতিয়ে রাখেন তিনি। আনন্দ উন্মাদনায় মেতে উঠেছিলেন বাংলাদেশিরা দর্শক-শ্রোতারা ।
এর আগে দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় সুরের লয়ে মঞ্চ মাতিয়ে রেখেছিলেন 'ক্লোজআপ ওয়ান' তারকা নীলিমা শশী এবং উত্তর আমেরিকার জনপ্রিয় শিল্পী শাহ মাহবুব ।
মেলায় আকর্ষণীয় র্যাফেল ড্রতে ছিল গাড়ি, বিমান টিকেট, মোটরবাইক, ল্যাপটপ ও টেলিভিশনসহ আকর্ষণীয় সব পুরস্কার।
লেখক: মিশিগান প্রবাসী সাংবাদিক
Comments