মালদ্বীপে আরও ৩৪ হাজার বাংলাদেশি বৈধতা পাবেন

প্রতীকী ছবি

মালেতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের একটি হিসাব অনুযায়ী,  মালদ্বীপে প্রায় ৩৪ হাজার বাংলাদেশি অনিবন্ধিত অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে রয়েছেন এবং তাদেরকে একটি বিশেষ প্রোগ্রামের অধীনে নিবন্ধিত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

নিবন্ধিত হয়ে গেলে তারা দেশটিতে আইনি ও স্বাস্থ্য বিমা সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া তারা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব নথি ব্যবহার করে দেশে টাকা পাঠাতে পারবেন, যা অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে বলে বাংলাদেশি কমিউনিটি ও হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে।

তারা বলছেন, অনিবন্ধিত হওয়ায় অনেককে বাধ্য হয়ে অবৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠাতে হয়।

এই প্রক্রিয়ায় একজন শ্রমিককে নিবন্ধিত করার জন্য তার নিয়োগকর্তাকে মালদ্বীপের অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ে 'ওয়ার্ক পারমিটের' জন্য আবেদন করতে হবে বলে জানা গেছে গত মাসে প্রকাশিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক বিজ্ঞপ্তি থেকে।

গত ডিসেম্বরে মালদ্বীপ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ অনিবন্ধিত বাংলাদেশিদের নিবন্ধন বিষয়ে আলোচনা করেন।

মালেতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (শ্রম কল্যাণ শাখা) সোহেল পারভেজ জানান, তারা শ্রমিকদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য বিভিন্ন সহায়তা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, 'আমরা তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করছি এবং দ্রুততম সময়ে তাদের পাসপোর্ট হস্তান্তর করার চেষ্টা করছি।'

তিনি জানান, নিবন্ধনের এই প্রোগ্রামটি সব দেশের অনিবন্ধিত অভিবাসী শ্রমিকের জন্য উন্মুক্ত। কত তারিখের মধ্যে এই প্রোগ্রাম শেষ হবে সেই বিষয়ে মালদ্বীপ কর্তৃপক্ষ কোনো ঘোষণা দেয়নি।

এমনই একটি প্রোগ্রামের আওতায় ২০১৯ সালে মালদ্বীপে প্রায় ৪৫ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিককে নিবন্ধিত করা হয়েছে।

মালদ্বীপের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সোহেল পারভেজ জানান, চলতি বছরের মে পর্যন্ত এই ৪৫ হাজারের মধ্যে প্রায় ১১ হাজার জনকে নিয়মিত করা হয়েছে।

আনুমানিক এক লাখ বাংলাদেশি বর্তমানে মালদ্বীপে বিভিন্ন খাতে, প্রধানত নির্মাণকাজে জড়িত।

তাদের মধ্যে অনেকেই বৈধভাবেই মালদ্বীপে যাওয়ার পর বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময়ে অনিবন্ধিত হয়ে পড়েন বলে হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে।

মালদ্বীপ বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে স্বল্প দক্ষ কর্মী নিয়োগ করছে না। কেননা, সেখানে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি অনিবন্ধিত শ্রমিক রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বাংলাদেশি শ্রমিক জানান, কাগজপত্র না থাকায় তাকে অবৈধ পথে দেশে টাকা পাঠাতে হয় কিংবা তার সহকর্মীদের মধ্যে নিবন্ধিত যারা আছেন তাদের সাহায্য নিতে হয়।

তিনি জানান, বৈধ প্রক্রিয়ায় দেশে টাকা পাঠাতে হলে একটি 'পরিচয়পত্র' প্রয়োজন, যা তার নেই।

মালেতে কর্মরত আরেক বাংলাদেশি ইমরান হোসেন তালুকদার বলেন, 'অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠান, কারণ তারা নিবন্ধিত না। এ ছাড়াও, মালিক যদি বেতন না দেয় তাহলে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও জানাতে পারেন না।'

রেমিট্যান্স কমছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মালদ্বীপে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকরা ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২০২১ অর্থবছরে যথাক্রমে ৪৪ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন ডলার ও ৪৬ দশমিক শূন্য ৩ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।

কিন্তু ২০২১-২০২২ অর্থবছরে রেমিট্যান্স কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ কোটি ১৬ লাখ ডলারে।

Comments

The Daily Star  | English

Sohag’s murder exposes a society numbed by fear and brutality

It was a murder that stunned the nation, not only for its barbarity, but for what it revealed about the society we have become.

49m ago