ক্রেতারা কিনছে কেন, তাদেরও সচেতন হওয়া উচিত: বাণিজ্যমন্ত্রী

চালের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধে ক্রেতাদের সচেতন হওয়ার উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, খোলা চাল প্যাকেটজাত করার পরে দামটা অনেক বেড়ে যাচ্ছে। সেটা একই চাল। সেটা যদি বাজার না পেত তাহলে তারা (ব্যবসায়ী) তো এ ব্যবসায় যেত না।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমার প্রশ্ন ছিল কারা কিনছে এই জিনিসটা। আজকে প্যাকেটজাত খাবার কেনার টেনডেনসি একটা মহলে বেড়েছে। গ্রামে-গঞ্জে সাধারণ মানুষ মোটা চালটা কিনতে চায় না। তারা ঘুরে ফিরে চিকন চাল খাচ্ছে, সেটা ঘুরে ফিরে মোটা চালেরই এক নতুন পরিবর্তিত রূপ কিন্তু তারপরও তারা সেটাই কিনতে চাচ্ছে। আমি যেটা দেখতে চাইছি ক্রেতা মহল কিনছে কেন? তাদেরও সচেতন হওয়া উচিত। বিক্রি হলে ব্যবসায়ীরা নেবেই।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের কারসাজি খাদ্য মন্ত্রণালয় দেখবে, এ ব্যাপারে কথা হয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এটা ঠিক আমাদের চালের মজুত আছে। সেটা আমাদের খাদ্যমন্ত্রী-কৃষিমন্ত্রীও বলেছেন।

বাজার থেকে চাল কিনে প্যাকেটজাত করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা ভাবছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়নি। সবগুলো আইনি পথে যাওয়া উচিত, আমরা পারি কি না। এমনও কথা এসেছিল, অনেকগুলো বড় গ্রুপ অনেক আইটেম বিক্রি করে, এমনকি মুড়িও তারা বিক্রি করে। হাজার হাজার মানুষ মুড়ি বিক্রি করে বাঁচে। এখন বড় গ্রুপগুলো যদি মুড়ি বিক্রি করতে শুরু করে তাহলে সাধারণ মানুষ যারা মুড়ি বিক্রি শুরু করে তাদের ভাগ্য কী হবে—এসব নিয়েও অনেক কথা হয়েছে। যেহেতু সরাসরি সংশ্লিষ্ট না তাই আমরা কোনো কথা বলিনি। কোনোভাবে আমাদের যুক্ত করা হলে তখন আমরা দেখবো।

ভোজ্য তেলের দামের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সুখবর যেটা পামঅয়েলের দাম কমেছে এবং সয়াবিনের দামও কমের দিকে লক্ষ করা যাচ্ছে। আগামী ৬-৭ দিনের মধ্যে যে সভা হবে সেটা বিশ্লেষণ করে দেখে নতুন দাম আসবে। বাড়ার সম্ভাবনা নেই, আমার ধারণা নতুন প্রাইস অনুসারে দামটা কমবে। পামঅয়েলে যথেষ্ট প্রভাব পড়বে, সয়াবিনও অন্তত বাড়বে না সে রকমই আমরা আশা করছি।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমি যদি কৃষক হই তাহলে আমাকে ধান বিক্রি করে তেল কিনতে হবে, ডাল কিনতে হবে। আমদানি নির্ভর জিনিসের যখন দাম বাড়ে ক্রেতাদের যখন বেশি দামে কিনতে হয় তখন তাদের যদি কোনো পণ্য থাকে সেটা তারা বেশি দামে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবেই হবে। চাল যদি কম দামে বিক্রি করে...তাকে তেল-ডাল-নুন কিনতে হবে। সেখানেও তো একটা ব্যালেন্স দরকার। আমরা চেষ্টা করছি দাম কম রাখার।

ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা যে ১ কোটি পরিবারকে দিচ্ছি খাবার সেখানেও আমাদের বিশাল পরিমাণে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। আমরা আগামী ১৫ জুন থেকে আবার দিতে শুরু করবো এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ততদিন পর্যন্ত দেওয়া হবে যতদিন মানুষের অর্থনৈতিক চাপ না যায়। একটা কথা সবারই মনে রাখা দরকার, বিশ্ব বাজারের প্রভাব আমাদের ওপর পড়তে বাধ্য। জ্বালানি তেলের দাম যখন বাড়ে তখন তার প্রভাব পড়ে সব জায়গায়। চট্টগ্রাম থেকে যে ট্রাক ঢাকায় আসবে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে তার খরচ বেড়ে যাবে। আমরা চেষ্টা করছি সব কিছুর মধ্যে যেন সহনীয় পর্যায়ে রাখা যায়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৩ কোটি মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে। আমি কখনো বলিনি, ১৭ কোটি মানুষের খুব পয়সা বেশি হয়েছে। এ দেশের সার্বিক অবস্থায় বাস্তবতা হলো, ২০ শতাংশ মানুষ লো ইনকাম গ্রুপ। সেটাকে মাথায় রাখতে হবে। ১৭ কোটির মধ্যে ৩ কোটি বাদ দিলে ১৪ কোটি থাকে। এর মধ্যে ৫ কোটি মানুষের বাইং ক্যাপাসিটি অলমোস্ট ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ডের মতো। সব কিছুই তো এভারেজ করা হবে; আমাদের যেমন ৩ কোটি মানুষকে অ্যাডজাস্ট করা দরকার দরিদ্র শ্রেণির, সেটাই আমরা করছি। পাশাপাশি ৩ কোটির জায়গায় হয়তো ৫ কোটি বেনিফিটটা পাচ্ছে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে সেটা ঠিক, আপনারাও জানেন কোন শ্রেণির-কত জনের। আর ৩ কোটি দরিদ্রসীমার নিচে রয়েছে, তাদের জন্য আমরা দেখবো।

Comments

The Daily Star  | English

CA accords reception to SAFF winning women's team, asks for written demands

During a reception ceremony at the State Guest House Jamuna in the morning today, Chief Adviser Professor Muhammad Yunus asked the players of the Bangladesh team that won the 2024 SAFF Women’s Championship in Nepal last week to submit a list of their demands in writing, assuring them of working on those in the coming days.

1h ago