সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের নতুন নির্দেশনা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর সাম্প্রতিক ঊর্ধগতি মোকাবিলায় বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে কোভিড-১৯ রোগীদের নিজ জেলার হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার নির্দেশনাও আছে।
এ ছাড়া, নতুন নির্দেশনাগুলোর মধ্যে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আগতদের জন্য বাধ্যতামূলক অ্যান্টিজেন পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত আছে। টিকার সনদপত্র থাকলেও এ পরীক্ষা করাতে হবে। হাসপাতালে ভর্তির জন্য সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের ক্ষেত্রেও নিয়মটি প্রযোজ্য হবে।
গত বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সব সিভিল সার্জন এবং বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের এক বৈঠকের পর এসব নির্দেশনা আসে। বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ও স্বাস্থ্যবিধি মানা কমিয়ে দেওয়ার কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে কোভিড সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বৈঠকে হাসপাতালগুলোকে পুরোপুরি প্রস্তুত হতে বলা হয়েছে।
যেখানে করোনা শনাক্ত হবে, আক্রান্তদের সেখানেই চিকিৎসা নিতে হবে। যথাযথ ব্যাখ্যা ছাড়া কোনো রোগীকে ঢাকায় পাঠানো যাবে না। কারণ এটি ওমিক্রন ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়ানো ছাড়া আর কিছুই করবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের ফরোয়ার্ডিং ছাড়া অন্য জেলার রোগীদের ঢাকায় পাঠানো যাবে না। কেন রোগীকে ঢাকায় পাঠানোর প্রয়োজন, তা চিকিৎসকদের উল্লেখ করতে হবে। সব জেলা হাসপাতাল কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য তৈরি।'
তিনি আরও বলেন, 'ঢাকার হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ কমাতে এবং কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ কোনো জেলা থেকে রোগীকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ।'
খুরশীদ আলম আরও বলেন, অন্য জায়গা থেকে আগত যাত্রীদের এবং সন্দেহভাজন কোভিড-১৯ রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির জন্য অ্যান্টিজেন পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। কারণ আরটি-পিসিআর পরীক্ষা সময়সাপেক্ষ।
'প্রথমে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে তবেই আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করতে হবে', যোগ করেন তিনি।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈঠকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন কঠোরভাবে কার্যকর করার জন্য স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তারা বলছেন, জেলা হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ এবং আইসিইউ বেডসহ নাসাল ক্যানুলা ও অক্সিজেন জেনারেটর পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে।
খুরশীদ আলম বলেন, 'এমনকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেন সরবরাহ মসৃণ আছে। তাই আমরা সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে বলেছি।'
গত কয়েকদিন ধরে করোনা শনাক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জনগণের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে শিথিলতার বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে গতকাল শুক্রবার বলেছেন, 'দেশজুড়ে যেভাবে রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় জমায়েত চলছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে হাসপাতালগুলো রোগী দিয়ে ভরে যাবে এবং আমাদের কিছুই করার থাকবে না।'
মন্ত্রী বলেন, সংক্রমণ বৃদ্ধি এখনো 'টেক-অফ' অবস্থায় আছে এবং মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে এটি শীর্ষে পৌঁছাতে পারে।
'যদি আমরা এটিকে দেরি করিয়ে দিতে পারি, তবে আমাদের জন্য ভাল হবে', যোগ করেন তিনি।
অনুবাদ করেছেন জারীন তাসনিম
Comments