দুর্গম থানচিতে ডায়রিয়ায় ৯ দিনে ৯ জনের মৃত্যু

ডায়রিয়া দুর্গত এলাকায় চিকিৎসা দিচ্ছেন মেডিকেল টিম। ছবিটি ১২ জুন তোলা। ছবি: বান্দরবান সিভিল সার্জন ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

বান্দরবানের থানচি উপজেলার দুর্গম রেমাক্রি ইউনিয়নে কয়েকটি পাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত ৯ দিনে অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল বুধবার বিকেলে থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'দুর্গম রেমাক্রি ইউনিয়নে বড়মদকের বিভিন্ন পাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বুধবার পর্যন্ত অন্তত ৯ জন মারা গেছেন।'

'এলাকাটি বেশ দুর্গম হওয়ায় ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। দুর্গমতার কারণে রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য বিভাগের কয়েকটি টিম ছাড়াও কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) ও এলাকার কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক জরুরি সেবা দিচ্ছেন,' যোগ করেন তিনি।

জেলা সিভিল সার্জন নীহার রঞ্জন নন্দী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনেক দুর্গম হওয়ায় রোগীদের উপজেলা সদরে এনে চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না। সেই এলাকার ম্রংওয়ায় (আন্দারমানিক) ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করা হবে।'

সেখানকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, কারবারি, হেডম্যান ও বিজিবি সদস্যদের সহযোগিতায় হাসপাতালটি জরুরিভিত্তিতে করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

রেমাক্রি ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য মাংচং ম্রো'র তথ্যানুসারে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে মৃতরা হলেন—৬ নং ওয়ার্ডের নারেশা পাড়ার লংঞী ম্রো (৪৯), সংদন ম্রো (৮), সংওয়ে ম্রো (৬), রুইরক ম্রো (৫০) ও প্রেলি ম্রো (৩৬)।

বাকিরা হলেন, মেনতাং পাড়াপ্রধান কারবারি মেনতাং ম্রো (৪৭), য়ংনং পাড়ার ক্রায়ন ম্রো (৫০), সিংচং পাড়ার প্রেনময় ম্রো (১২) ও বড়মদক ভিতর পাড়া ডওয়াই সাইন মারমা (২০)।

তিনি আরও বলেন, 'এই ওয়ার্ডের য়ংনং পাড়া, সিংচং পাড়া, পাকতোয়া পাড়া, ঙারেশা লংঙান পাড়া, মেনতান পাড়া ও নেপিউ পাড়ায় আক্রান্ত সংখ্যা বেশি। এই কয়েকটি পাড়ায় এখন পর্যন্ত ৮০ থেকে ৯০ জনের মতো ডায়রিয়া রোগী রয়েছে।'

রেমাক্রি ইউপি চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ইউনিয়নে ৬, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি। অন্যান্য ওয়ার্ডেও ২-১ জন করে রোগী আছে। ফিল্ড হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হলে পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।'

তিনি সরকারের কাছে তার এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণ ও গভীর নলকূপ স্থাপনের দাবি জানান।

'বিভিন্ন এলাকায় ম্যালেরিয়া রোগীও আছে' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তাদের জন্য মশারি বিতরণ করা হচ্ছে।'

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সংকট রয়েছে। এ ছাড়া, বৃষ্টিতে পাহাড়ে সব ময়লা-আবর্জনা ঝিরি-ঝরণায় গিয়ে পড়ে। না ফুটিয়ে ঝিরি-ঝরণা পানি পান করায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটে থাকে।

Comments

The Daily Star  | English

Farmers happy with the absence of smuggled cattle in Eid bazaars

This time, most consumers prefer medium-sized local cows over the others

39m ago