নৌকার প্রার্থী হারবে না, যদি বলে কোনো কথা নেই: শামীম ওসমান
নৌকার প্রার্থী হারবে না, যদি বলে কোনো কথা নেই বলে মন্তব্য করেছেন নারায়াণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। আজ রোববার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটপ্রদান শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
যদি হেরে যায়, প্রার্থী হারবে নাকি নৌকা হারবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নৌকার প্রার্থী হারবে না, যদি বলে কোনো কথা নেই।
তিনি বলেন, আমি রিকশায় এসেছি কারণ আইনটা আমার মানা উচিত। যেটা খবর পেলাম, আল্লাহর রহমতে নারায়ণগঞ্জে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। আমাদের বুকে রক্তক্ষরণ হয়, বারবার নারায়ণগঞ্জ নিয়ে কথা ওঠে নারায়ণগঞ্জে এই হয়েছে ওই হয়েছে, এই হবে এই হতে পারে। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন কোনো নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জে একটা ধাক্কাধাক্কি পর্যন্ত হয়নি।
বাস্তবতা হচ্ছে, নারায়ণগঞ্জ সুন্দর শহর, শান্তির শহর। এখানে দুপাশে যেমন নদীর মতো স্রোত আছে। মানুষের মধ্যেও ভালোবাসার স্রোত আছে। জয়-পরাজয় আছে। নির্বাচনে একজন জিতবেন, একজন হারবেন। কিন্তু দেশটা তো আমাদের সবার, সবাই মিলে দেশটা গড়তে হবে। আমি রাজনীতি করি, জাতীয় সংসদের একজন সদস্য। আমি আজ প্রথম ভোট দিলাম ইভিএম-এ, ভালো লাগলো। আমার ফিঙ্গার প্রিন্ট সব সময় ডিসটার্ব করে, দেখলাম ডিস্টার্ব করল না। তার মানে মেশিনটা ভালো, বলেন শামীম ওসমান।
তিনি আরও বলেন, দেশটা এদিয়ে যাচ্ছে একজনের নেতৃত্বে। আমি আওয়ামী লীগ করি বলে বলছি না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। সামনে আমার মনে হচ্ছে, এই এগিয়ে যাওয়াটাকে স্তব্ধ করার জন্য দেশে-বিদেশে আন্তর্জাতিক মহল ব্যাপক ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে আমাদের ভৌগলিক কারণে। আমি আশা করবো, অবশ্যই আমি যাকে ভোট দিয়েছি, সেই নৌকা মার্কা যাতে জয় লাভ করে। কারণ বিগত বেশ কিছু দিন যাবত আমার রাজনৈতিক জীবনে ৭৫ থেকে ২০, আমার জীবনে আমি দেখিনি এইটুকু ছোট নির্বাচনে জাতীয় পর্ যায়ের নেতারা এসে যে পরিমাণ পরিশ্রম করেছেন এবং তাদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি কাজ করেছেন, আমার বিশ্বাস সবাই মিলে নির্বাচনের পর থেকে...নির্বাচনের আগে অনেকে অনেক কথা বলে। নারায়ণগঞ্জ পার্ট অব দ্য বাংলাদেশ। এই পার্ট অব দ্য বাংলাদেশ হিসেবে আমরা সবাই মিলে নারায়ণগঞ্জে কাজ করবো এটা আমি আশা করি।
তিনি বলেন, আমি নৌকার নির্বাচন করেছি। আমি অন্য কারো নির্বাচন করিনি। আমি নৌকার কথা বলেছি। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ আছে। কষ্ট আছে, দুঃখ আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ বছর আগে বলেছেন, শামীম, আমি নীলকণ্ঠী। আমি সব বিষকে হজম করি। আই অ্যাম আ সোলজার অব শেখ হাসিনা। যুদ্ধের ময়দানে সেনা প্রধান যেভাবে নির্দেশ দেবেন, সৈন্যরা সেভাবে যুদ্ধ করবে। সেটাই তার কর্ম। উনি যেহেতু আমার নেত্রী। উনার আমার প্রধানমন্ত্রী না। উনি আমার জাতির পিতার কন্যা, উনি আমার আদর্শের প্রতীক। উনি যদি নীলকণ্ঠী হতে পারেন। আমারও নীলকণ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করা উচিত। আমি তো জাতির পিতার সন্তান নই। উনার মতো এত কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই। এই কারণে হয়তো আমি বলে ফেলি অনেক কষ্ট লাগছে, কষ্ট লেগেছে। যারা কষ্ট দিয়েছেন এবং এখনো...যাই আল্লাহ তাদের হেদায়েত করুন এবং তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করুন। আমি আশা করবো নৌকা বিপুল ভোটে জয় লাভ করবে এবং নারায়ণগঞ্জে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে।
শামীম ওসমান বলেছিলেন ১৬ তারিখ খেলা হবে। সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনকে সংঘাতময় বলা একটা ফ্যাশন। যারা এই কথাটা বলে, কয়েকটি মিডিয়া তো দেখলাম, তারা কোন দিকে যাবে বুঝতে পারছে না—প্রার্থী না প্রতীক। এই সংঘাতময় কথাটা হয়তো তাদের ব্রেইন চায়। আমরা যারা নারায়ণগঞ্জে জন্ম নিয়েছি, একই মায়ের ৩ সন্তান এমপি হয়েছি। আমরা তখনই বলেছি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। এর আগেও বলেছিলাম, তার আগেও বলেছিলাম। নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়েছে। আমাদের অ্যাচিভমেন্ট হলো জনগণ স্যাটিসফাই। এ পর্যন্ত আমি জানি, পরেরটা পরে। প্রার্থীরাও দেখলাম উভয়পক্ষ বলেছে উই আর স্যাটিসফাই। প্রার্থী স্যাটিসফাই হওয়াটা আমার কাছে সাবজেক্ট না। রাষ্ট্রের মালিক হলো জনগণ। আমি একজন এমপি, আমিও বেতনভোগী কর্মচারী। জনগণের পক্ষে কথা বলাটা আমার ধর্ম হওয়া উচিত। জনগণ যদি খুশি থাকেন সেটাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় সন্তুষ্টির জায়গা।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সারা জীবন প্রতীকের পক্ষে কাজ করেছি।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে আমরা সবাই মানুষের কাছে যাই, গরিব মানুষের কাছে যাই। গরিব মানুষের সাথে ছবি তুলি। পোসপাস দিয়ে তুলি যাতে একটা ইমপ্যাক্ট পড়ে। যারা নির্বাচনের গরিবের কাছে হাত পেতে ভোট চেয়েছেন, নির্বাচনের পরে যে তারা গরিবের পেটে লাত্থি না মারেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উনি জানেন, উনি যদি আমার কাছে ভোট না-ও চান, তাও আমি উনার জন্য সবার কাছে ভোট চাইবো। তো উনি আমার কাছে ভোট চাননি।
Comments