মেরিলিন মনরোর ছবি, ছবির মেরিলিন মনরো

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

অ্যান্ডি ওয়ারহোলের আঁকা (১৯৬৪) ম্যারিলিন মনরোর 'Shot Sage Blue Marilyn' নামের ছবি ১০ মে ২০২২ মার্কিন ডলারের  অঙ্কে ১৯৫ মিলিয়ন  বা  প্রায় ১ হাজার ৭০০  কোটি টাকায়, আসলে  খোলা বাজারের ডলারের টাকার দরে  আরও ৫০০  কোটি টাকা বেশি মূল্যে বিক্রি হয়েছে। 

বিবিসি মনে করেছিল ছবির ম্যারিলিন নিউইয়র্কে ক্রিস্টির  নিলামে ২০০ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হবেন, তা না হলেও রেকর্ডকরা ১৯৫ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছেন। ২০১৫-তে পাবলো পিকাসোর 'উইমেন অব আলজিয়ার্স' নিলামে ১৭৯.৪ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছিল। এই শিল্পকর্মটি এতদিন ২০ শতকের সবচেয়ে দামি চিত্রকর্মের দাবিদার ছিল। 

মার্কিন চিত্রশিল্পী, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক এবং পপ আর্ট হিসেবে খ্যাত ভিস্যুয়াল আর্ট মুভমেন্টের অন্যতম অগ্রনায়ক অ্যান্ডি ওয়ারহোল তার বিখ্যাত কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যাম্পবেল স্যুপ ক্যান, ম্যারিলিন ডিপটিক, এম্পায়ার চেলসি গার্ল এবং ম্যারিলিন মনরোর সিরিজ পোর্ট্রেট ।

পেনসিলভানিয়ায় দরিদ্র শ্রমিক পরিবারে তার জন্ম। ছবির হাত ভালো ছিলো বলে বরাবরই বৃত্তি পেয়ে পড়াশোনা করেছেন, পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে সেখানেই শিক্ষকতা শুরু করেন। তারপর তার বিচিত্র কর্মমুখর জীবন। ১৯৬৮সালে নারীবাদী লেখক ও রেডিক্যাল ফেমিনিস্ট ভ্যালেরি সোলানাস শিল্পীর স্টুডিও-তে ঢুকে তাকে গুলি করেন । মারাত্মক জখম নিয়ে তাকে দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকতে হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭ তিনি মানহাটানে মারা যান। 

ম্যারিলিন মনরোর পর তিনি এলভিস প্রিসলি ও  এলিজাবেথ টেলরকে এঁকেছেন। ২০১৪ সালের নিলামে তার চিত্রকর্মের দাম অনুমান তরা হয় ৫৬৯ মিলিয়ন ডলার। অ্যান্ডির আঁকা অরেঞ্জ ম্যারিলিন ১৯৯৮ সালে ১৭.৩ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়। ১০ মে ২০২২ ম্যারিলিন  এবং অ্যান্ডি উভয়েই বিশ্বরেকর্ডে নাম উঠালেন। 

মার্কিন অভিনেত্রী গত শতকের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের হার্টথ্রব ম্যারিলিন মনরোকে নিয়ে পৃথিবীজুড়ে যত  লেখালেখি হয়েছে, যত আঁকাআঁকি হয়েছে, যত  প্রতিভাধরই  হোন না কেন, অন্য  কোনো অভিনেতা ও অভিনেত্রী এই সূচকে তাঁর ধারেকাছেও আসতে পারেননি, সেই আলোড়নও  কেউ তোলেন নি, বছরের পর বছর ধরে মানুষের অন্তরের এমন স্থায়ী আসনও কেউ দখলে রাখতে পারেন নি। তার অকাল মুত্যুর ষাট বছর পর আবার তিনি উঠে এলেন বিশ্বরেকর্ডে: এতো দামে  কারা পোর্ট্রেট তখনো নিলামে বিক্রি হয়নি।

১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা দামের ম্যারিলিন মনরোর ছবি। ছবি সংগ্রহীত।

শতবর্ষের চলচিত্রের ইতিহাসে সৌন্দর্যে, অভিনয়গুণে, গ্ল্যামারে, জীবনের বৈচিত্র্যে আলাদা আলাদাভাবে খ্যাতিমান অনেক নায়িকাই, কিন্তু সব মিলিয়ে অনতিক্রম্য একজনকে যদি খুঁজতে হয়, তিনি অবশ্যই ম্যারিলিন মনরো। জীবদ্দশায় তিনি সবচেয়ে  বেশি আলোচিত ছিলেন, অকালমৃত্যুর পর  সে আলোচনা কমেনি, বেড়েছে বহুগুণ।

(জোয়ান ক্রফোর্ড মঞ্চের নৃত্যশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে শেষ পর্যন্ত হলিউড মাতিয়ে রাখেন। মিলড্রেড পিয়ার্স ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করে ১৯৪৫ সালের অস্কার জিতে নেন। মার্কিন চলচ্চিত্রের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ১০ নায়িকার তালিকায় জোয়ান ক্রফোর্ড যেমন আছেন, তেমনি ম্যারিলিন মনরোও।জোয়ান ক্রফোর্ড-অভিনীত কয়েকটি আলোচিত ছবি : পজেসড, গ্র্যান্ড হোটেল স্ট্র্যাঞ্জ কার্গো, ফ্ল্যামিঙ্গো রোড হোয়াটএভার হ্যাপেন্ড টু বেবি জেন, আই স হোয়াট ইউ ডিভ।  অগ্নাশয়ের ক্যান্সারে ১০ মে ১৯৭৭ জোয়ান ক্রফোর্ডের মৃত্যু হয়। অভিনেতা ক্লার্ক গ্যাবলের সঙ্গে জোয়ান ক্রফোর্ডের প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। দীর্ঘদিন ম্যারিলিনও তার প্রতি অনুরক্ত ছিলেন, ক্লার্কের মধ্যে নিজের পিতাকে খুঁজতেন। জোয়ানের সঙ্গে ম্যারিলিনের দেখা-সাক্ষাৎ স্বল্প সময়ের। কিন্তু সম্পর্কটি প্রীতিকর হয়নি। এই নিয়েই ম্যারিলিন মনরোর আত্মজীবনী 'মাই স্টোরি' এই এপিসোডটি অনূদিত।)

জো-শেঙ্ক-এর বাড়িতে জোয়ান ক্রফোর্ড-এর সাথে আমার দেখা। তিনি মনে দাগ কাটার মতো একজন নারী। ডিনারে আমি তার গুণমুগ্ধ হয়ে রইলাম। ভাবলাম আমি যখন তার বয়সী হব, তখন তার মতোই চেহারাটা ধরে রাখতে পারব। চিত্রাভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে দেখা হলে তাদের কাউকে কাউকে পর্দায় দেখে যেমন মনে হয়, সামনাসামনি দেখে ঠিক তা মনে হয় না। আবার কাউকে কাউকে মনে হয় বাস্তবে যে পর্দার চেয়েও বেশি। এর মধ্যে কোন ধরনেরটা ভালো আমি জানি না।

তবে মিস ক্রফোর্ড নিঃসন্দেহে দ্বিতীয় ধরনের। উত্তেজনাপূর্ণ-কোর্টরুম ড্রামায় মিস ক্রুফোর্ড যেমনটি হতেন জো শেঙ্ক-এর খাবার টেবিলে তিনি তার চেয়ে কম মুভিস্টার নন, বরং একটু বেশিই।

আমিও খুশি হলাম যে আমি মিস ক্রফোর্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছি। ডিনারের পর তিনি আমাকে বললেন, 'তুমি যদি আমাকে সুযোগ দাও, তাহলে তোমাকে অনেকটাই সাহায্য করতে পারব। যেমন ধর, তুমি আজ যে সাদা সেলাই করা পোশাকটা পরেছ, এ ধরনের ডিনারের জন্য এই পোশাকটি সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত।'

এটাই ছিল তখনকার দিনে আমার সবচেয়ে ভালো পোশাক। আমি যখন গুরুত্বপূর্ণ কোনো জায়গায় যাই, দিনের বেলা হোক কি সন্ধ্যেবেলা, আমি এ পোশাকটাই পরি। প্রতিদিন নিজের হাতে এটা পরিষ্কার করি। আমি মিস ক্রফার্ডের সুন্দর সান্ধ্য গাউনের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারি তিনি আসলে কী বোঝাতে চাচ্ছেন।

মিস ক্রফোর্ড বলে চললেন, 'দেখতে কেমন, ফিগারটা কেমন এর সাথে একইরকম গুরুত্বপূর্ণ রুচি কেমন?' আমার দিকে তাকিয়ে সদয় হাসি দিয়ে বললেন, 'লক্ষ্মীসোনা, আমি কি তোমাকে সাহায্য করতে পারি?'

আমি বললাম, তার এই সদয় ইচ্ছার কথা শুনে আমি খুবই বিগলিত। রোববার সকালে চার্চে আমাদের সাক্ষাৎকার ধার্য হলো। দেখা গেল আমি আর মিস ক্রফোর্ড একই চার্চে যাই। চার্চের বয়ান শেষে আমাদের দেখা, বেরোবার পথে তিনি বললেন, 'তোমাকে দেখে আমি খুব খুশি হয়েছি। কিন্তু এরকম ফ্ল্যাট হিল জুতো আর কালো পাড়ের ধূসর জামা পরে চার্চে আসতে নেই। তুমি যদি ধূসরই পরো তবে এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পাড় তো লাগাবে, কালো কখনো নয়।'

কিন্তু আমার যে এটিই একমাত্র স্যুট, এ যুক্তিতে তার সাথে লড়াই করার মানে নেই। মিস ক্রফোর্ড বললেন, 'তুমি কি আমার বাড়িতে আসতে চাও?'  আমি বললাম, 'খুব চাই।'

সিদ্ধান্ত হলো আমার গাড়ি তাঁরটাকে অনুসরণ করবে। কী ঘটতে যাচ্ছে তা ভেবে আমি উদ্দীপিত হয়ে পড়ি। আমি নিশ্চিত অনুভব করলাম, তিনি নিশ্চয়ই বাড়ি গিয়ে তার পুরনো কিছু বল-গাউন আমাকে দিতে চাইবেন, এগুলো দেখে দেখে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।

তার বাড়িটা বেশ সুন্দর ও জাঁকালো। মিস ক্রফোর্ডের সাদা পশমি কুকুর আর চার সন্তানের সাথে লাঞ্চ সেরে নিলাম। খাবার পর মিস ক্রফোর্ড আমাকে উপর তলায় তার রুমে আসতে বলেন। 

তিনি বললেন, 'বাদামি রঙে তোমাকে খুব ভালো দেখাবে। আমার সেলাইয়ের কাজগুলো তোমাকে অবশ্যই দেখতে হবে।' বাদামি রঙের বিভিন্ন শেডের সেলাই করা পোশাক আমাকে দেখিয়ে ব্যাখ্যা করলেন কেন বাদামির বিভিন্ন সেডের কাপড় পরা দরকার।

মিস ক্রফোর্ড ব্যাখ্যা করলেন, 'ভালো করে পোশাক পরার মানে তুমি যা পরবে তা-ই সঠিক মানিয়ে যাবে। তোমার জুতো, মোজা, গ্লাভস, ব্যাগ-সবই পোশাকের সাথে মানিয়ে নিতে হবে। আমি এখন যা চাই তা হচ্ছে তুমি তোমার ওয়ারড্রবের সব পোশাকের একটি তালিকা করবে। আর তোমাকে কী সব জিনিসপত্র কিনতে হবে তার তালিকা করে দেব। আর তুমি যাতে ঠিক জিনিসটাই কিনতে পার আমি তার নির্দেশনা দিয়ে দেব।' 

আমি তাঁকে কিছু বলিনি। লোকজন আমাকে কপর্দকহীন বলে বলুক, তাতে কিছু মনে করি না, এমনকি তাদের কাছে কিছু ডলার ঋণ চাইতেও আমার বাধে না। কিন্তু কোনো কারণে মিসেস ক্রফোর্ডকে কিছু বলতে পারিনি, কারণ তিনি আমার ওয়ারড্রোব দেখেছেন, ভুল সাদা সেলাইয়ের জামা এবং বেমানান ধূসর স্যুট দেখেছেন।

টমাস মুলটনকে সাউন্ড রেকর্ডিং-এর অস্কার তুলে দিচ্ছেন ম্যারিলিন মনরো আমি যখন ফিরে আসছি মিস  ক্রফোর্ড আমাকে আশ্বস্ত করে বললেন, 'নিজেকে অশ্লীল দেখানো ঠেকানোর ব্যাপারটা তেমন কঠিন কাজ নয়। তোমার কাপড়চোপড়ের একটা তালিকা তৈরি করে দেখাও, কিভাবে এগোতে হবে আমি দেখিয়ে দেব। ফলাফল দেখে তুমি যেমন অবাক হবে, অন্যরাও তেমনি।'

মিস ক্রফোর্ডকে বলেছিলাম, আবার আসব। এছাড়া তার সাথে কেন দেখা করতে গেলাম জানি না। হয়তো আমি তখনও আশা করছি তিনি তাঁর বাতিল হয়ে যাওয়া ক'টি বল-গাউন আমাকে দেবেন। আমার মনে হয় অভাবের কারণে যে সৌখিন  কাপড় কিনতে পারছি না, এই সত্যটিও তাকে বলতে চেয়েছি। আমি আগে যেমন করেছি তার সাথে ফালতু কথা বলতে শুরু করি। আমি কি ওয়াড্রোবের কাপড়ের তালিকা করতে শুরু করেছি? না, করিনি। আমি এমনই অলস, আমি জানি। ঠিক আছে কয়েকদিনের মধ্যেই তালিকা তৈরি করে আবার ফোন দেব।

মিস ক্রফোর্ড বললেন, 'বেশ তাহলে তোমার ফোনের প্রতীক্ষায় রইলাম। আমি তাঁকে আর ফোন দিইনি। এরপর তাঁকে পাই খবরের কাগজের পাতায় আরো এক বছর পর। আমি টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্স-এর সাথে আবার কাজ করতে যাই। ততদিনে ম্যারিলিন মনরোর নামডাক ছড়াতে শুরু করেছে। আমি তখন সর্বত্রই, ম্যাগাজিনের চলচ্চিত্র কলামে। স্টুডিও ভক্তদের ট্রাকভর্তি চিঠি আসছে।

ম্যারিলিন মনরোর আত্মজীবনী মাই স্টোরি। ছবি সংগ্রহীত।

আমার ওপর একের পর এক সম্মান বর্ষিত হচ্ছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে অ্যাকাডেমির বার্ষিক উৎসবে একজন বিজয়ীর হাতে অস্কার তুলে দেওয়া। অ্যাকাডেমি পুরস্কার প্রদানের উৎসবে আমি ভয়ে অসাড় হয়ে আছি। আমি কম্পমান অবস্থায় প্ল্যাটফর্মের দিকে যাব এবং পুরস্কার তুলে দেব। আমি প্রার্থনা করছি আমার পা যেন মাটি আঁকড়ে ধরে না রাখে, আমি পড়ে না যাই আর দু'পঙক্তি বলার আছে, আমার কণ্ঠ যেন স্বর হারিয়ে না ফেলে। যখন আমার পালা এলো আমি ঠিকঠাকভাবেই প্ল্যাটফর্মে পৌঁছলাম, আমার যেটুকু বলার তা বলে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ছাড়াই আমার টেবিলে ফিরে আসি।

তখন অথবা তারপর জোয়ান ক্রফোর্ডকে ফিরে পাই পরদিন সকালের খবরের কাগজে তাঁর মন্তব্যে। কাগজের ক্লিপিংগুলো আমি রাখিনি, কিন্তু তিনি কী বলেছিলেন তা মনে আছে। তিনি লিখেছেন, অ্যাকাডেমির অনুষ্ঠানে ম্যারিলিন মনরোর নিজেকে কুরুচিপূর্ণ উপস্থাপনা সমগ্র হলিউডকে কলুষিত করেছে। 

পবিত্র গ্রন্থ হাতে নিয়ে মঞ্চে যাবার সময় অত্যস্ত আটোসাঁটো পোশাক যার পশ্চাদ্দেশ কুঁচকানো, ম্যারিলিনের অশ্লীলতার পরিচয় দেয়। আমি বিস্মিত হই। যা পড়ছি তা বিশ্বাস করতে পারছি না। যারা অস্কার অনুষ্ঠানে আমাকে দেখেছেন, এমন ক'জনকে জিজ্ঞেস করি, তিনি যা লিখেছেন তা কি সত্য? তারা হেসে উড়িয়ে দিল। তাদের একজন বলল, বয়স্ক ভদ্রমহিলাকে ক্ষমা করে দাও। তিনি যখন তার যৌবনে তখন তিনিও যুবতী ছিলেন, সম্মান ছিল তার। 

এমনই হয়ে থাকে- টিপিক্যাল। দ্বন্দ্বটি এমন কারো সাথে যাকে আমি রহস্যজনকভাবে আঘাত করেছিলাম। আসলে আমার টাইট পোশাক এবং পেছনে কুঁচকানোর ব্যাপারটা ছিল জোয়ান ক্রফোর্ডের মনে। তখন তিনি নিশ্চয়ই আমার সম্পর্কে বড্ড বেশিরকম লেখালেখি পড়ছিলেন। কিংবা এমনও হতে পারে তিনি আমার ওপর খুব বিরক্ত ছিলেন, কারণ আমি কখনো তাকে আমার ওয়ারড্রোবের পোশাকের তালিকা দিইনি।

একটি মর্মান্তিক সেই প্রতিবেদন

হলিউড, ক্যালিফোর্নিয়া, আগস্ট ৫, ১৯৬২

হলিউডের ইতিহাসে সবচেয়ে বিখ্যাত তারকা ম্যারিলিন মনরোকে লস এঞ্জেলেসের ব্রেন্টউডের বাড়িতে শোয়ার ঘরে আজ সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তার বয়স ছিল ৩৬ বছর। বিছানার পাশে একটি শূন্য কৌটা এতে ঘুমের ওষুধ ছিল। খাটের পাশে ছোট টেবিলে চৌদ্দটি ওষুধের বোতল ও ট্যাবলেট ছিল। 

মিস মনরোর মৃত্যুর প্রতিক্রিয়া বিশ্ব জুড়ে। চলচ্চিত্রে তার যে অবদান তার চেয়ে অনেক বেশি ছিল তার খ্যাতি। নারী হিসেবে তাকে মনে করা হতো যৌনতার প্রতীক। সাবেক ইয়াঙ্কি বাস্কেটবল তারকা জো ডিম্যাজিও এবং পুলিৎজার বিজয়ী নাট্যকার আর্থার মিলারের সাথে বিয়ে ও তালাক, লাখ লাখ মানুষের মতে একালের ভেনাসের এ অবস্থার জন্য দায়ী। 

মজা করার যে মেধা এবং যে জীবনোচ্ছ্বাস নিয়ে মেরিলিন সেভেন ইয়ার ইচ এবং সাম লাইক ইট হট-এ অভিনয় করেছেন যে পরিস্থিতি তাকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে গেছে তা এর ঠিক উল্টো। 

মিস মনরোর চিকিৎসক তাকে তিনদিনের জন্য ঘুমের ওষুধ ব্যবস্থাপত্রে লিখে দিয়েছিলেন। সাধারণত কৌটাতে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশটি ট্যাবলেট থাকে। এই অভিনেত্রী গত এক বছর ধরে মনোবিশ্লেষকের চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি গতরাতে মনোবিশ্লেষককে ডেকেছিলেন। তিনি মিস মনরোকে কিছুক্ষণ গাড়ি চালিয়ে ঘুরে এসে আয়েশ করে বিশ্রাম নেবার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি বাড়ি থেকে বের হননি। 

ময়না তদন্তের পর লস অ্যাঞ্জেলেসের কোরোনার জানিয়েছেন এটি 'স্বাভাবিক মৃত্যু নয়'।

Comments

The Daily Star  | English

People will have to take to the streets for voting rights: Fakhrul

People will have to take to the streets like they did on August 5 to realise their voting rights, said BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir today

27m ago