'বইমেলায় চাকচিক্য বেড়েছে কিন্তু একুশের চেতনা থেকে সরে এসেছে'
চলছে অমর একুশে বইমেলা। প্রতিদিন মেলায় আসছে নতুন বই। এর মধ্যে অক্ষর প্রকাশনী থেকে এসেছে কথাসাহিত্যিক রফিকুর রশীদের 'শ্রেষ্ঠগল্প'। চলতি বছর পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরষ্কার। বইমেলা ও নিজের গল্প নিয়ে তিনি কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।
দ্য ডেইলি স্টার: 'শ্রেষ্ঠগল্প' প্রকাশ হয়েছে আপনার। লিখতে লিখতে গল্প বড় হয়, না আগেই থেকে ভাবেন বড় লিখবেন? এ বিষয়ে ধারণা দেবেন?
রফিকুর রশীদ : না, লিখতে লিখতে গল্প বড় হয়। ইচ্ছে করে গল্প বড় করি না। আর আমার গল্পের বিষয়বস্তুর কেন্দ্রে আছে প্রান্তিক জনপদের সাধারণ মানুষ এবং তাদের যাপিত জীবনের আনন্দ বেদনা। সঙ্গে থাকে মানুষের লড়াই, সংগ্রাম, সংকট-সম্ভাবনা, হতাশা ও দ্রোহ। চরিত্রের মধ্যে আমার চারপাশের জীবনকে আমি চিত্রিত করি গল্পে-উপন্যাসে। কারণ আমার নিজেরও জন্ম, বেড়ে ওঠা এবং জীবন যাপন গ্রামীণ জনপদে।
দ্য ডেইলি স্টার: প্রান্তের সাহিত্য কেন্দ্রে মূল্যায়ন কম হয়। কিন্তু এবারে আপনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন। অনুভূতি কেমন?
রফিকুর রশীদ : প্রান্তের সাহিত্য বলে আলাদা কিছু হয়, তা আমি বিশ্বাস করিনা। কেন্দ্র কিংবা প্রান্ত লেখকের বসবাস যেখানেই হোক, তার রচিত সাহিত্যের নাম কেবল সাহিত্যই হতে পারে, আর কিছু নয়। তবে হ্যাঁ কেন্দ্র থেকে দূরে বসবাসের কারণে অনেক লেখকের যথাসময়ে যথাযথভাবে মূল্যায়িত হবার সুযোগ পান না, এ অভিযোগ মিথ্যে নয়। এজন্য কাউকে দায়ী না করে নিজ সাধনায় ব্রতী থাকাই উচিত বলে আমি মনে করি। এ বছর বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাওয়ায় আমি আনন্দিত, আনন্দ আমি ছড়িয়ে দিতে চাই- আমার মতো প্রান্তে বসেই যারা সাহিত্য সাধনা করছেন তাদের বুকে।
দ্য ডেইলি স্টার: একুশের বইমেলা লেখকের পাশাপাশি পাঠক হিসেবে কতটা আনন্দিত করে আপনাকে?
রফিকুর রশীদ : একুশের বইমেলা এতদিনে একুশের মূল চেতনা থেকে অনেকখানি সরে এসেছে। অনেকটা অন্তঃসারশূন্য হয়ে পড়েছে। উজ্জ্বলতা বেড়েছে, চাকচিক্য বেড়েছে, কিন্তু একুশের মূল স্পিরিট এখন অনেকাংশে স্তিমিত।
দ্য ডেইলি স্টার: ই বুক অনলাইনের যুগে আমাদের ছাপা বই নিয়ে কী হুমকি মনে করেন গতানুগতিক ধারার সাহিত্য সংস্কৃতি নিয়ে?
রফিকুর রশীদ : ই-বুককে আমি হুমকির কারণ মনে করি না। গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এটাই আজকের দাবী। নতুন ডাইমেনশনের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। ভয়ের কিছুই নেই।
দ্য ডেইলি স্টার: দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছন। শিক্ষকতা কী সাহিত্য সংস্কৃতির জন্য সহায়ক?
রফিকুর রশীদ. শিক্ষকতা কিংবা সাহিত্য সংস্কৃতির চর্চা সমাজের প্রগতিশীল বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলেই আমার বিশ্বাস
Comments