এক যুগ ধরে ঝুলছে শুধুই সাইনবোর্ড
গত ১২ বছর ধরে শুধু সাইনবোর্ডই ঝুলছে বীর প্রতীক তারামন বিবি পাঠাগারের। এখানে নেই কোনো বই-পুস্তক, নেই পাঠাগারের কোনো কার্যক্রম।
কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলা পরিষদের একটি ঘরে বীর প্রতীক তারামন বিবি পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠা করা হয় ২০০৯ সালে। বর্তমানে সেখানে আনসার সদস্যরা বাস করছেন। পাশাপাশি ঝুলছে বীর প্রতীক তারামন বিবি পাঠাগারের সাইনবোর্ড।
২০০৯ সালে বীর প্রতীক তারামন বিবি তার নামে পাঠাগারটির উদ্বোধন করেছিলেন। ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর ৬১ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
তারামন বিবির ছেলে আবু তাহের দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মায়ের নামে পাঠাগারটিতে প্রথম দিকে কয়েক বই ও চেয়ার টেবিল ছিল। কয়েকমাস পর সেগুলো আর দেখা যায়নি। বর্তমানে পাঠাগারটিতে শুধু সাইনবোর্ডই ঝুলছে।'
'প্রশাসনের কাছে পাঠাগারটি চালু রাখার দাবি জানাচ্ছি,' যোগ করেন তিনি।
স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মী রুহুল সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চর রাজিবপুরবাসী বীর প্রতীক তারামন বিবির জন্য গর্বিত। তার স্মৃতি সমুন্নত ও সমুজ্জ্বল রাখতে উপজেলা চত্বরে এই পাঠাগারটি পুরোপুরি চালু রাখা দরকার। এখানে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও বই-পুস্তক সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।'
স্থানীয় সাংবাদিক সহিজল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চর রাজিবপুর উপজেলা চত্বরে গত ১২ বছর ধরে শুধু বীর প্রতীক তারামন বিবি পাঠাগারের সাইনবোর্ডটিই দেখে আসছি। কিন্তু, এর কোনো কার্যক্রম দেখতে পাইনি।'
তিনি আরও বলেন, 'পাঠাগারটি পুরোপুরি চালু করা হলে স্থানীয়দের অনেক উপকারে আসবে এবং সেই সঙ্গে বীর প্রতীক তারামন বিবির স্মৃতিও বেঁচে।'
বীর প্রতীক তারামন বিবি পাঠাগারের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুস সবুর ফারুকী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বীর প্রতীক তারামন বিবি পাঠাগারটি পরিচালনা করা যাচ্ছে না।'
তিনি আরও বলেন, 'এখন পাঠাগারটিতে আনসার সদস্যরা বাস করছেন।'
চর রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নবীরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, '২০২০ সালের জুনে এখানে যোগদানের পর থেকেই দেখছি বীর প্রতীক তারামন বিবি পাঠাগারটির সাইনবোর্ড। এটি সচল রাখতে স্থানীয়ভাবে কেউ আমার কাছে আসেননি। আমি স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে এ বিষয়ে শিগগির মতবিনিময় করবো।'
'আনসার সদস্যদের জন্য ভবন তৈরির কাজ চলছে। তাই আপাতত তারা পাঠাগারের কক্ষটিতে বাস করছেন,' যোগ করেন তিনি।
Comments