বেনজীর আহমেদসহ ৬ কর্মকর্তা ও র‍্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত

মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের অভিযোগে বিশ্বের ১০টি প্রতিষ্ঠান ও ১৫ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। এ তালিকায় বাংলাদেশের র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ ৬ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ট্রেজারি বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ ট্রেজারি অফিস অফ ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল (ওএফএসি) এ সব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করেছে।

তালিকায় র‍্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। ট্রেজারি বিভাগ জানায়, মাদকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের যুদ্ধে অংশ নিয়ে র‌্যাব আইনের শাসন ও মানবাধিকার খর্ব করেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ হুমকির মুখে পড়েছে।

এতে বলা হয়, যৌথ টাস্ক ফোর্স র‍্যাব ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং বর্ডার গার্ড সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত হয়। র‍্যাবের দায়িত্ব হলো-অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, অপরাধমূলক কার্যকলাপ সম্পর্কিত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং সরকার-নির্দেশিত তদন্ত।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ জনেরও বেশি লোকের নিখোঁজের পেছনে র‌্যাব ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দায়ী বলে এনজিওগুলোর অভিযোগ। ২০১৮ সাল থেকে তাদের হাতে প্রায় ৬০০টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ভুক্তভোগীরা সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মী বলে কিছু প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে তাকে যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বলেও জানানো হয়।

এ বিষয়ে জানতে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈনকে ডেইলি স্টারের পক্ষ থেকে ফোন করা হয় ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি এবং মেসেজেরও উত্তর দেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক র‌্যাবের এক কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পুলিশ সদর দপ্তর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে। এটা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিষয়। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।'

মিয়ানমারের বাগো রাজ্যের চিফ মিনিস্টার মায়ো সুই উইন, কাইন রাজ্যের চিফ মিনিস্টার সাও মিন্ত ও, মান্দালয় রাজ্যের চিফ মিনিস্টার মং কো এবং কাচিন রাজ্যের চিফ মিনিস্টার খাত হেন নানসহ দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোয়ার্টারমাস্টার জেনারেল অফিস (কিউজিও) ও সশস্ত্র সংরক্ষিত বাহিনী মিয়ানমার ওয়ার ভেটেরান্স অর্গানাইজেশনকে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এ ছাড়া, প্রযুক্তি ব্যবহার করে নজরদারির মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনে সংশ্লিষ্টতা থাকায় ওএফএসি চীনা অর্থনীতিতে বিনিয়োগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

চীনের জিনজিয়াং উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সাবেক চেয়ারম্যান শোহরত জাকির ও বর্তমান চেয়ারম্যান এরকেন টুনিয়াজও এ তালিকায় আছেন। এছাড়া, নজরদারির জন্য চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সেন্সটাইম গ্রুপ লিমিটেডকেও এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এ তালিকায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উত্তর কোরিয়ার কয়েকজন নাগরিক এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নামও উল্লেখ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নির্বাহী আদেশ ১৩৮১৮ এর আওতায় এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন বা দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত ব্যক্তির সম্পদ বাজেয়াপ্তের কথা বলা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Inside the 3-year plan to fix banks

Bangladesh has committed to a sweeping overhaul of its troubled financial sector, outlining a detailed three-year roadmap as part of its latest agreement with the International Monetary Fund.

9h ago