ওয়াল্টার রথসচাইল্ড যে কারণে নিজের সংগ্রহশালা বিক্রি করতে বাধ্য হন
পশু-পাখি সংগ্রাহক হিসেবে ওয়াল্টার রথসচাইল্ডের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। ধন-দৌলতের আভিজাত্যের সঙ্গে নানা দুর্লভ প্রজাতির প্রাণি সংগ্রহ করে বিশাল এক চিড়িয়াখানার গড়ে তোলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত তার কিছুই রক্ষা পায়নি। নানা ধরনের ব্যক্তিগত টানাপোড়েনে সব জলাঞ্জলি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।
ওয়াল্টার রথসচাইল্ড জন্মগ্রহণ করেন লন্ডনের বিখ্যাত রথসচাইল্ড পরিবারে। বলা হয়ে থাকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনাঢ্য পরিবার এটি। তার না ছিল কোনো প্রাচুর্যের অভাব, না ছিল কাজের তাগিদ।
তখনকার সময় দরিদ্র থেকে মধ্যবিত্ত সব পরিবারের ছেলেমেয়েরা নিজেদের অবস্থান অনুযায়ী নানা ধরনের কাজ করতেন। জুতা পালিশ, চিমনি ঝাড়ু দেওয়া, শখের বসে সামুদ্রিক শৈবালের স্ক্র্যাপবুক তৈরি কিংবা নৃতাত্ত্বিক ট্যাক্সিডার্মির মতো নানা ধরনের কাজ করতে তারা।
বাবার বিশাল প্রতিপত্তির কারণে এসব কাজের কোনোটাই করার প্রয়োজন পড়েনি ওয়াল্টারের। তবে প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতি তার আকর্ষণের বিষয়টি নজর পড়ে ওয়াল্টারের বাবা-মার। তাই ওয়াল্টারের পশু-পাখি সংগ্রহের শখকে বাস্তবে পরিণত করতে পারিবারিক চিড়িয়াখানায় এনে দেন সারস, ক্যাঙ্গারু, এন্টইটার, ইমু ও জেব্রার মতো কয়েকটি প্রাণী।
চাকরিজীবনের শেষ পর্যন্তও ওয়াল্টার তার শখ পূরণ করে গেছেন। তিনি তার চিড়িয়াখানার কাজে নিযুক্ত করেছিলেন ৪০০ জন সংগ্রাহক। সংগ্রহের তালিকায় ছিল ১৪৪টি দৈত্যাকার কচ্ছপ, ২ হাজার পাহাড়ি পাখি ও অন্যানও প্রাণী, একটি দৈত্যাকার পাখি, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৪টি ঘোড়াসহ নানান জাতের প্রাণী। যেগুলো বিশ্বের ৪৮টি দেশ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন।
তবে ওয়াল্টার তার জীবদ্দশায় হারান এসব সংগ্রহ। এক সময় বাধ্য হয়ে মাত্র ২ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলারে বিক্রি করেন তার সংগ্রহে থাকা ২ লাখ ৮০ হাজার পাখি।
যার পেছনে ছিলেন তার দুই প্রেমিকা। যারা তাকে প্রায় ৪ দশক ধরে ব্ল্যাকমেইল করেছিলেন।
ওয়াল্টার রথচাইল্ড শুধু নানান জাতের প্রাণী সংগ্রহ করতেন না, সেগুলো খেতেনও। কথাটি তারা জানার পর থেকে নানাভাবে ওয়াল্টারকে ব্ল্যাকমেইল করে অঢেল অর্থ ও জমিজমা আদায় করেন। শেষ পর্যন্ত তাদের হুমকিতে ওয়াল্টারকে বিক্রি করতে হয়েছিল তার শখের সংগ্রহশালা।
রিপলি'স বিলিভ ইট অর নট থেকে অনুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া
Comments