সংসদ সদস্য মারেননি, নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে: অধ্যক্ষ
রাজশাহীর গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজা গত ৭ জুলাই সংসদ সদস্যের হাতে মারধরের শিকার হওয়ার বিষয়টি এক সংবাদ সম্মেলনে অস্বীকার করেছেন।
রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী এ সময় তার পাশে বসা ছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী নিউমার্কেটের কাছে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন সংসদ সদস্য।
অধ্যক্ষ তার বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করার পর ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, এ অভিযোগের কারণে তিনি হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন। এ সময় সাংবাদিকদেরকে তার হারানো সম্মান ফিরিয়ে দিতে বলেন তিনি।
সম্মেলনে গোদাগাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজা লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন, '১৫ জুলাই তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের আগে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর ভাবমূর্তি ও জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ন করার জন্য তার বিরুদ্ধে জন্য বানোয়াট অভিযোগ আনা হয়েছে।'
এক প্রশ্নে উত্তেরে তিনি বলেন, 'আমরা অধ্যক্ষরা নিজেদের মধ্যে তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলাম এবং আমাদের নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। আমি আসবাবপত্রের ওপর পড়ে ছোটখাটো আঘাত পেয়েছি।'
'সংসদ সদস্য আমাকে মারধর করেননি, তিনি বরং অধ্যক্ষদের ঝগড়া ধামিয়েছেন', যোগ করেন সেলিম রেজা।
মাটিকাটা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল জানান, ওইদিন তার ও সেলিম রেজার মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়।
তিনি বলেন, 'আমি ঝগড়ার সময় তার একটি কথা সহ্য করতে না পেরে তাকে একপাশে ঠেলে দিয়েছিলাম। আমি এর জন্য দুঃখিত।'
তবে অধ্যক্ষ সেলিম রেজা তার ক্ষত দেখাতে রাজি হননি।
সেলিম রেজাকে কয়েকজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, তিনি কীভাবে চোখের নিচে আঘাত পেলেন। তারা তাকে হাত দেখাতে বললে তিনি টেবিল থেকে হাত সরিয়ে নেন।
'আমি ধাক্কাধাক্কির সময় দুর্ঘটনাক্রমে ছোটখাটো আঘাত পেয়েছি', বলেন তিনি।
সাংবাদিকরা অধ্যক্ষের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলতে চাইলে সংসদ সদস্য ও তার লোকজন তাকে কথা বলতে দিতে অস্বীকৃতি জানান।
সংসদ সদস্য বলেন, 'তিনি ট্রমায় আছেন। একা কথা বলতে পারবেন না।'
এরপর সংসদ সদস্য নিজের লোকজনকে বলেন, অধ্যক্ষকে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নিয়ে যেতে।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ সেলিম রেজার এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ার কথা শুনে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, অধ্যক্ষ তাকে মারধরের বিষয়টি জানিয়েছিলেন।
'অধ্যক্ষ নিজেই আমাকে বলেছিলেন, তাকে সংসদ সদস্য মারধর করেছেন। এখন যখন তিনি হামলার কথা অস্বীকার করছেন, তখন এটা স্পষ্ট যে আরও অপমানের ভয়ে তিনি এটা করছেন', তিনি বলেন।
আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুর রহমান বাদশা আরও বলেন, সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষের বক্তব্যে তিনি অবাক হয়েছেন।
'কলেজের অধ্যক্ষ হওয়া সত্ত্বেও তার বক্তব্য সংসদ সদস্যের পক্ষে ছিল। একটি রাজনৈতিক দলের কাউন্সিল নিয়ে তিনি কীভাবে উদ্বিগ্ন? তার পাঠ করা বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, সংসদ সদস্য তাকে এটি লিখতে বাধ্য করেছেন', মন্তব্য করেন তিনি।
গত ৭ জুলাই ওমর ফারুক চৌধুরী রাজশাহী নিউমার্কেটের কাছে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সেলিম রেজাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
Comments