রাষ্ট্র যেন আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে: হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল

কারাগার থেকে বের হওয়ার পর মাইক্রোবাসে ২ সন্তানসহ হৃদয় মণ্ডল। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন/স্টার

'আমি নিরাপদ নই। রাষ্ট্র যেন আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। আমার মতো যারা আছেন তাদের যেন নিরাপত্তা দেয়। পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে চাওয়া, পথে-ঘাটে বের হতে যেন কোনো অসুবিধা না হয়।'

বলছিলেন মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল।

রোববার বিকেল পৌনে ৫টায় মুন্সিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে বের হয়ে জেলগেটে এসে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ সব কথা বলেন।

পরে তিনি একটি মাইক্রোবাসে ওঠেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী, ২ সন্তানসহ পরিবারের সদস্য ও তার কয়েকজন বন্ধু।

কারাগারের গেটে আসার পর সেখানে কয়েক মিনিটের জন্য সাংবাদিকরা তার ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান।

হৃদয় মণ্ডলের স্ত্রী ববিতা হাওলাদার সাংবাদিককের বলেন, 'আমার স্বামী ডায়াবেটিস রোগী। তিনি কারাগারে থাকাকালে ঠিকমতো ওষুধ নেননি। এ কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।'

'কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাকে ঢাকায় বোনের বাসায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চিকিৎসার জন্য। কিছুদিন থাকার পর তিনি আবার নিজ বাসায় আসতে পারেন,' বলেন ববিতা।

ববিতার বড় ভাই বাদল হাওলাদার জানান, কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর শিক্ষকদের পক্ষ থেকে কেউই আসেননি।

তিনি বলেন, 'শিক্ষকদের মধ্যে কেউ কেউ ভয়ে আসেননি। আবার কেউ কেউ চাননি যে তিনি জামিনে মুক্ত হোক।'

হৃদয় মণ্ডলের ছেলে শ্রেষ্ঠ মণ্ডল বলছিল, 'আমার বাবা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে। বাবাকে অনেকদিন পর আমি দেখেছি। বাবা যখন ছিলেন না তখন স্কুলে যেতে পারতাম না।'

'এখন বাবা কারাগার থেকে বের হয়েছেন। আমি আবার স্কুলে যেতে পারব। আমি আমার বাবার সঙ্গে স্কুলে যাব। সরকারের কাছে অনুরোধ থাকবে আমার বাবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা,' বলছিল শ্রেষ্ঠ।

গত ২২ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ এনে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা করেন একই স্কুলের অফিস সহকারী (ইলেক্ট্রিশিয়ান) মো. আসাদ মিয়াঁ। 

পেনাল কোড ২৯৫ ও ২৯৫ (এ) ধারায় এ মামলা করা হয়েছিল।

ওই রাতেই হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গত ২৩ মার্চ ও ২৮ মার্চ হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের জামিন চাইলে আদালত নামঞ্জুর করেন। এরপর জেলা ও দায়রা জজ আদালত একটি ফৌজদারি মিস কেস করলে ১০ এপ্রিল রোববার জামিন শুনানির দিন ধার্য করা হয়।

রোববার দুপুর ১টা ২০ মিনিটে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোতাহারাত আক্তার ভুঁইয়া তার জামিন মঞ্জুর করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

4h ago