পদ্মা সেতুর প্রথম ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন খালেদা জিয়া: মির্জা ফখরুল

রোববার ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতো বিনিময় করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। ছবি: কামরুল ইসলাম রুবাইয়াত/স্টার

খালেদা জিয়া পদ্মা সেতুর প্রথম ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাব হলরুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতো বিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপি দাওয়াত পেলে যাবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ফখরুল বলেন, 'পদ্মা সেতু তো কারও পৈত্রিক সম্পত্তি না, পদ্মা সেতু রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টায় উদ্যোগে করা। এখানে আরও একটি কথা আপনাদের সবার অবগতির জন্য জানিয়ে দেই, পদ্মা সেতুর প্রথম ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন খালেদা জিয়া। একদিকে না পদ্মা সেতুর দুই দিকেই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। এগুলো কিন্তু কেউ উচ্চারণও করে না, বলেও না। যমুনা সেতু যখন তৈরি হয় তখন একই অবস্থা তৈরি করেছে। যারা করলেন তাদের বাদ দিয়ে শুধু একজনের নাম, একজনের মূর্তি তৈরি করে নামটাই পরিবর্তন হয়ে গেলো। অর্থাৎ এই দেশে যেই ক্ষমতায় যায় সব কিছু দখল করে নেয়।'

তিনি বলেন, 'পদ্মা সেতু সম্পর্কে যে অহেতুক, অযৌক্তিক কথাবার্তা বলে দেশকে জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মানুষের দৃষ্টিকে অন্যদিকে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সংকটটা আমার পদ্মা সেতু নয়, সংকটটা আমার ভোটের অধিকার, সংকটটা আমার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা, সংকট তো আমার বিচার না পাওয়া, সংকট তো অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া।'

'এই বিষয়গুলো হলো আমাদের সংকট। আমরা এসব বিষয় নিয়ে কথা বলছি। আমরা এসব বিষয়ে পুরো দেশকে, রাজনৈতিক দলগুলোকে ও জনগণকে একত্রিত করার চেষ্টা করছি। এটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য এখন,' বলেন তিনি।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, 'এ ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ ও বিস্মিত। আমরা মনে করি যে সরকারের ব্যর্থতা এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী।'

তিনি বলেন, 'অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনায় ইতোমধ্যে অনেকজন হতাহতের খবর পাওয়া গেছে এবং এ দুর্ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা শোক জানিয়েছি। একটা কনটেইনার পোর্টে যদি যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকে, অগ্নি বা অন্য কোনো দুর্ঘটনা থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকে তাহলে যে কোনো দুর্ঘটনাকে ফেস (মোকাবিলা) করা কঠিন, যা তারা (সরকার) করতে পারেনি।'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'পোর্টে শুধুমাত্র উন্নয়নের কথা আওয়ামী লীগ সরকার বলে। কিন্তু সীতাকুণ্ডের এই ঘটনা আবার প্রমাণ করেছে এটা তাদের ফেক (ভুয়া) কথা। কারণ দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার জন্য কোনো ব্যবস্থাই সেখানে নেই।'

'এমনকি ওই ঘটনায় যারা আহত হয়েছেন, হাসপাতালে আছেন তাদের অক্সিজেন সাপ্লাই নেই। তাদের চিকিৎসার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই, সেখানে কোনো বার্ন ইউনিট নেই,' যোগ করেন তিনি।  

'এ ঘটনায় আবার প্রমাণ হলো সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ, তারা দুর্ঘটনা ও জনগণের জানের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ এবং সত্যিকার অর্থে উন্নয়নের জন্য যে আধুনিক একটা কনটেইনার পোর্ট প্রয়োজন, সেটা তৈরি করতে আওয়ামী লীগ সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে,' বলেন মির্জা ফখরুল।

'৭৫ এর হাতিয়ার' শ্লোগান প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, '৭৫ এর হাতিয়ার বলতে বোঝানো হয় ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর একটা ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত থেকে দেশকে-জাতিকে রক্ষা করার জন্যে সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া। তখনকার হাতিয়ারের কথা মিন করা হয়। যদিও এ কথাগুলো আমরা বলিনি, যদিও এই কথাগুলো আমাদের দলের কথা নয়, আমি জানি না তারা কিভাবে বলেছে।'

তিনি বলেন, '৭৫ এর হাতিয়ার বলতে কোনো বিশেষ ব্যক্তিকে হত্যা করার জন্যে বা কোনো কিছুকে ধ্বংস করার জন্যে নয়। ৭৫ এর হাতিয়ারের কথা যদি কেউ বলে থাকে তাহলে, এটা দেশ ও জনগণকে রক্ষা করতে সিপাহী জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে যে পরিবর্তন এসেছিল, জিয়াউর রহমানকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, এটাকে আমরা বোঝাই। কিন্তু ৭৫ এর হাতিয়ার শ্লোগানটা আমরা দেইনি।'

ফখরুল বলেন, 'আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বর্তমান সরকার পরিবর্তন করতে হবে। তারপর একটা নিরপেক্ষ সরকার আনতে হবে এবং এই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পছন্দের সরকার গঠন করতে পারবে।'

এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
US airstrike on Iran

Strikes on Iran mark Trump's biggest, and riskiest, foreign policy gamble

The dramatic US strike, including the targeting of Iran’s most heavily fortified nuclear installation deep underground, marks the biggest foreign policy gamble of Trump’s two presidencies and one fraught with risks and unknowns.

1h ago