পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধে ড. ইউনূস ও কামাল হোসেন ষড়যন্ত্র করেছেন: আইনমন্ত্রী

ছবি: স্টার

পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক যেন অর্থ না দেয় সেজন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ড. কামাল হোসেন ষড়যন্ত্র করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

আজ শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা সদরের টি. আলী কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত উপজেলা শাখা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, 'প্রথম ষড়যন্ত্র করেছেন বিশ্বব্যাংক যাতে অর্থ না দেয়, এই ইউনূস সাহেব। এই যে ডাক্তার একজন আছেন কামাল হোসেন সাহেব। এরা সকলে মিলে ষড়যন্ত্র করে যাতে বিশ্বব্যাংক টাকা দেওয়া বন্ধ করেছে।'

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, '২১ দিন পর আমরা সেই স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করব। এই পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। এখন নতুন করে উনারা (বিএনপি) বলছেন, এই পদ্মা সেতু ১০ হাজার কোটি টাকায় করা যেত।'

আনিসুল হক বলেন, '১৯৯৯ সালে শেখ হাসিনা প্রথম প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে জাপান যাওয়ার পর জাপান সরকার বলেছিল আমরা আপনাদের জন্য কী করতে পারি। তখনই প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন আমাকে আপনারা পদ্মা সেতু বানিয়ে দেন। এরপর পদ্মা সেতুর একটা ফিজিবিলিটি স্টাডি হয়। তবে এর কোনো এস্টিমেট (প্রাক্কলন) হয়নি। এরপরে ২০০৮ সালে ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা খরচ হবে বলা হয়েছিল। পরে ২০১১ সালে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচ হবে বলে প্রাক্কলন হলো। তারপরে এর সঙ্গে রেল লাইন যুক্ত হলো। সব মিলিয়ে ২০১৬ সালে সঠিকভাবে প্রাক্কলন করে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা খরচ হওয়ার কথা বলা হয়।'

পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, 'আগে জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে জমির যে দাম, সেই দাম দেওয়া হতো‌। কিন্তু শেখ হাসিনা বললেন মানুষকে উৎখাত করতে গেলে তাদের জমির দাম ৩ গুণ দিতে হবে। আর এই কারণেই পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।'

বিএনপি নেতাদের মুখে লাগাম দেওয়ার কথা বলে আইনমন্ত্রী বলেন, 'আপনারা রাজনীতি করেন আপত্তি নেই। কিন্তু আবার ১৫ আগস্ট করার কথা বললে আমরা আইনের মাধ্যমে আপনাদের দাঁত ভেঙে দেব। আইনের মাধ্যমে যে শাস্তি দেওয়া উচিত, সেই শাস্তি দেব। আমরা চাই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গণতন্ত্র রক্ষা করে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হোক। আপনারা ষড়যন্ত্র করে এখানে কিছু করতে পারবেন না।'

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, 'বিএনপির নেতাকর্মীরা বলেন পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। কিন্তু বাংলাদেশে আর পঁচাত্তর ফিরে আসবে না। ১৫ আগস্ট ঘটতে দেওয়া হবে না। ষড়যন্ত্রের বিষ দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে। ষড়যন্ত্রের সকল আস্তানা জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া হবে।' 

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। আইনমন্ত্রী ও কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আনিসুল হকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। 

সম্মেলনে সভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়সার ভূঁইয়া জীবন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Regulating online hate speech 'not censorship': UN rights chief

Instead, Meta platforms including Facebook and Instagram, 'would use community notes similar to X (formerly Twitter), starting in the US'

1h ago