মেঘনায় নৌপুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত জেলে আমিরের বাড়িতে শোকের মাতম
মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরার সময় জেলে ও নৌ পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত জেলে আমির রাঢ়ীর (২৫) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। সোমবার সকালে ভোলা সদর উপজেলার চর মতলবের জেলে পল্লীতে তার মরদেহ পৌঁছানোর পর জ্ঞান হারান তার স্ত্রী ও বৃদ্ধ পিতা।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজু চৌধুরীর হাট এলাকার মেঘনা নদীতে শনিবার দিবাগত রাতের ওই সংঘর্ষে ৬ পুলিশসহ ১৬ জন আহত হন।
এ ঘটনায় নিহত হন আমির রাঢ়ী।
তার ভাই জামাল রাঢ়ী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, মরদেহ পৌঁছানোর পর জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
আমিরের মরদেহ পৌঁছানোর পর তার স্ত্রী ও বৃদ্ধ পিতা জ্ঞান হারান। পুরো জেলে পল্লীতে শুরু হয় কান্নার রোল।
এই গ্রামের জেলে মনির মাঝি ডেইলি স্টারকে জানান, নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই জেলেরা মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে যায়। শনিবার রাত ১০টার পর ভোলা ও লক্ষ্মীপুরের মধ্যবর্তী মেঘনা নদীতে জাল ফেলে অপেক্ষা করছিল রাজাপুরের মনির চৌকিদারের ট্রলারে থাকা ১১ জেলে। এ সময় লক্ষ্মীপুর নৌ পুলিশের একটি টিম জেলেদের ধাওয়া করে।
এক পর্যায়ে নৌ পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালালে আমির গুলিবিদ্ধ হন।
নিহত আমিরের প্রতিবেশী ইউসুফ ডেইলি স্টারকে জানান, গুলিবিদ্ধ আমিরকে রোববার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে পুলিশের গুলিতে জেলে নিহত হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে চাঁদপুর অঞ্চল নৌ পুলিশের এসপি কামরুজ্জামান ডেইলি স্টারকে জানান, মজু চৌধুরীর ঘাট এলাকার মেঘনায় জেলেরা নৌ পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
তিনি জানান, এ সময় জেলেদের ইটপাটকেল ও লগি বৈঠার আঘাতে নৌ পুলিশের বেসরকারি মাঝিসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন।
পরে আত্মরক্ষার্থে নৌ পুলিশ রাবার বুলেট ছোঁড়ে। এ সময় আহত জেলেরা ট্রলার থেকে নদীতে ঝাঁপ দেয় বলে জানান এসপি।
এসপি কামরুজ্জামান বলেন, 'নৌকার ১০ জন জেলেকে আহত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। তাদের মধ্যে একজনের মাথায় গুরুতর আঘাত থাকায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তিনি মারা যায়।'
আমীরের মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
এসপি জানান, এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন শিকদারকে আহবায়ক করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।
আগামী ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া যাবে।
Comments