বীমার টাকার দাবিতে নোয়াখালীতে সান ফ্লাওয়ার লাইফের কার্যালয় ঘেরাও

কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ, সড়ক অবরোধ
বীমার টাকার জন্য সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির নোয়াখালী কার্যালয় ঘেরাও করে গ্রাহকেরা। ছবি: আনোয়ারুল হায়দার/ স্টার

মেয়াদ শেষের পরও টাকা পরিশোধ না করে অফিস গুটিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির নোয়াখালী কার্যালয় ঘেরাও করেছে কয়েক হাজার গ্রাহক। এসময় কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন তারা।

বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধা পর্যন্ত নোয়াখালী জিলা স্কুল সংলগ্ন কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌছে সড়ক অবরোধ তুলে দেন এবং ইন্সুরেন্স কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা দিতে কার্যালয়ের সামনে ও ভেতরে অবস্থান নেন।

সান ফ্লাওয়ার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি নোয়াখালী জোনাল অফিস কার্যালয় সূত্রে জানা যায় এ কার্যালয়ের অধীনে লক্ষাধিক গ্রাহক রয়েছে। ৩০ জুনের মধ্যে কয়েক হাজার গ্রাহকের বীমার প্রিমিয়াম মেয়াদ শেষে তাদের মূলধন ও লভ্যাংশ বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল।

গ্রাহকদের অভিযোগ, ইন্সুরেন্স কর্মীরা মোটা অংকের মুনাফার কথা বলে জেলা শহর ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে লক্ষাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে ২শ কোটি টাকারও বেশি মূলধন সংগ্রহ করেছে। ওইসব গ্রাহকদের মধ্যে কয়েক হাজার গ্রাহকের বীমার প্রিমিয়াম মেয়াদ শেষে তাদের মূলধন ও লভ্যাংশ বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও তারা সেটা না করে বুধবার বিকাল থেকে অফিস গুটিয়ে নিচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার দুপুর থেকে তারা সান ফ্লাওয়ার লাইফ ইন্সুরেন্সের অফিস ঘেরাও করে।

রাতে হাজার হাজার গ্রাহক ইন্সুরেন্স কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আরও কয়েক হাজার গ্রাহক তাদের সঙ্গে যোগ দেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন।

সদর উপজেলার কৃষ্ণরামপুর গ্রামের গ্রাহক সুমি আক্তার বলেন, তিনি ২০১৩ সাল থেকে প্রতি বছর ৮০ হাজার টাকা হারে প্রিমিয়াম জমা দিয়েছেন। কিন্তু তার লভ্যাংশ তো দূরের কথা মূলধনও দিচ্ছে না।

গ্রাহক মো. শাকিল বলেন তিনি ৪ হাজার ১৫ টাকা হারে ২০১৩ সাল থেকে প্রিমিয়াম জমা দিয়ে আসছেন।

বিক্ষুব্ধ গ্রাহক রুবেল, জহির, সুমি আক্তারসহ অনেক গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ২০১৮ সালে বীমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের টাকা দিচ্ছেন না। টাকার জন্য এলে কর্মকর্তারা টাকা না দিয়ে গ্রাহকদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন। গ্রাহকরা দ্রুত তাদের টাকা পরিশোধ করার দাবি জানান। অন্যথায় তারা বড় ধরনের আন্দোলনের হুমকি দেন।

সান ফ্লাওয়ার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লি. এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) মিজানুর রহমান মিলন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, নোয়াখালী কার্যালয়ের অধীনে লক্ষাধিক গ্রাহক আছে। তাদের মধ্যে কতজন গ্রাহকের প্রিমিয়ামের মেয়াদ শেষ হয়েছে তা তিনি সঠিক বলতে পারেননি।

তিনি বলেন, গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা আমানতের টাকা দিয়ে কোম্পানি জমি কিনে রেখেছেন। ওই জমি বিক্রি করতে না পারায় গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ অফিস গুটিয়ে চলে যাচ্ছে এমন গুজবের ভিত্তিতে গ্রাহকরা অফিসের সামনে এসে ভীড় করেন এসময় উত্তেজিত গ্রাহক ১২ জন কর্মকর্তা কর্মচারীকে কার্যালয়ের ভেতরে আটক রেখে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।

সুধারাম মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান বলেন, প্রধান কার্যালয় থেকে বীমা কোম্পানির কয়েকজন কর্মকর্তা পুলিশি পাহারায় তাদের কার্যালয়ে ঢুকেছে। যেসব গ্রাহকের বীমার মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে, তাদের মধ্যে বৃহস্পতিবার ৩০ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ইন্সুরেন্স কার্যালয়ের সামনে কয়েক হাজার নারী-পুরুষ বুধবার দুপুর থেকে অবস্থান করছেন। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।

Comments

The Daily Star  | English

Matarbari project director sold numerous project supplies

Planning Adviser Prof Wahiduddin Mahmud today said the Matarbari project director had sold numerous project supplies before fleeing following the ouster of the Awami League government on August 5.

1y ago