বগুড়ায় শিয়ালের কামড়ে ৪ দিনে অন্তত ৩০ জন আহত
বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়নে গত শনিবার থেকে শিয়ালের কামড়ে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে শিয়ালের আক্রমন শুরু হওয়ার পর থেকে ইউনিয়নের ফুলকোট গ্রামে গত ৪ দিনে ২টি শিয়াল হত্যা করেছে গ্রামবাসী।
আজ মঙ্গলবার ওই এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামবাসী এলাকায় পাহারার ব্যবস্থা করেছে এবং অনেকেই লাঠি হাতে চলাচল করতে শুরু করেছে।
রোববার শিয়ালের আক্রমণের শিকার হয়েছেন রামপুর গ্রামের বাসিন্দা মামা খাতুন (৪০)। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রোববার সকালে একটি পাগলা শিয়াল আমার বাড়ির গোয়ালে হানা দেয়। আমি গরু বাঁচাতে গেলে, শিয়াল আমার ডান হাতে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়।'
রাধানগর গ্রামের আব্দুস সালাম (৪২) বলেন, 'শনিবার রাতে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় হঠাৎ একটি শিয়াল এসে আমার ডান হাতে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়।'
পরের দিন তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জলাতঙ্ক টিকা নেন বলে জানান।
যোগাযোগ করা হলে আমরুল ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. নজরুল ইসলাম নয়ন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত শনিবার থেকে ইউনিয়নের রামপুর, ফুলকোট, রাধানগর, রায়নগরসহ ৪-৫টা গ্রামের অন্তত ৩০ জনকে শিয়াল কামড়েছে। তাদের মধ্যে নারী-পুরুষ-বৃদ্ধ আছে।
তিনি বলেন, 'আমাদের এখানে যেমন শস্য খেত, সবজি খেত আছে, তেমনি আছে অনেক ঝোপঝাড়। কয়েক দশক ধরে এই এলাকায় প্রচুর শিয়ালের আনাগোনা হয়েছে।'
'আগে অবশ্য শিয়াল কখনও কামড়ায়নি। কিন্তু এখন শিয়ালগুলো পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে না। তাই তারা মানুষের বাড়ি এসে পড়ে, মানুষকে কামড়ায়,' বলেন তিনি।
তিনি জানান, বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
জানতে চাইলে বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, 'শিয়াল সাধারণত ২ কারণে মানুষকে আক্রমণ করে। পর্যাপ্ত খাবার না পেলে বা আক্রমণের শিকার হলে এবং র্যাবিস ভাইরাসে আক্রান্ত হলে।'
তিনি বলেন, 'পাগলা শিয়াল কাউকে কামড়ালে, তাকে জায়গাটা পরিষ্কার করতে হবে এবং ডাক্তারের কাছে গিয়ে জলাতঙ্ক টিকা নিতে হবে।'
শিয়ালের কামড়ে কতজন আহত হয়েছেন বা ভ্যাকসিন নিয়েছেন জানতে চাইলে শাহজাহানপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোতারব হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিষয়টি আজ জানতে পেরেছি। তবে কতজন ভ্যাকসিন নিয়েছেন তা আগামীকাল বলতে পারব।'
Comments