কাজ হারিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ফেরির হকার হাসান
কাঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ-পথে গত ১৫ বছর ধরে সফেদা বিক্রি করেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার পূর্বসরমঙ্গল গ্রামের বাসিন্দা মো. হাসান বেপারি (৩৪)। পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ায় তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
আয়ের জন্য তিনি এখন মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের (ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) বগাইল এলাকায় অবস্থিত টোল প্লাজার পাশে বসে হাসানের কথা হয় এই প্রতিবেদকের ।
হাসান বেপারি জানান, মা, দুই ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী কে নিয়ে তার সংসার। কাঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ-পথে ফেরিতে সফেদা বিক্রি করে তিনি দৈনিক ১৫০০-২০০০ টাকা আয় করতেন।
'পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হলে পরিবার নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছি। গত দুই দিন ধরে ভাঙ্গা বাস স্ট্যান্ডে পেয়ারা বিক্রি করছি,' বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আগে থেকেই আমি বুঝতে পেরেছি যে সেতুর পর আমার মতো প্রায় এক হাজার জন কাজ হারাবে। আমার জমানো কিছু টাকা ছিল তা দিয়ে আর আত্মীয়দের থেকে ধার নিয়ে মালোয়শিয়া যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
টোল প্লাজায় আরো কথা হয় গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার ভাজনদি গ্রামের বাসিন্দা মো. মিলন মোরাল ( ২৭) এর সঙ্গে। টোল প্লাজায় যানজটে আটকে থাকা যানবাহনে পেয়ারা বিক্রি করছিলেন তিনি।
কাজ হারিয়ে তিনিও মালেশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মিলন জানান, ৬ সদস্যের পরিবারে তিনিই একমাত্র উপার্জনক্ষম লোক।
দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'আজ ৭৫০ টাকা দিয়ে ৩০ কেজি পেয়ারা কিনেছি ভাঙ্গা বাজার থেকে। ইতোমধ্যে ১৫ কেজি পেয়ারা বিক্রি করে ৬০০ টাকা পেয়েছি। আজ শুক্রবার টোল প্লাজায় যানজটের কারণে ভালো বিক্রি হচ্ছে। ঘাট বন্ধ হবার পর আজকেই এতো বিক্রি হয়েছে।'
'মালোশিয়া যাবার জন্য পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। আশা করি ২ মাসের মধ্যে চলে যাবো,' বলেন তিনি।
Comments