নৌকা সমর্থকের বিরুদ্ধে ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থীর
মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার তেউটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের এক সমর্থকের বিরুদ্ধে ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগ তুলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুন বেপারি।
মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুন বেপারি বলেন, 'নৌকার সমর্থক শিশিল বেপারি কেন্দ্রে গিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে ভোটারদের ওপর প্রভাব বিস্তার করেন। এ নিয়ে উত্তেজিনা তৈরি হয়। একপর্যায়ে আমার সমর্থকদের মারধর করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।'
জানা গেছে, আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে লৌহজং সরকারি কলেজ কেন্দ্রে নৌকার সমর্থক শিশিল বেপারীর সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুন বেপারীর সমর্থকদের এ দ্বন্দ্ব বাধে। এসময় নৌকা সমর্থককে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ওই ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা গেছে- নৌকা প্রতীকের সমর্থক শিশিল বেপারী লাঠি নিয়ে স্বতন্ত্র প্রতীকের সমর্থকদের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন। এ সময় ২ জন পুলিশ সদস্য তাকে ধরে রাখেন। পরে ম্যাজিস্ট্রেট শিশিল বেপারিকে কেন্দ্র ত্যাগ করতে বলেন। তারপর ওই সমর্থককে হাত ধরে কেন্দ্র থেকে দূরে নিয়ে যান ম্যাজিস্ট্রেট। তখন স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা তার দিকে তেড়ে এলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিনি ভোট দিতে এসেছিলেন, ভোট দেওয়া শেষে তাকে চলে যেতে বলা হয়। তিনি কোনো ঝামেলা করেননি।'
তাহলে কেন হাত ধরে এই ভোটারকে বের করে দেওয়া হলো জানতে চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট 'কথা শুনতে পাচ্ছেন না' বলে ফোন রেখে দেন। এরপর তার মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠিয়েও কোনো মন্তব্য জানা যায়নি।
লৌহজং সরকারি কলেজের প্রিসাইডিং অফিসার আব্দুস সাত্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি, ব্লাড প্রেশার বেড়ে গেছে। কেন্দ্রের বাইরে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হুড়োহুড়ি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে কেন্দ্রের ভিতরে কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি।'
শিশির বেপারি নামে এ কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কোনো এজেন্ট ছিলেন না বলে জানান প্রিসাইডিং অফিসার আব্দুস সাত্তার।
তবে নৌকার সমর্থক শিশিল বেপারি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা আমার দিকে তেড়ে আসেন এবং আমি আত্মরক্ষার চেষ্টা করি। গায়ে ধাক্কাসহ তারা আমাকে মারধরও করেছে। কেন্দ্রে তখন অনেক বহিরাগতরা ছিল। পরে 'এখানে গণ্ডগোল হবে, আপনি আমার সঙ্গে বাইরে চলেন' বলে ম্যাজিস্ট্রেট আমার হাত ধরে বাইরে নিয়ে আসেন।'
লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, 'চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে মধ্যে তর্কবিতর্ক, বাকবিতণ্ডা ও উত্তেজনা ছিল। তবে, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।'
নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলাম মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, 'আমার সমর্থকরা কেন্দ্রে গিয়ে প্রভাব বিস্তার করেননি। কেন্দ্রের সামনে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি শান্ত করেছে।'
Comments