দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া আমার জন্যে আশীর্বাদ: তৈমুর

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, 'নগরবাসীর ওপর থেকে করের বোঝা কমিয়ে এবং সিটি করপোরেশন অফিসকে ঠিকাদারদের কবল থেকে মুক্ত করে নারায়ণগঞ্জকে একটি জনবান্ধব শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।'

'নারায়ণগঞ্জের মানুষ বলে, সিটি করপোরেশন নিয়ন্ত্রণ করে ঠিকাদাররা। আমি প্রথমে নারায়ণগঞ্জকে সিটি করপোরেশনে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তবে আমরা চাইনি নগরবাসীর ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দিতে।'

বিএনপির সব ধরনের পদ থেকে অপসারিত হওয়ার বিষয়ে তৈমূর বলেন, 'আমার মূল লক্ষ্য করপোরেশনকে ঠিকাদারদের কবল থেকে মুক্ত করা এবং এটিকে জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা।'

তিনি আরও বলেন, 'মেয়র ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে তিক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে দীর্ঘ ১৮ বছর নগরবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।'

বন্দরকে নারায়ণগঞ্জ শহরের সঙ্গে যুক্ত করতে শীতলক্ষ্যার ওপর সেতু নির্মাণের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, 'কিছু সমস্যা সমাধানের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন সদিচ্ছার।'

'নির্মাণ কাজের জন্য তহবিল অনুমোদন করেছে একনেক। কিন্তু, মেয়র ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এর কাজ এখনো শুরু হয়নি। মতভেদ থাকতেই পারে, কিন্তু জনগণের ভালোর জন্য তারা কেন একত্রিত হবেন না? তাদের সংঘাত একটি ওপেন সিক্রেট বিষয় এবং এর কারণে ভোগান্তিতে জনগণ।'

জনগণ কেন তাকে ভোট দেবে জানতে চাইলে তৈমূর জানান, তিনি তার ৫০ বছরের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সব সময় জনগণের পাশেই আছেন।

'মানুষ একটা পরিবর্তন চায় এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধার জন্য তারা আওয়াজ তুলছে', যোগ করেন তৈমূর।

'কয়েক বছর ধরে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়নি কিন্তু নগরবাসীর ওপর বিভিন্নভাবে অতিরিক্ত কর আরোপ করা হয়েছে। হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স, পানির শুল্ক... মানুষ পরিবর্তন চায় বলেই আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি।'

তৈমুর জানান, তাকে দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে বিএনপির সিদ্ধান্ত তার জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। কারণ ২০১১ সালের মতো শেষ মুহূর্তে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য তার ওপর কারও কোনো ধরনের চাপ থাকবে না। সেবার তৈমূরকে নির্বাচনের ৫ ঘণ্টা আগে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হয়েছিল।

দলের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে তৈমূরকে সব ধরনের দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতির প্রয়োজন হয় না। স্থানীয় বিএনপির সব নেতাকর্মী আমার সঙ্গে আছেন এবং নিয়মিত আমার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন।'

ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা নির্বাচন নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্য করছেন বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে তৈমুর বলেন, 'সরকার যদি কোনো "ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং" না করে তাহলে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে।'

'আমি কোনো নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করব না। আশা করি সরকার ও প্রশাসন কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই আচরণবিধি বলবৎ রাখবে।'

প্রতিপক্ষ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিয়ে মন্তব্য করব না। সব প্রতিদ্বন্দ্বী আমার কাছে সমান। আইভি আমার ভাতিজি। চুনকা ভাই (আইভীর বাবা) আমার নেতা ছিলেন। আমি তাকে সম্মান করি এবং তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।'

তিনি আরও বলেন, 'অফিস ঠিকাদারদের কব্জায় থাকা উচিত না। এটা আমি চুনকা ভাইয়ের কাছ থেকে শিখেছি এবং আমি সেই পথই অনুসরণ করব।'

Comments

The Daily Star  | English

Regulating online hate speech 'not censorship': UN rights chief

Instead, Meta platforms including Facebook and Instagram, 'would use community notes similar to X (formerly Twitter), starting in the US'

51m ago