সীতাকুণ্ডে রাসায়নিক মিশ্রিত পানি ছড়িয়ে পড়ছে

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপো এলাকায় আশপাশে রাসায়নিক মিশ্রিত পানি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। ছবি: সিফায়াত উল্লাহ/স্টার

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপো এলাকায় আশপাশে রাসায়নিক মিশ্রিত পানি ছড়িয়ে পড়ছে।

আগুন নেভাতে যে পানি ব্যবহার করা হচ্ছে সেই পানির সঙ্গে রাসায়নিক দ্রব্য মিশে আশপাশে ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ডিপোর পাশে কাশেম জুট মিল এলাকায় ঢুকে পড়েছে রাসায়নিক মিশ্রিত পানি। ফলে সেখানে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।

আজ সোমবার ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মনীর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাসায়নিক মিশ্রিত পানি যাতে আরও ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।'

রসায়নবিদ ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহ-সভাপতি ইদ্রিছ আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বালুকণার সঙ্গে রাসায়নিক পদার্থ মিশে মাটির নিচের অংশ দূষিত করবে। এতে নিচে বসবাসকারী জীববৈচিত্র্য হুমকিতে পরবে। এ ছাড়া, যে এলাকায় রাসায়নিক পদার্থ ছড়িয়ে পড়বে সেখানে জীববৈচিত্রের আবাস নষ্ট হবে।'

তবে ড্রেন ও খালের পানি যাতে বঙ্গোপসাগরে না পড়ে সেজন্য বাঁধ দিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ডিপো থেকে আধা কিলোমিটার দূরে রাসায়নিক মিশ্রিত পানি আটকে দেওয়া হয়েছে।

ঘটনাস্থলে থাকা সেনাবাহিনীর সদস্যরা গণমাধ্যমকে জানান, রাসায়নিক পদার্থ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য খালে বাঁধ দেওয়া হয়েছে।

ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে সেই এলাকায় বাতাসে রাসায়নিকের ঝাঁঝালো গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাতাসে রাসায়নিকের তীব্র গন্ধে তারা অস্বস্তি বোধ করছেন।

গত শনিবার রাতে আগুন লাগার পর থেকে গত ৪০ ঘণ্টা ধরে সেই আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে ফায়ার সার্ভিস।

সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস এখনো উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। তারা কনটেইনারগুলো সরাচ্ছেন। দূর থেকে দেখা যাচ্ছে, এখনো সেখানে কেমিকেলের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে।

আজ সকালে ঘটনাস্থলে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, থেমে থেমে বিস্ফোরণ হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ভেতরে যেতে পারছেন না। ফলে, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

চট্টগ্রাম থেকে ঘটনাস্থলে আসা ফায়ার সার্ভিসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজ সকালে জানান, পুরো ডিপোজুড়ে শত শত কনটেইনার রয়েছে। এর মধ্যে কোনটিতে কেমিকেলের গ্যালন আছে বা নেই, তা বোঝা মুশকিল। এই পরিস্থিতিতে ভেতরে যাওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আগুন নেভানো এখনো সম্ভব হচ্ছে না।

সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বিকেলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস হোসেন এ তথ্য জানান।

গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। গতকাল দুপুর আড়াইটায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া সেল জানিয়েছিল, আগুন নেভাতে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট কাজ করছে।

এর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ২৫০ সদস্য সেখানে উদ্ধার অভিযানে কাজ করছেন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

3h ago