রানা প্লাজা ট্রাজেডির ৯ বছর: দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ৯ বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে ধসে পড়েছিল ৯ তলা ভবনটি। এটি ছিল দেশের পোশাকশিল্পে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি।
ভবন ধসে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ১৩৮ শ্রমিক এবং আহত হয়েছেন ২ হাজার ৪৩৮ শ্রমিক। আহতদের অনেকেই পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
দিনটির স্মরণে শ্রমিক সংগঠন, আহত শ্রমিক, নিহত শ্রমিকদের স্বজনসহ বিভিন্ন সরকারি -বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সেসময় বিভিন্ন দাবিও তুলে ধরেন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মী, আহত শ্রমিক ও নিহত শ্রমিকদের স্বজনরা।
শ্রমিক সংগঠনগুলোর অভিযোগ, যাদের অবহেলায় দুর্ঘটনা ঘটেছে, ৯ বছরেও তাদের শাস্তি নিশ্চিত হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোও এখনো যথাযথ ক্ষতিপূরণ পায়নি।
তাদের দাবি, ভবন মালিক সোহেল রানাসহ দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
এ ছাড়াও, তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে—আহত ও নিহত শ্রমিকদের স্বজনদের পুনর্বাসন করা, আহত শ্রমিকদের এক জীবনের আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং শ্রমিকদের আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা।
রানা প্লাজার জায়গাটি অধিগ্রহণ করে শ্রমিকদের জন্যে হাসপাতাল নির্মাণ ও ২৪ এপ্রিলকে 'জাতীয় শ্রমিক শোক দিবস' ঘোষণা করার দাবিও জানানো হয়েছে।
শ্রমিক সংগঠনগুলো এর আগের বর্ষপূর্তিতে ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সারাদেশে নানান কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু, তাদের একটি দাবিও পূরণ হয়নি বলে তারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে আহত শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। নিহতদের পরিবারের সদস্যরাও উপার্জনক্ষম আপনজনকে হারিয়ে অর্থকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলে তারা ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারতেন। চিকিৎসা করাতে পারতেন।'
'বিচারে ধীর গতির জন্য' হতাশা প্রকাশ করে রফিকুল ইসলাম সুজন আরও বলেন, 'গত ৯ বছরে ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র একজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এভাবে মামলা চলতে থাকলে হাজার বছরেও এর নিষ্পত্তি হবে না। বিচার কার্যক্রম দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে করতে হবে।'
Comments