সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ড

ফেসবুকে লাইভ করা আরও ২ জন নিখোঁজ

ছবি: এফএম মিজানুর রহমান

নিখোঁজ ড্রাইভার ছেলের সন্ধানে ব্যানার হাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দাঁড়িয়ে ছিলেন পিতা মো. হেমায়েতউল্লাহ। ছেলে মোহাম্মদ মাঈনুদ্দীন বিএম ডিপোর ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ।

মাঈনুদ্দীন পেশায় কাভার্ডভ্যান চালক। ট্রাকেই থাকতেন তিনি। ঘটনার পর মর্গ, হাসপাতাল ঘটনাস্থল কোনো খানেই মেলেনি তার সন্ধান। ছেলের খোঁজে গতকাল সকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গেছেন বাবা। হেমায়েতউল্লাহ ঢাকায় ভারী গাড়ি চালান। ২ বছর আগে চালকের খাতায় নাম লেখান মাঈনুদ্দীন।

ঘটনার সময় মাঈনুদ্দীন ট্রাক চট্ট মেট্রো-ট ১২০৮৮৫ গাড়ির ভেতরে ছিলেন এবং বাবাকে ফোন করে ইমো কলে আসতে বলেন।

হেমায়েতউল্লাহ বলেন, 'আগুন লাগার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমাকে ভিডিও কল দেয় সে। আমাকে বলছিল আগুন লাগছে দেখেন। এর কিছুক্ষণ পরে বিস্ফোরণ হলে তার খোঁজ আর পাওয়া যায়নি। মোবাইলে রিং হলেও রিসিভ করেনি সে।'

গাড়ির মালিক মাঈনুদ্দীনের চাচা আবু তয়ব মণ্ডল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন 'আমি ঘটনা শুনে ডিপোতে যাই। কিন্তু ঢুকতে পারিনি। পরে আমাকে জানানো হয় আমার গাড়ির নিচ থেকে একটা পোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা সব মরদেহ দেখেছি কিন্তু শনাক্ত করতে পারি নাই। সিআইডি বুথে আমরা নমুনা দিয়েছি।'

মাঈনুদ্দীনের বাবা বলেন, 'আমার ছেলে নিজে ফেসবুকে লাইভ দিয়েছিল ঘটনা। কিন্তু আগুন এভাবে তছনছ করে জানা ছিল না।'

'ওষুধের জন্য এখন টাকা পাঠাবে কে'

ড্রাইভার ছেলে মো. আকতারের খোঁজ পেতে বুথে নমুনা দিয়েছেন ৭০ বছর বয়সী বাবা নুরুল আমিন। তার ছেলেও মোবাইলে লাইভ করতে গিয়ে নিখোঁজ হন।

নুরুল আমিন বলেন, 'আমার সঙ্গে গত সপ্তাহে কথা হয়েছিল। আমাকে ওষুধের জন্য এক হাজার টাকা পাঠাইছে। আগুনে বিস্ফোরণের ১০ মিনিট আগে সে বাসায় ফোন করেছিল। তার খোঁজ এখনো পাইনি। আমি অসুস্থ শরীর নিয়ে নমুনা দিয়েছি। চাই ছেলেটা জীবিত থাক।'

সিআইডি বুথে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ২২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডি'র এস আই আশোক কুমার সরকার।

চট্টগ্রাম সিআইডি'র পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা ব্লাড সেম্পলিং করে ডিএনএ প্রোফাইলিং করছি। যে মরদেহগুলো শনাক্ত হয়নি সেগুলোর সঙ্গে এই ডিএনএ মেলানো হবে।'

Comments