পদ্মায় ২ ফেরির মুখোমুখি সংঘর্ষ: নিহত ১, নিখোঁজ ১, আহত ১০
পদ্মা নদীর মাওয়া শিমুলিয়া-সাত্তার মাদবর মঙ্গলমাঝি ঘাট নৌরুটে চলন্ত ২ ফেরির মুখোমুখি সংঘর্ষে খোকন শিকদার (৪০) নামে এক পিকআপ ভ্যানচালক নিহত, অপর এক পিকআপ ভ্যানচালক নিখোঁজ ও ১০ যাত্রী আহত হয়েছেন।
আজ রোববার ভোর পৌনে ৪টার দিকে নৌরুটের শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের টার্নিং পয়েন্টে ফেরি বেগম রোকেয়া ও ফেরি সুফিয়া কামালের সঙ্গে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এক পিকআপ ভ্যানচালক নিহত ও অপর পিকআপ ভ্যানচালক নিখোঁজের বিষয়টি মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবু তাহের মুঠোফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'দুর্ঘটনায় নিহত খোকন ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া চিংবাখালি এলাকার হারুন শিকদারের ছেলে। তিনি একজন পিকআপ ভ্যানচালক। দুর্ঘটনার সময় তিনি সুফিয়া কামাল ফেরিতে ছিলেন। ফেরি বেগম রোকেয়া ও ফেরি সুফিয়া কামালের সংঘর্ষের সময় একটি গাড়ির নিচে চাপা পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তার মরদেহ মাওয়া নৌপুলিশ ক্যাম্পে রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।'
আবু তাহের আরও বলেন, 'মো. হাবিবুল্লাহ নামে একজন (পিকআপ ভ্যানের মালিক) অভিযোগ করেছেন যে, শামীম নামে তার পরিচিত একজন চালক দুর্ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি নাকি সংঘর্ষের সময় ফেরি থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। যদি তাকে খুঁজে পাওয়া না যায়, কর্তৃপক্ষ সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।'
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ও সাত্তার মাদবর মঙ্গলমাঝি ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাউদ্দিন আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিমুলিয়া-সাত্তার মাদবর মঙ্গলমাঝি ঘাট নৌরুটে ৬টি ফেরি চলাচল করছে। ফেরি বেগম রোকেয়া ৩৫টি ছোট-বড় যানবাহন এবং আনুমানিক ৫০-৬০ জন যাত্রী নিয়ে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে শরীয়তপুরের মাঝির ঘাটের দিকে আসছিল এবং ফেরি সুফিয়া কামাল ৩০টি যানবাহন ও কিছু যাত্রী নিয়ে শরীয়তপুরের মাঝিকান্দি থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে যাচ্ছিল। দুটি ফেরি পদ্মা নদীর টার্নিং পয়েন্ট জাজিরা প্রান্তে পৌঁছালে তীব্র স্রোতের কারণে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় সুফিয়া কামাল ফেরিতে গাড়িচাপায় খোকনের মৃত্যু হয় এবং দুটি ফেরির বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। পরবর্তীতে ফেরি সুফিয়া কামাল শিমুলিয়া ঘাটে ও ফেরি বেগম রোকেয়া মাঝিকান্দি ঘাটে পৌঁছে নোঙর করে। অন্যান্য যাত্রীরা নিরাপদ রয়েছেন।'
বিআইডব্লিউটিএ সাত্তার মাদবর মঙ্গলমাঝি ঘাটের শুল্ক আদায়কারী তৌফিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া ও সুফিয়া কামাল ফেরির সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ফেরি বেগম রোকেয়ার গাড়ি উঠানামার র্যাম্পটি বিকল হয়ে গেছে। সেসময় ফেরিতে থাকা আনুমানিক ১৫টির মতো গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।'
ফেরি সুফিয়া কামালের মাস্টার মোহাম্মদ হাসান সাংবাদিকদের জানান, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্রোত বেড়েছে। ফলে নদীতে প্রচণ্ড স্রোতে টার্নিংয়ের সময় ফেরি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। যার কারণে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
Comments