তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে নদীপাড়ের মানুষকে রক্ষার দাবি

ছবি: স্টার

'তিস্তা বাঁচাও, ভাঙন ঠেকাও, মানুষ বাঁচাও, রংপুর বিভাগের বৈষম্য দূর কর'- শ্লোগানে অনুষ্ঠিত হয়েছে 'তিস্তা কনভেনশন'। 

আজ শনিবার 'তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও' সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে লালমনিরহাট সদর উপজেলায় তিস্তা ডিগ্রী কলেজ মাঠে দিনব্যাপী এ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। 

কনভেনশনে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও রংপুর জেলার ১৩টি উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী প্রায় ৩৩টি ইউনিয়নের কয়েকহাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

কনভেনশনে পরিষদের নেতারা এবং ভাঙন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি করেন। 

তিস্তা কনভেনশনে ৬টি দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো- তিস্তা নদী সুরক্ষায় বিজ্ঞানসম্মতভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন। অভিন্ন নদী হিসেবে ভারতের সঙ্গে ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন, তিস্তা নদীতে সারাবছর পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে জলাধার নির্মাণ; তিস্তা নদীর শাখা-প্রশাখা ও উপ-শাখাগুলোর সঙ্গে নদীর আগের সংযোগ স্থাপন ও পুনরায় নৌ চলাচল চালু; ভূমিদস্যুদের হাত থেকে অবৈধভাবে দখল হওয়া তিস্তাসহ এর শাখা-প্রশাখা দখলমুক্ত করা। নদীর বুকে ও তীরে গড়ে উঠা সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ; তিস্তা ভাঙন, বন্যা ও খরায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের স্বার্থসংরক্ষণ। নদী ভাঙনের শিকার ভূমিহীন, গৃহহীন ও মৎস্যজীবীসহ নদীভাঙনে উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন। তিস্তা মহাপরিকল্পনায় তিস্তা নদী ও তিস্তা তীরবর্তী কৃষকের স্বার্থ সুরক্ষায় 'কৃষক সমবায় এবং কৃষিভিত্তিক শিল্প কলকারখানা গড়ে তোলা; মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণে প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিস্তাপাড়ের মানুষদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা। 

তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিস্তার ভাঙন, বন্যা ও খরায় তিস্তাপাড়ের মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্যোগ ও দুর্দশা। উজান থেকে পানি আসলে তিস্তাপাড়ে দেখা দেয় বন্যা। শুস্ক মৌসুমে তিস্তা শুকিয়ে মরা নদীতে পরিণত হয়। তিস্তাপাড়ে সারাবছরই ভাঙন থাকে।' 

তিনি আরও বলেন, 'তিস্তা নদীই হলো রংপুর অঞ্চলের দুঃখের ও দারিদ্রতার একমাত্র কারণ। প্রতিবছর বন্যা, খরা ও ভাঙনে হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। হাজার হাজার পরিবার ভূমিহীন হয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন।'

সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '২০২০ সালে সরকার যখন তিস্তা মহাপরিকল্পনার কথা বলেছিল তখন আমরা আশান্বিত হয়েছিলাম। কিন্তু এখন পযর্ন্ত এ পরিকল্পনার কোন বাস্তবরুপ দেখতে পারছি না তাই আমরা আশাহত হয়েছি।' 

তিনি বলেন, 'সরকার যদি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারে তাহলে নিশ্চয় নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করতে পারবে। আসছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে তিস্তা মহাপরিকল্পনার জন্য সরকার বাজেট ঘোষণা করবে এটা তিস্তাপাড়ের মানুষের দাবি।'
 
তিনি আরও বলেন, 'সরকার এ ব্যাপারে বাজেট ঘোষণা না করলে আমরা তিস্তাপাড়ের মানুষকে নিয়ে রাজপথে নেমে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব।'

তিস্তা কনভেনশনে সংগঠনটির লালমনিরহাট জেলা কমিটির সভাপতি সাংবাদিক ড. শফিকুল ইসলাম কানুসহ বিভিন্ন জেলার নেতৃবৃন্দ ও তিস্তাপাড়ে বসবাসকারী ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের লোকজন বক্তব্য দেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Fulfilling sky-high expectations Yunus govt’s key challenge

Says ICG report on completion of interim govt’s 100 days in office

5h ago