জুমের বাগান, পাহাড় ও ভূমি দখলের ঘটনায় উদ্বেগ, ২৪ নাগরিকের বিবৃতি

দখল হয়ে যাওয়া জুমের বাগান, পাহাড় ও ভূমি ফেরতের আশায় গত রোববার বান্দরবান জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে লামা উপজেলার তিন পাড়ার বাসিন্দারা। ছবি: সংগৃহীত

পাহাড়িদের জুমের বাগান ও ভূমি দখলের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৪ নাগরিক।

বিবৃতিতে বলা হয়, সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভূমির মালিকানা দেশের প্রচলিত আইনে নির্ধারণ করা হলেও তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড়িদের ভূমি মালিকানা সামাজিক। 'সার্বজনীন সম্পদ-সম্পত্তি মালিকানা অধিকার' নীতিই হলো তাদের ভূমি মালিকানার ভিত্তি। ফলে এই মালিকানা বংশ পরম্পরায় মৌখিক। তিনটি সার্কেলের আওতায় পার্বত্য পাড়ার হেডম্যান এবং কারবারিরা এর ব্যবস্থাপনা করে থাকেন। কিন্তু গত ৩০ বছরে এই পার্বত্য পাড়ার নিয়ন্ত্রণাধীন ভূমির পরিমাণ শতকরা ৫১ ভাগ কমে গেছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, পাহাড়িদের সামাজিক মালিকানার অর্ধেকেরও বেশি ভূমি ও ভূসম্পদ হাতছাড়া হয়ে গেছে। বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের লাংকম  কার্বারী পাড়া, জয়চন্দ্র ত্রিপুরা কার্বারী পাড়া এবং রেংয়েন  কার্বারী পাড়ার জুমের বাগান এবং ভূমি দখল হয়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রশাসনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ না থাকার বিবৃতি প্রদানকারীরা গভীরভাবে হতাশা এবং  উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।              

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয় স্থানীয় ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে কোনো ধরনের ব্যবস্থা কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থেকে তাদের সহায়তার বিষয়ে কোনো প্রকার আশ্বস্তও করা হয়নি, যা আমাদের বিক্ষুব্ধ করেছে।

বিবৃতিদাতারা বলেন, 'এমতাবস্থায় আমরা অনতিবিলম্বে বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের দখল হয়ে যাওয়া জুমের বাগান, পাহাড় এবং ভূমি দখলের ঘটনায় আইনানুগ প্রতিকারের লক্ষ্যে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত সম্পন্ন করা, ভূমিদূস্যদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া এবং পাড়াগুলোতে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মানুষের দখলসত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানাই।'

সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টারে 'আমাদের পাড়াগুলো রক্ষা করুন'

শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

বিবৃতিদাতারা হলেন, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য রামেন্দু মজুমদার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সভাপতি এস এম এ সবুর, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস,  সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য রঞ্জিত কুমার সাহা, আইনজীবী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট পারভেজ হাসেম, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, গণজাগরণমঞ্চের সংগঠক জীবনানন্দ জয়ন্ত, সংস্কৃতিকর্মী ড. সেলু বাসিত, সমাজকর্মী রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, সংস্কৃতিকর্মী এ কে আজাদ, উঠোন সাংস্কৃতিক সংগঠন  সভাপতি অলক দাস গুপ্ত, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিভূতী ভূষণ মাহাতো, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বিসিএল) সভাপতি গৌতম শীল।

Comments

The Daily Star  | English

Shomi Kaiser arrested in Uttara

On October 9, former prime minister Sheikh Hasina, Shomi Kaiser, folk singer and former lawmaker Momtaz Begum, former minister Tarana Halim, and 13 others were sued for attempting to kill a BNP activist -- Syed Hasan Mahmud -- in June 2022

1h ago