‘আমাদের পাড়াগুলো রক্ষা করুন’
দখল হয়ে যাওয়া জুমের বাগান, পাহাড় এবং ভূমি ফেরত পাওয়ার আশায় এবার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বান্দরবানের লামা উপজেলার তিনটি পাড়ার বাসিন্দারা।
আজ রোববার সকালে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের লাংকম ম্রো কারবারি পাড়া, জয়চন্দ্র ত্রিপুরা কারবারি পাড়া এবং রেংয়েন ম্রো কারবারি পাড়ার বাসিন্দারা বান্দরবান জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে এই আকুতি জানান।
আজকের মানববন্ধন ও বিক্ষোভে তিন পাড়ার অর্ধশতাধিক মানুষ অংশ নেয়।
রেংয়েন ম্রো দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের জুমের সব জমি দখল হয়ে গেছে। জুম চাষ করতে না পারলে আমরা কীভাবে পাহাড়ে বেঁচে থাকবো। আমরা এখানে অসহায় জীবন যাপন করছি। প্রশাসনকে বার বার জানানোর পরেও কেউ আমাদের পাশে নেই।'
লাংকম পাড়ার কারবারি লাংকম ম্রো অভিযোগ করে বলেন, 'লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক কামাল উদ্দিন কয়েকজন স্থানীয়ের সহায়তায় আমাদের প্রায় ৩০০ একর জুম ভূমি দখল করেছে। আমরা প্রতিবাদ করতে চাইলে বিভিন্ন সময় আমাদের বিরুদ্ধে এই কোম্পানি মামলা করে।'
'তারা আমাদের আম, কলা, আনারস, বাঁশ বাগান কেটে দিয়েছে। আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে অনেকবার জানিয়েছি। কিন্তু কেউ আমাদের আর্তনাদের কথাগুলো শোনে না,' বলেন তিনি।
'আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুতি করছি তিনি যেন আমাদের পাড়াগুলো রক্ষা করেন,' বলেন কারবারি লাংকম।
অভিযোগ অস্বীকার করে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক কামাল উদ্দিন বলেন, '১৯৯৪-৯৫ এবং ১৯৯৬ সালে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে আমরা ৬৪ জন রাবার প্রকল্পের জন্য ১৬০০ একর জায়গা লিজ নিয়েছিলাম।'
তিনি বলেন, 'আমরা কোনো জুমের জমি দখল করিনি। আগুনে পুড়ে যাওয়াতে আমাদের প্রায় ১৫০-২০০ একর জায়গায় নতুন করে আবার বাগানের কাজ শুরু করেছি।'
জুমের জমি দখল নিয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, 'বিষয়টি আমরা জেনেছি। লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এ নিয়ে বৈঠক হয়েছে।'
'কোনো পাহাড়ি যেন তাদের নিজ ভূমি থেকে লামা রাবারের কারণে উচ্ছেদ না হয় সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে,' বলেন তিনি।
Comments