‘ব্রি বঙ্গবন্ধু-১০০, ব্রি-৯২ ধানের ফলন হেক্টরপ্রতি ২ মেট্রিক টন বেশি’

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পূর্ব দাশড়া রহমতপুর গ্রামের পটলবিলে ব্রি বঙ্গবন্ধু ১০০, ব্রি-৯২ জাতের ধান কাটা অনুষ্ঠানে যোগ দেন ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর (বাম থেকে তৃতীয়)। ছবি: স্টার

সম্প্রতি উদ্ভাবিত ব্রি বঙ্গবন্ধু-১০০ ও ব্রি-৯২ জাতের ধানের ফলন অন্যান্য জাতের ধানের ফলনের চেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর।

তিনি বলেন, নতুন উদ্ভাবিত এই দুটি জাতের ধানের আবাদে হেক্টরপ্রতি ধান ২ মেট্রিক টন করে বেশি পাওয়া যাচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার মানিকগঞ্জে ব্রি বঙ্গবন্ধু ১০০ ও ব্রি-৯২ জাতের ধান কাটা অনুষ্ঠানে এসে এসব কথা বলেন ড. শাহজাহান কবীর।

এসময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহ, নতুন জাতের ধানের আবাদ করা চাষি আব্দুল্লাহ আল মামুন সেলিমসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

ড. শাহজাহান কবীর বলেন, 'ক্রমাগত মানুষ তার আবাসন চাহিদা মেটাতে কৃষিজমিতে বাড়ি-ঘর-পুকুর তৈরি করছেন। এছাড়া, নদীভাঙনসহ নানা কারণে দেশের কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে, জনসংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। সবমিলিয়ে খাদ্যের চাহিদা বাড়ছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ধান গবেষণা  ইনস্টিটিউট প্রতিনিয়ত গবেষণা করে যাচ্ছে। উদ্ভাবন করা হচ্ছে উচ্চফলনশীল ধান। ব্রি-২৮ জাতের ধানের পরিবর্তে আনা হয়েছে ব্রি বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের ধান এবং ব্রি-২৯ জাতের পরিবর্তে আনা হয়েছে ব্রি-৯২ জাতের ধান। এবার মানিকগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আবাদ করা হয়েছে ব্রি বঙ্গবন্ধু-১০০ ও ব্রি-৯২ জাতের ধান। ফলনও বেশি পাওয়া গেছে অন্যান্য জাতের ধানের চেয়ে।'

তিনি বলেন, 'ব্রি-২৮ জাতের ধানের আবাদে হেক্টর প্রতি ধান পাওয়া যায় ৬ মেট্রিক টন আর নতুন উদ্ভাবিত ব্রি বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের ধানের আবাদে ধান পাওয়া যাচ্ছে ৮ মেট্রিক টন। অন্যদিকে, ব্রি-২৯ জাতের ধানের আবাদে হেক্টর প্রতি ধান পাওয়া যায় সাড়ে ৭ মেট্রিক টন, আর নতুন উদ্ভাবিত ব্রি-৯২ জাতের ধানের আবাদে ধান পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে ৯ মেট্রিক টন। নতুন উদ্ভাবিত এই দুটি জাতের ধানের আবাদে হেক্টর প্রতি ধান বেশি পাওয়া যাচ্ছে ২ মেট্রিক টন করে। এ কারণে আগামীতে ব্রি-২৮ জাতের ধানের পরিবর্তে নতুন উদ্ভাবিত ব্রি বঙ্গবন্ধু-১০০ এবং ব্রি-২৯ জাতের পরিবর্তে ব্রি-৯২ জাতের ধানের আবাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, 'আমরা নতুন জাতের এই ধানের বীজ সংরক্ষণ করছি এবং দেশের সর্বত্র কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। এতে একদিকে যেমন দেশের ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে উচ্চমূল্যে বিদেশ থেকে আমদানি করা বীজের ওপর নির্ভরশীলতাও কমে যাবে।'

নতুন জাতের ধানের আবাদে সফল চাষী আব্দুল্লাহ আল মামুন সেলিম বলেন, 'এবার আমি ব্রি-৯২ জাতের ধানের আবাদ করেছি ১০ বিঘা জমিতে এবং ব্রি বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের ধানের আবাদ করেছি ২ বিঘা জমিতে। নতুন উদ্ধাবিত এই দুই জাতের ধানের ফলন অন্যান্য জাতের ধানের তুলনায় বেশি হয়েছে। পরের বছরও এ দুটি জাতের ধানের আবাদ করব।'

এদিকে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, 'কৃষি শ্রমিকের মূল্যবৃদ্ধিতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে এবং কৃষকরা বেকায়দায় পড়ে যাচ্ছেন- এমন পরিস্থিতিতে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পক্ষ থেকে ধানের আবাদ এবং ফসল কাটার সময় কৃষকদের যন্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এতে সময় ও খরচ দুটোই কম লাগছে। এখনও শতভাগ কৃষককে এই সহযোগিতা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে, পর্যায়ক্রমের সব কৃষককেই এই সুবিধার আওতায় আনা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Fire breaks out at tissue warehouse in Narayanganj

Upon receiving the information, 19 firefighting units from various stations rushed to the scene and are currently working to bring the blaze under control

32m ago