‘কথায় কথায় দৌড়ে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া যাবে না’ 

ছবি: পিআইডি

বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে দেশবাসীকে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'প্রত্যেককে তার নিজ নিজ জায়গায় থেকে যতটুকু সম্ভব কৃচ্ছতা সাধন করতে হবে। প্রত্যেককে নিজস্ব সঞ্চয় বাড়াতে হবে। মিতব্যয়ী হতে হবে।'

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সবাইকে ৩টি বিষয়ের ওপর গুরত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, 'ব্যক্তিগত পর্যায়ে সঞ্চয় বাড়ানোর মাধ্যমে জাতীয় সঞ্চয় বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে হবে। সকল প্রকার অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, তথা অপচয় কমাতে হবে। সকল বিলাস দ্রব্য পরিহার করে শুধু প্রয়োজনীয় জিনিস কেনায় মনোযোগ দিতে হবে।'

দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, 'সবাইকে একটু দেশি পণ্য ব্যবহারের দিকে নজর দিতে হবে। কথায় কথায় দৌড়ে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া যাবে না। দেশে ভালো চিকিৎসা হবে। শত বাধা ও চাপের মুখে পড়লেও আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। অনেক প্রতিকূল অবস্থায় আমাদের এগুতে হচ্ছে। যেখানে উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে আমরা আমাদের অর্থনীতির উন্নয়ন ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করি।'

তিনি আরও বলেন, 'দেশে-বিদেশে বাইরে সব জায়গায় তো বাধা পেতে হয়। এত বাধা অতিক্রম করেও আমরা অসম্ভবকে সম্ভব করেছি। এর কারণ আমাদের দেশের মানুষের আলাদা একটি শক্তি আছে। সেটা যদি তারা বুঝতে পারে। অনুধাবন করতে পারে, তখন শক্তিটা বোঝা যায়। পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে যেটা প্রযোজ্য হয়েছে।'

আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যবৃদ্ধির চাপ জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, 'আন্তর্জাতিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে আগামী অর্থবছরে জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, সার ও বিদ্যুত খাতে সরকারের যে ঘাটতি হবে তা আমরা মূল্য বাড়িয়ে ভোক্তা পর্যায়ে শতভাগ চাপিয়ে দেব না। ফলে আগামী অর্থবছরে ভর্তুকি ব্যয় বাড়বে। সে কারণে কার্যকর ভর্তুকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভর্তুকি ব্যয় সহনশীল মাত্রায় রাখা এবং আমদানির ওপর চাপ কমানোর লক্ষ্যে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নেব।'

'কোভিড-১৯-এর আরেকটি ঢেউ এসেছে। চতুর্থ ঢেউ। করোনাভাইরাস আমরা সাহসের সাথে মোকাবিলা করেছি। পাওয়ার যোগ্য সবাইকে টিকা দিয়েছি। জীবন-জীবিকার সুরক্ষায় যতটুকু দেওয়ার, তার সবটুকুই আমরা দিতে সক্ষম হয়েছি। করোনা নতুনভাবে আবার দেখা দিয়েছে। সবাইকে বলবো স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলতে। করোনা মোকাবিলায় আমরা যে সাফল্য এনেছি সেটা ধরে রাখতে হবে।'

করোনাটা যখন কমে গেছে আমাদের আমদানি বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এই আমদানি নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেছেন। আমরা বেশিরভাগই ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি করেছি। এগুলো স্থাপন ও চালু হলে দেশ লাভবান হবে। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। এটা করতে গিয়ে হয়তো আমাদের ডলারে কিছুটা টান পড়েছে কিন্তু সেটা এখনো আশঙ্কাজনক কোনো বিষয় নয়। মুদ্রা বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার জন্য আমরা সব পদক্ষেপ নিয়েছি।'

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'মূল্যস্ফীতি যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে তার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য টাকার মূল্যমান পুনঃনির্ধারণ করা হচ্ছে। এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Familiar Dhaka in an unfamiliar mood

The familiar city now appears in an unfamiliar form—no traffic jams, no honking, no packed footpaths

2h ago