পি কে হালদারের গ্রেপ্তারে ভারতকে ধন্যবাদ জানানো উচিত: হাইকোর্ট

পি কে হালদার
পি কে হালদার। ছবি: সংগৃহীত

পি কে হালদারের গ্রেপ্তারের খবরে সন্তোষ প্রকাশ করে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বলেছেন, তাকে গ্রেপ্তার করায় ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানানো উচিত।

আজ সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. কাজী মো. এজারুল হক আকন্দর বেঞ্চ এ কথা বলেন।

তারা বলেন, আমাদের বার্তা পরিষ্কার যে, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্ট। কোনো দুর্নীতিবাজ বা অর্থ পাচারকারিকে ছাড় দেওয়া হবে না।

পি কে হালদারের গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক হাইকোর্টে তুললে বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।

পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারের জন্যে সরকারের পদক্ষেপের বিষয়ে ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর করা মুলতুবি স্বতঃপ্রণোদিত (স্বেচ্ছাসেবী) রুলের শুনানির তারিখ নির্ধারণের জন্যেও উচ্চ আদালতকে অনুরোধ করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।

আদালত জানিয়েছেন, বিষয়টি মঙ্গলবারের শুনানির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর বিচারপতি মো. নাজমুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ জানতে চায়, পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার করে বিদেশ থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার করে দেশে ফিরিয়ে আনতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

২০১৯ সালে দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় পি কে হালদার স্পটলাইটে আসেন। তিনি এবং তার সহযোগীরা ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান- পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেড, এফএএস ফাইন্যান্স এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্স থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।

এই ৪টি প্রতিষ্ঠান তখন থেকে ভয়াবহ সংকটে আছে এবং এদের মধ্যে পিএলএফএস এখন লিকুইডেশনের প্রক্রিয়ায় আছে। এই ৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে জমা দেওয়া তহবিল পুনরুদ্ধার করতে বেশ কয়েকটি ব্যাংক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

দুদকের একজন তদন্তকারী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে তারা হালদারকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানতে পেরেছেন। তারা শিগগির পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ৩টি মামলার চার্জশিট দেবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, 'হালদারের স্যালারি অ্যাকাউন্টে প্রায় ২২৫ কোটি টাকা পাওয়া যায়। তিনি ঋণ জালিয়াতির সুবিধার্থে কমিশন হিসেবে এই অর্থ নিয়েছিলেন।'

পি কে হালদার চারটি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এমন কৌশলে পরিচালনা করেছেন যে, হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার আগে কেউ কিছু সন্দেহ করতে পারেননি।

হালদার তার লোকদের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষে বসান। যেন তিনি সহজেই তাদের কাছ থেকে ঋণ নিতে পারেন এবং তহবিলের অপব্যবহার করতে পারেন।

হালদারের প্রতারিত ৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (পিএলএফএস) চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানা যায়।

পি কে হালদার এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত পি কে হালদারের সঙ্গে সম্পর্কিত ৮৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে এবং প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

এছাড়া, পি কে হালদারসহ ৬৪ জন অভিযুক্তকে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং ১১ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত ১৪ মে দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের আশোকনগর থেকে পি কে হালদার, তার আইনজীবী সুকুমার মৃধাসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে রতের ডিরেক্টরেট অব এনফোর্সমেন্ট (ইডি)।

Comments

The Daily Star  | English

A rush to heal exposed banking wounds

In October, a video on social media showed the manager of Social Islami Bank’s Agargaon branch breaking down in tears after enduring harsh verbal abuse from frustrated customers seeking to withdraw cash.

1h ago