কোথায় হুমায়ুন আজাদের পলাতক খুনিরা

অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ। ছবি: সংগৃহীত

বিশিষ্ট ভাষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ও জেএমবির শীর্ষ জঙ্গি সালাহউদ্দিন আহমেদ ওরফে সালেহীন এখন কোথায় আছেন, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে কোনো তথ্য নেই।

পুলিশ সদরদপ্তর ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ভারতে থাকার পর ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে সালেহীন দেশে প্রবেশ করেন। সবশেষ তখনই তার অবস্থান শনাক্ত করতে পেরেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সদরদপ্তরের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা তাকে মাত্র ৩ দিনের জন্য ট্রেস করতে পেরেছিলাম। তার কাছে যে সেলফোনটি ছিল, সেটি ব্যবহার করা বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা তার ট্র্যাক হারিয়ে পেলি। তারপর থেকে ওই সেলফোনটি বন্ধই আছে।'

সালেহীন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) বর্তমান আমির। ২০১৪ সালে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় প্রিজন ভ্যানে হামলা করে একটি সশস্ত্র দল সালেহীন ও বোমা মিজানসহ জেএমবির ৩ দণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এরপর সালেহীন ভারতে পালিয়ে যান বলে ধারণা করা হয়।

এর আগে ২০০৬ সালের এপ্রিলে সালেহীনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জেএমবির মিডিয়া উইং সাহম আল হিন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সালেহীন নিজেকে জেএমবির আমির (প্রধান) হিসেবে উল্লেখ করেন। সাক্ষাৎকারটি অনলাইনে প্রচারিত হয়।

সালেহীন জেএমবির মজলিস-ই-শুরা (শীর্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কমিটি) সদস্যদের একজন, যিনি অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদকে হত্যার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মতে, হত্যা মামলার আরেক পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর মোহাম্মদ ওরফে শামীম কয়েক বছর আগে দেশেই মারা গেছেন।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিটিটিসির এক শীর্ষ কর্মকর্তা সম্প্রতি ডেইলি স্টারকে বলেছেন, নূর মোহাম্মদের মৃত্যুর নির্দিষ্ট তারিখ, কারণ বা স্থান তাদের জানা নেই।

নূর মোহাম্মদ ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় হুমায়ুন আজাদকে কুপিয়ে হত্যা করেন।

এ হত্যা মামলায়  ৪ জেএমবি সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। সালেহীন, নূর মোহাম্মদ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি ২ আসামি আনোয়ারুল আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ ও মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ কারাবন্দি আছেন।

সিটিটিসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আনোয়ারুল জেএমবির বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ বোমা মিজানের কাছ থেকে সরাসরি প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। মিজান বর্তমানে ভারতের কারাগারে আছেন।

২০০৯ সালের ১৪ মে মিজানকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান, আনোয়ারুল জেএমবির সেকেন্ড-ইন-কমান্ড সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইয়ের নির্দেশে সংগঠনের জন্য তহবিল সংগ্রহে বিভিন্ন অপারেশন ও ডাকাতিতে অংশ নিতেন।

সিটিটিসির বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের ইন চার্জ রহমতুল্লাহ চৌধুরী জানান, সালেহীনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Comments

The Daily Star  | English

Power grid failure causes outage across 21 districts

According to the Power Grid Bangladesh PLC, the situation has since returned to normal

7h ago