‘আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের মুখ দেখতে চাই না’
রায় শুনতে আদালতে যেতে চাননি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন। তিনি রায়ের অপেক্ষা করে আছেন তার কুষ্টিয়ার বাসায়। আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ ও ছোটভাই আবরার ফাইয়াজ ঢাকায় আছেন।
আজ রোববার সকালে রোকেয়া খাতুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি কষ্ট ভুলতে পারছি না কোনোভাবেই। যারা আমার ছেলেকে ৬ ঘণ্টা ধরে পিটিয়ে হত্যা করেছিল তাদের মুখ দেখতে আদালতে যেতে চাই না। শেষ বিচারের দিন (মৃত্যুর পর) তাদের মুখোমুখি হবো।'
প্রায় ২ বছর ২ মাস পর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ।
রোকেয়া জানান তাকে তার স্বামী-সন্তান আদালতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, তিনি যাননি। কুষ্টিয়ার পিটিআই রোডের বাসাতে তিনি আছেন। সকাল থেকেই তার আত্মীয়-স্বজনেরা বাসায় আসতে শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, 'শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুন-খারাবির জায়গা নয়। ওদের সর্বোচ্চ শাস্তি না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এভাবে অসংখ্য মায়ের বুক খালি হতে থাকবে।'
'বিশ্ববিদ্যালয়ে ওরা ছিল আবরারের বড় ভাই। যদি দুটো চড়-থাপ্পড় দিত, যদি একটা হাত ভেঙেও আমার কাছে পাঠিয়ে দিত তবু আমার সান্ত্বনা ছিল। কিন্তু, একেবারে মেরে ফেলতে হবে? রাজনীতিকে কি এত নির্মম-নির্দয় হতেই হবে?'
ঢাকায় যোগাযোগ করা হলে আবরারের ছোটভাই ফাইয়াজ বলেন, 'পরিবারের আরও অনেকেই ঢাকায় আছেন। আমরা সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করি।'
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। ওইদিন রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।
আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে রাজধানীর চকবাজার থানায় বুয়েট শাখার ছাত্রলীগের ১৯ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও অনেক জনকে আসামি করা হয়।
Comments