প্রবীণদের প্রতি ৫ জনে ৪ জন অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত: আইসিডিডিআরবি

বাংলাদেশের ৬০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী প্রতি ৫ জনের ৪ জনই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ডিমেনশিয়া (স্মৃতিভ্রংশ) এবং বিষণ্নতার মতো অসংক্রামক রোগে ভুগছে বলছে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।

আজ শুক্রবার প্রতিষ্ঠানটি এ সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। 

আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবসকে কেন্দ্র করে আয়োজিত ওয়েবইনারে আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী ও ইনিশিয়েটিভ ফর ননকমিউনিকেবল ডিজিজেস-এর প্রধান ড. আলিয়া নাহিদ গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, 'দেখা গেছে প্রবীণদের প্রতি ২ জনের মধ্যে একজন যেকোনো একটি অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত। এ ছাড়া, প্রবীণ পুরুষদের তুলনায় প্রবীণ নারীদের অসংক্রামক রোগে আক্রান্তের হার অনেক বেশী। পুরুষের আক্রান্তের হার ৩৭ শতাংশ ও নারীর আক্রান্তের হার ৫৪ শতাংশ।'

আলিয়া নাহিদ বলেন, 'গত ৬ মাসে প্রবীণদের প্রতি ৩ জনে একজন নিকটস্থ ওষুধ বিক্রেতার কাছে গেছেন চিকিৎসা সেবার জন্য। এই হার ৩৫ শতাংশ। ৩৬ শতাংশ গেছেন বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে আর ১৭ শতাংশ সেবা নিয়েছেন সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে। প্রবীণদের সর্বশেষ ৬ মাসের স্বাস্থ্যসেবার গড় খরচ ছিল ২ হাজার ৪২৯ টাকা। এই প্রবীণদের ৩০ শতাংশ এখনো নিজেরা আয় করেন যা থেকে তারা চিকিৎসা ব্যয় বহন করেন। যারা নিজেরা আয় করেন না তাদের মধ্যে প্রতি ৫ জনে ৪ জন চিকিৎসা খরচের জন্য সন্তানদের আয় কিংবা নিজস্ব সঞ্চয়ের ওপর নির্ভরশীল।'

গবেষণায় অংশগ্রহণকারী প্রবীণ ব্যক্তিদের মধ্যে ৩২ শতাংশ সরকারি সামাজিক সুরক্ষার ভাতা (বয়স্ক বা বিধবা) পান বলে তিনি জানিয়েছেন।

আলিয়া নাহিদ বলেন, 'আমরা দেশব্যাপী ২ হাজার ৭৯৫ জন প্রবীণ ব্যক্তির কাছ থেকে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেশের প্রবীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে একাধিক অসংক্রামক রোগে আক্রান্তের একটা চিত্র পেয়েছি যা বেশ উদ্বেগজনক। সর্বশেষ আদমশুমারী ২০১১ অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ প্রবীণ ছিল যা ২০৪১ সালে দ্বিগুণ হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেজন্য প্রবীণদের স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাকে তাদের দোরগোড়ায় নেওয়া উচিত এবং সামাজিক সুরক্ষার পাশাপাশি প্রবীণদের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষাও নিশ্চিত করতে হবে।'

ওয়েবিনারে ভিডিও বার্তায় আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ প্রবীণদের মধ্যে সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে অসংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, 'অসংক্রামক রোগ এবং যেসব রোগ প্রবীণদের ওপর বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে সেসব মোকাবিলা করার জন্য আমাদের আরও গবেষণা এবং সহযোগিতামূলক কাজ করতে হবে।'

 

Comments