১ মার্চ থেকে বিদেশি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করছে জাপান
জাপান সরকার আগামী মার্চ মাস থেকে দেশে আগত বিদেশিদের প্রবেশের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছে। ১ মার্চ থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল কার্যকর করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা তার কার্যালয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।
ক্ষমতাসীন জোটের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং কোমেইতো প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখার আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এ ঘোষণা দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে কিশিদা বলেন, 'বিদেশিদের প্রবেশাধিকার সংখ্যার সর্বোচ্চ সীমা বাড়িয়ে নেওয়া এবং বিশেষ শর্তের আওতায় বিদেশিদের আগমনের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছে সরকার।'
বিদেশিসহ জাপানে প্রবেশের দৈনিক সর্বোচ্চ সংখ্যা সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে কিশিদা জানান।
দেশটিতে করোনা টিকার বুস্টার ডোজ বিতরণে অগ্রগতির সম্ভাবনা তুলে ধরে কিশিদা বলেন, 'আগামীকাল থেকে প্রতিদিন ১০ লাখ ডোজ করে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'
ভাইরাসের নতুন রূপ ওমিক্রনের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পাওয়া বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে সরকার চলমান নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিষয়টি বিবেচনা করছে বলে জানান তিনি।
বক্তব্যে তিনি জানান, টিকার বুস্টার ডোজ যারা নিয়েছেন এবং যে সব অঞ্চলে ওমিক্রন ছড়াচ্ছে না সেখান থেকে এসেছেন, তাদের কোয়ারেন্টিনে আর থাকতে হবে না বলে আশা করা হচ্ছে।
'এ ছাড়া বিদেশ থেকে আসার তৃতীয় দিনে পরীক্ষায় নেগেটিভ হলে সেদিন কোয়ারেন্টিন শেষ করার অনুমতি দেওয়াও সরকার বিবেচনা করে দেখছে,' বলেন তিনি।
কিশিদা বলেন, '৭টি শিল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে জাপানের আরোপিত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সবচেয়ে কঠোর। দেশে ও বিদেশের ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীরা জাপানের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ব্যাপক সমালোচনা করছেন। এতে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।'
এ বিষয়টি পর্যালোচনা করার জন্য ক্ষমতাসীন জোটের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও কোমেইতো মঙ্গলবার চিফ ক্যাবিনেট সেক্রেটারি মাৎসুনো হিরোকাযু এবং অন্যান্যদের কাছে পৃথকভাবে প্রস্তাব পাঠায়। বিদেশি শিক্ষার্থীরা সরকারি বৃত্তি পাচ্ছে কি না, তা বিবেচনা না করে তাদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য দুই দলই সুপারিশ করে।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রস্তাবে বলা হয়, বিদেশি প্রবেশকারীর দৈনিক সর্বোচ্চ সীমা যাই হোক না কেন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সরলীকৃত পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত, যেন তারা জাপানে প্রবেশ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করা উচিত।
কোমেইতোর প্রস্তাবে বলা হয়, সরকারের উচিত বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পুনরায় আবেদনপত্র গ্রহণ করা শুরু করা উচিত, যেন ১ মার্চ থেকেই তারা দেশে প্রবেশ করতে পারে।
উল্লেখ্য, ওমিক্রনের বিস্তারের পর গত বছর নভেম্বর মাসে অনাবাসিক বিদেশিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল জাপান সরকার। এ ছাড়া, করোনার বিস্তার বন্ধ করতে দেশে ফিরে আসা জাপানি এবং অন্যান্য দেশের বসবাসকারীদের জাপানে পৌঁছানোর পর ৭ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হতো। নতুন ঘোষণায় তা ৩ দিন করার কথা বলা হয়েছে।
আজ জাপানে ৯১ হাজার ৫১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে টোকিওতে শনাক্ত হয়েছে ১৭ হাজার ৩৩১ জনের।
rahmanmoni@gmail.com
Comments