শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করতে পারবে না ইংরেজি মাধ্যম স্কুল
সুপ্রিম কোর্ট গতকাল এক রুলে বলেছে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরকার মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আদায় করতে পারবে না। আদালতের এই রায়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন অভিভাবকরা।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এএম আমিনুদ্দিন ২০১৫ সালে এই রিট আবেদন করেছিলেন। তিনি জানান, আদালতের আদেশ গতকাল থেকেই কার্যকর হয়ে গেছে।
তবে ভ্যাট হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা কীভাবে ফেরত দেওয়া হবে সে ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট কোন নির্দেশনা দেননি বলেও জানান তিনি।
একই সঙ্গে টিউশন ফি’র সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট আরোপকে হাইকোর্ট অবৈধ বলে যে রায় দিয়েছিল তার স্থগিতাদেশ বৃদ্ধি করেছেন আদালত।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর করা লিভ টু আপিলের আবেদনের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ প্রদান করেন।
হাই কোর্টের পূর্বের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারকে আপিল করতে সুপ্রিম কোর্ট অনুমতি দিয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, এনবিআর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নয় বরং স্কুলগুলোর কাছ থেকে সাড়ে সাত শতাংশ হারে ট্যাক্স আদায় করছে।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকরা সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।
ধানমন্ডি এলাকায় বসবাসকারী অভিভাবক শাহনুর হামীদ বলেন, “এই নির্দেশনাকে আমরা স্বাগত জানাই। আশা করছি স্কুলগুলো এটা মেনে চলবে।” তিনি আরও বলেন, “ভ্যাটের পরিমাণ কম মনে হলেও আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের বাড়তি শিক্ষা ব্যয় একটা বোঝা।”
ফয়সাল রহমানের ছেলে ম্যাপল লিফ স্কুলে তৃতীয় গ্রেডের শিক্ষার্থী। তিনি মনে করেন, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে টিউশন ফি’র ওপর ভ্যাট আরোপ করা সম্পূর্ণভাবে বৈষম্যমূলক কারণ বাংলা মাধ্যম স্কুলের শিক্ষার্থীদের এরকম কোন ট্যাক্স দিতে হয় না।
তিনি মনে করেন, “সুপ্রিম কোর্টের আদেশ বৈষম্যের অবসান করবে।”
ধানমন্ডির সানিডেল স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল ইয়াসমিন হাবিব বলেন, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষার্থীরাও বাংলাদেশেরই সন্তান ফলে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের সুযোগ সুবিধা তাদেরও প্রাপ্য। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানান তিনি।
২০০৭-০৮ অর্থ বছরে সরকার ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ফি ও সেবার ওপর সাড়ে চার শতাংশ ভ্যাট আরোপ করে। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের বাজেটে তা বাড়িয়ে সাড়ে সাত শতাংশ করা হয়।
আয়করের পরই মূল্য সংযোজন কর থেকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ রাজস্ব আয় হয় সরকারের। এনবিআর এর তথ্য অনুযায়ী ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে মোট রাজস্বের ৩৬ শতাংশ এসেছিল ভ্যাট থেকে।
Comments