মুক্তচিন্তার পথিক: শরিফা খাতুন

শরিফা খাতুন। স্কেচ: সজীব

প্রতিষ্ঠার ৩৩ বছরে পদার্পণে বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতার প্রচার ও প্রসারে নিরলস কাজ করা ১২ কীর্তিমানকে 'সেনটিনেল অব ফ্রিডম অব থট' সম্মাননা দিচ্ছে দ্য ডেইলি স্টার।

আজ শনিবার ঢাকার র‌্যাডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতার পাটাতন তৈরিতে অগ্রগামী এবং চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি অঙ্গীকারবন্ধ এই ১২ সূর্যসন্তানকে সম্মাননা দেওয়া হবে।

তাদেরই একজন শরিফা খাতুন

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, লেখিকা ও ভাষা আন্দোলনকর্মী শরিফা খাতুন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত।

১৯৩৬ সালে ফেনীতে জন্ম নেওয়া শরিফা খাতুন অল্প বয়সেই পরিচিতি পান। ইডেন কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী হিসেবে তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি তার সহপাঠীদের নিয়ে ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করে প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেন। ভাষা আন্দোলনে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে শরিফা খাতুনকে ২০১৭ সালে সম্মানজনক একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।

অধ্যাপক শরিফা খাতুন ১৯৫৮ সালে শিক্ষক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ৫ দশক ধরে তিনি শিক্ষা খাতের বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং এ খাতে তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। তিনি ১৯৯৩ সালের মে থেকে ১৯৯৬ সালের মে পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক এবং বাংলাপিডিয়া - ন্যাশনাল এনসাইক্লোপিডিয়া অব বাংলাদেশের সম্পাদকীয় দলের সদস্য ছিলেন।

শরিফা খাতুনের ছিল শিক্ষাগত বিষয়গুলোর সঙ্গে দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি সমন্বয়ের অনন্য সক্ষমতা, যার বুদ্ধিদীপ্ত প্রয়োগে তিনি ৪০টিরও বেশি প্রবন্ধ ও বেশ কিছু প্রভাবশালী বই লিখেছেন। তার উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে আছে 'দর্শন ও শিক্ষা' (১৯৯৮), 'অস্তিত্ববাদ ও শিক্ষা' (২০১৩), 'প্লেটোর কাল্লিপলিস' এবং ইংরেজিতে লেখা 'ডেভেলপমেন্ট অব প্রাইমারি এডুকেশন পলিসি ইন বাংলাদেশ'। এই বইগুলো সুনির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর লিখিত এবং এসব বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জনের জন্য এগুলো অবশ্য-পাঠ্য হিসেবে বিবেচিত।

শরিফা খাতুনের আত্মজীবনী 'আলো ছায়ার দোলা' পাঠককে তার জীবন, সময়কাল এবং তিনি যে সমাজে বাস করতেন তার একটি অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ ধারণা দেয়।

ডেইলি স্টার গর্বের সঙ্গে শরিফা খাতুনকে শিক্ষা খাতের বিশেষ অবদান এবং চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় তার অঙ্গীকারের জন্য শ্রদ্ধা জানাচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

What if the US election ends in a Trump-Harris tie?

While not highly likely, such an outcome remains possible, tormenting Americans already perched painfully on the edge of their seats ahead of the November 5 election

3h ago