‘ড্রাইভার’ গোল্ডফিশ

ছবি: সংগৃহীত

হাল আমলে অনেক দেশেই গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে কোনো মানুষ থাকে না। গাড়ি চালায় অত্যাধুনিক রোবট অথবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। তবে এবার চোখ কপালে উঠতে পারে নতুন এক খবর শুনে। আর সেটা হলো সোনারঙা গোল্ডফিশের গাড়ি চালানোর কথা শুনে। 

কী ভাবছেন, স্পঞ্জবব স্কয়ারপ্যান্ট-এর কোনো এপিসোডের চিত্রকাহিনী এটা? আপনার পছন্দের কার্টুন চরিত্র বিকিনি বোটম এবার কেবল স্ক্রিনে নয়, দেখা যাবে বাস্তবেও। ইসরায়েলের বেন-গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের আবিষ্কার তো সেটাই জানাচ্ছে। 

তাদের ডিজাইন করা একটি ইনভার্টেড সাবমেরিন চালাবে মাছ। আর এজন্য গোল্ডফিশটিকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ারও নানা আয়োজন করা হয়েছে বেশ জাঁকজমকভাবে।  

সম্প্রতিকালে রয়টার্সের একটি ভিডিও বেশ সাড়া ফেলে ইন্টারনেটজগতে। সেখানে দেখা যায়, ৪ চাকা সংবলিত গাড়িসদৃশ একটি ছোট যান, ঘরের এক কোণ থেকে আরেক কোণে সেটি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পানিতে থাকা একটি গোল্ডফিশ। 

ছবি: সংগৃহীত

এ ক্ষেত্রে গবেষকরা ছোট গাড়িটিতে লিডার নামের রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন। যা লেজার রশ্মির মাধ্যমে গাড়িটির স্থল অবস্থান ও পানির ট্যাঙ্কে অবস্থিত মাছের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে সাহায্য করবে। একটি কম্পিউটার, ক্যামেরা, ইলেকট্রিক মোটর এবং ওমনি-চাকার সম্মিলনে গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা দেওয়া হয় মাছটিকে। এ জন্য এটিকে তারা ফিশ অপারেটেড ভেহিকল বা এফওভি নামে আখ্যায়িত করেছেন। 

এখন প্রশ্ন হলো, এতকিছু থাকতে বিজ্ঞানীরা মাছকে হঠাৎ ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ দিতে চাইলো কেন? বিজ্ঞানীরা জানেন অন্যান্য প্রাণির মতো মাছকে পানির তলদেশে খাদ্য এবং নিরাপদ বাসস্থানের সন্ধান করতে হয়। এজন্য বেন-গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাচার গিভন এবং তার সহকর্মীরা আচরণগত মস্তিষ্ক গবেষণার রিপোর্ট অনুযায়ী, মাছের স্থলে থাকাকালীন অবস্থায় কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ব্রেনে কোনো পরিবর্তন ঘটে কি না তা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।        

শাচার গিভনের মতে, মাছগুলোকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারটি সবচেয়ে সহজ এবং চমকপ্রদ ছিল। 

তিনি বলেন, 'প্রথম অবস্থায় মাছকে পানিতে ছেড়ে দিয়ে লক্ষ্য করি, মাছটি তার চারপাশের অবস্থা বুঝতে পারে কি না। তারপর দেখা গেল মাছটি উদভ্রান্তের মতো জারের এক দিক থেকে অন্য দিকে সাঁতার কাটতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পরই সেটি শান্ত হয়ে যায়। ঠিক যেমনটা নতুন পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে খাদ্য এবং নিরাপত্তার খোঁজার বেলায় ঘটে।'

তার মতে, যখন মাছগুলো গাড়িটির স্থান পরিবর্তনের ক্ষমতা অর্জন করে তখন বাধা অতিক্রম করতে বাড়তি নির্দেশনা প্রদানের প্রয়োজন পড়ে না। তারা নিজ থেকেই সেগুলো পেরোতে পারে। এ থেকে ধারণা করা যায়, অপরিচিত স্থানে অভিযোজন ঘটানোর সক্ষমতা মাছের মধ্যে রয়েছে। অর্থাৎ, জলে বা স্থলে মাছকে কিন্তু দুর্বল মনে করার অবকাশ নেই। 

রিপলি'স বিলিভ ইট অর নট থেকে অনুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া।

Comments

The Daily Star  | English

Economic expectations: Did govt fall short?

When an interim government was sworn into office following the ouster of the Awami League regime just 100 days ago, there was an air of expectation that the Prof Muhammad Yunus-led administration would take steps to salvage a scam-ridden financial sector and rescue an ailing economy.

7h ago