গেমিংয়ের সঙ্গে সার্বিক সুস্থতার সরাসরি সংযোগ নেই: অক্সফোর্ড গবেষণা

বাংলাদেশেও অনেকের সময় কাটানোর মাধ্যম ভিডিও গেমস। ছবি: অর্কিড চাকমা/স্টার
বাংলাদেশেও অনেকের সময় কাটানোর মাধ্যম ভিডিও গেমস। ছবি: অর্কিড চাকমা/স্টার

ভিডিও গেম খেলায় ব্যয় করা সময়ের সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার তেমন যোগসূত্র নেই বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের এক গবেষণার বরাত দিয়ে গত বুধবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট গবেষকরা বলছেন, গেম খেলার পেছনে ব্যয় করা সময়ের সঙ্গে সার্বিক সুস্থতার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। বরং মনের ইচ্ছায় গেম খেলার অর্থ হচ্ছে, গেমাররা ভালো বোধ করছেন বলেই খেলছেন।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের এই গবেষণায় দিনে অন্তত ১০ ঘণ্টা গেম খেলায় ব্যয় করেন এমন ৩৯ হাজার গেমারের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়েছে।

সুস্থতা পরিমাপের জন্য গেমারদের আত্মতুষ্টির ওপর প্রশ্ন করা হয়। এছাড়াও ভালো লাগা, দুঃখবোধ, রাগ ও হতাশার মাত্রা নিয়েও প্রশ্নের উত্তর দেন গেমাররা।

রয়াল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স জার্নালে এ গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে।

সারা বিশ্বের অনেক গেমারের দাবি, গেম খেললে তাদের মানসিক সুস্থতার ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

লেমিংস ও গ্র্যান্ড থেফট অটো (জিটিএ) গেমের অন্যতম ডিজাইনার মাইক ডেইলি দাবি করেন, গেম খেলার বিভিন্ন উপকার আছে।

সমীক্ষায় জিটি স্পোর্ট গেমের তথ্য নেওয়া হয়। ছবি: সনির ওয়েবসাইট থেকে
সমীক্ষায় জিটি স্পোর্ট গেমের তথ্য নেওয়া হয়। ছবি: সনির ওয়েবসাইট থেকে

তিনি বলেন, 'তবে আমি নিশ্চিত নই যে এগুলো কোনো "সুস্থতার সূচক" দিয়ে পরিমাপ করা সম্ভব। তবে জীবনের অন্য সব কিছুর মতো, এখানেও সমন্বয় রাখতে হবে। দিনে ২৪ ঘণ্টা গেম খেলা নিশ্চয়ই আপনার জন্য ভালো হবে না। আবার দিনে ২৪ ঘণ্টা খাওয়াদাওয়া করুন বা ব্যায়াম করুন, সেটাও ভালো কিছু হবে না।'

চীনে আইন করে গেমিংয়ের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। শিশুরা শুক্র, শনি ও রোববার, এই ৩ দিন দিনে মাত্র ১ ঘণ্টা করে গেম খেলার সুযোগ পায়।

২০২০ সালে একই প্রতিষ্ঠানের আরেক গবেষণায় বলা হয়েছিল, বেশি সময় ধরে গেম খেললে আনন্দে থাকা যায়। তবে ওই গবেষণায় এবারের মতো এত সংখ্যক গেমারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

উভয় গবেষণায় কাজ করেছেন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক অ্যান্ড্রু প্রজিবিলস্কি। তার বক্তব্য, 'সাধারণভাবে চিন্তা করলে মনে হয়, আপনার হাতে যদি গেম খেলার জন্য বেশি সময় থাকে তাহলে আপনি তুলনামূলক সুখী মানুষ।'

তিনি বলেন, 'তবে ভিডিও গেমস ভালো না খারাপ, তা নিয়ে আমাদের সাধারণ যে ধারণা সে বিষয়ে সর্বশেষ সমীক্ষায় আমরা সুস্পষ্ট কিছু প্রমাণ পেয়েছি। যেমন আপনি কতক্ষণ গেম খেলছেন, তার সঙ্গে আপনার সার্বিক সুস্থতার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই।'

'যদি বিষয়টা এমন হয় যে, বাধ্যবাধকতা থেকে নয় বরং খেলতে ইচ্ছা করছে দেখে খেলছেন, সে ক্ষেত্রে গেমাররা অপেক্ষাকৃত ভালো বোধ করবেন,' যোগ করেন অ্যান্ড্রু। 

বাংলাদেশে আয়োজিত গেমিং প্রতিযোগিতা। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে আয়োজিত গেমিং প্রতিযোগিতা। ছবি: সংগৃহীত

এ সমীক্ষায় সনি, মাইক্রোসফট, নিনটেনডো সহ কিছু শীর্ষ গেমিং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গেমারদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ৬ সপ্তাহের গেমিং তথ্য সরবরাহ করেছে।

যে গেমগুলোর তথ্য নেওয়া হয়েছে। সেগুলো হল-অ্যানিমেল ক্রসিং: নিউ হরাইজনস, অ্যাপেক্স লিজেন্ডস, ইভ অনলাইন, ফরজা হরাইজন ৪, গ্র্যান টুরিজমো স্পোর্ট, দ্য ক্রু ২।

 

Comments

The Daily Star  | English

Beximco workers' protest turns violent in Gazipur

Demonstrators set fire to Grameen Fabrics factory, vehicles, vandalise property

1h ago