১ জুলাই থেকে অস্ট্রেলিয়ার ভিসায় পরিবর্তন
অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো 'অভিবাসনবান্ধব' হিসেবে পরিচিত লেবার পার্টির সরকার বিদেশি নাগরিকদের আরও বেশি সুবিধা দিতে ভিসায় পরিবর্তন এনেছে।
অস্ট্রেলিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজও অভিবাসী বাবা-মায়ের সন্তান। তার মাতৃভাষা ইংরেজি নয়। অস্ট্রেলিয়ার ভিসার এ পরিবর্তন বর্তমান ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারের বাস্তবায়ন।
সাধারণত প্রতি বছর নতুন অর্থ বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন প্রকল্পগুলোর পুনর্বিন্যাস করা হয় এবং বিদেশি নাগরিকদের জন্য দেশটিতে নতুন সুযোগের উন্মোচন হয়।
তবে এ বছর করোনাভাইরাস মহামারির প্রতিক্রিয়া হিসেবে নির্দিষ্ট ভিসাধারীদের জন্য অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন বিভাগ নতুন সুযোগের পাশাপাশি ভিসাতেও কিছু পরিবর্তন এনেছে।
১ জুলাই থেকে দক্ষ কর্মীদের স্থায়ী বসবাসের নতুন পথ, 'ওয়ার্ক হলিডে', ভিসাধারীদের কাজের জন্য আরও বেশি সুযোগ এবং করোনার সময় সীমান্ত বন্ধ থাকার কারণে অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থাকা ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের হারানো সময় পূরণ করার সুযোগ দিয়েছে।
এখন অস্থায়ী দক্ষ শ্রমিকরা সহজেই স্থায়ী অভিবাসনের আবেদন জানাতে পারবেন।
১ জুলাই থেকে তারা 'টেম্পোরারি রেসিডেন্স ট্রানজিশন' ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। নিয়োগদাতাদের মনোনয়নপ্রাপ্তি সাপেক্ষে অস্থায়ী দক্ষ কর্মীরা স্থায়ীভাবে অস্ট্রেলিয়ায় থাকা ও কাজ করার সুযোগ পাবেন।
ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্সের একজন মুখপাত্র এসবিএস নিউজকে জানান, উচ্চ পর্যায়ের দক্ষতা-সম্পন্ন অভিবাসীরা, যারা বৈশ্বিক মহামারির সময় অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করেছেন, তারা 'বিশেষ ছাড়' হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় থাকা অব্যাহত রাখতে পারবেন এবং এক পর্যায়ে তারা অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্বও পেতে পারেন।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে 'টি-আর-টি স্ট্রিমে'। স্থায়ী অভিবাসনের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে তারা আর বয়সের কারণে অনুপযুক্ত বা বাধাগ্রস্ত হবেন না। এর আগে, যেসব ভিসাধারীর বয়স ৪৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি, তাদের ক্ষেত্রে 'পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি ভিসা' পাওয়ার সুযোগ অনেক সীমিত ছিল।
সাম্প্রতিক পরিবর্তনের পর এ সুযোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো বয়সসীমা থাকছে না।
করোনাভাইরাস মহামারির সময় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে যেসব টেম্পোরারি গ্র্যাজুয়েট ভিসাধারীদের সময় নষ্ট হয়েছে, তারা একটি 'রিপ্লেসমেন্ট' ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এর জন্য উপযুক্ততা লাভ করতে হলে, তাদেরকে অবশ্যই এই ধারার বৈধ ভিসাধারী হতে হবে। অথবা তারা যদি আগে এই ভিসা পেয়ে থাকেন, তাহলে সেটির মেয়াদ ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বা তার পরের কোনো তারিখে শেষ হয়ে থাকলেই কেবল তারা এই রিপ্লেসমেন্ট ভিসার আবেদন জানাতে পারবেন।
এছাড়াও, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যবর্তী সময়টিতে অস্ট্রেলিয়ার বাইরে অবস্থান করলেই কেবল এ ভিসার জন্য তারা যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।
আশা করা হচ্ছে, এ পরিবর্তনের মাধ্যমে উপকৃত হবেন প্রায় ৩০ হাজার ভিসাধারী।
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments