অবৈধ পথে ইতালি না যাওয়ার অনুরোধ রাষ্ট্রদূত এনরিকোর
ইতালির রাষ্ট্রদূত এনরিকো নুনজিয়াতা বলেছেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিপদজনক পথে ইতালি গমন আমাদের সবার জন্য উদ্বেগজনক। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ পথে ইতালি না যাওয়ার অনুরোধ রইল।
আজ শুক্রবার দুপুরে শরীয়তপুর পৌরসভা অডিটোরিয়ামে মানবপাচার প্রতিরোধ ও নিরাপদ অভিবাসনে উৎসাহিত করার লক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
এনরিকো নুনজিয়াতা বলেন, 'মানবিক কারণে শ্রম অভিবাসীদের প্রতারণা ও নির্যাতন থেকে বাঁচাতে সর্বোপরি মানবপাচার দমনে জনসচেতনতা বৃদ্ধি একান্ত প্রয়োজন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে ইতালি বিপুল সংখ্যক অনিয়মিত অভিবাসী এবং রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীদের সম্মুখীন হচ্ছে, যারা বলকান এবং ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে সে দেশে ঢোকার চেষ্টা করছেন।'
তিনি বলেন, 'এ বছরের শুরুতে উত্তর আফ্রিকার দেশগুলো থেকে মধ্য ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে প্রায় ২১ হাজার ৮৪৮ অনিয়মিত অভিবাসী প্রবেশ করেছেন, যা গত বছরের তুলনায় ২২ ভাগ বেশি। ১৪ হাজার ৭৫৮ জন পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় পথে আসেন। যার মধ্যে ইতালিতে পৌঁছান ৫ হাজার ৫৫৭ জন। যা গত বছরের তুলনায় ১৫৩ ভাগ বেশি। ২০২২ সালে ২৮ হাজার ৪০৫ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে ইতালিতে রেজিস্ট্রার করা হয়েছে। এদের মধ্যে বাংলাদেশের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ২০২১-২২ সালে বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার ৬০০ শ্রমিক ইতালিতে কাজ করার ভিসা পেয়েছেন। ৩ হাজার শ্রমিককে কাজের জন্য অনুমতি প্রদান হয়েছে।'
ইতালির রাষ্ট্রদূত বলেন, 'বিপদজনক পথে যারা ইতালি যাওয়ার ঝুঁকি নেন, তারা মানবপাচারের শিকার হয়ে প্রতারণা, হিংস্রতা ও অত্যাচারিত হয়ে অমানবিক অবস্থায় পড়েন। ভূমধ্যসাগর এবং উত্তর-পশ্চিম আটলান্টিকের সাগর পথ পাড়ি দিতে গিয়ে গত বছর ৩ হাজার ২৩১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।'
'তাই মানবপাচার বন্ধের জন্য পাচারকারীদের দমন, অবৈধ অভিবাসন বন্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, অবৈধ পথে বিদেশ যাওয়ার পেছনের মূল কারণ খুঁজে বের করা এবং শ্রম অভিবাসীদের আইনানুসারে বিকল্প পথ প্রদর্শন, এসব কিছুর সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রচেষ্টা জরুরি। বৈধভাবে ইতালিতে বাংলাদেশিদের আরও জোর সুযোগ তৈরি করতে কাজ করছে ইতালি সরকার। দক্ষ শ্রমিক তৈরি করতে বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান রইল', যোগ করেন তিনি।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন এবং শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুজ্জামান।
Comments