অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি তরুণী খুনে শঙ্কিত অভিভাবক
অস্ট্রেলিয়া সিডনিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক তরুণী খুন হওয়ার ঘটনায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সেখানকার অভিভাবকরা।
গত ৩০ জানুয়ারি পশ্চিম সিডনির প্যারামাট্টার পেনান্ট হিলস রোডের অ্যাপার্টমেন্টে অ্যাসিড ভর্তি বাথটাব থেকে আনিমা হায়াৎ অ্যানি নামের ওই তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০ বছর বয়সী এক পাকিস্তানি তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯ বছরের মেডিকেল শিক্ষার্থী অ্যানি অনেকদিন থেকে ওই তরুণের সঙ্গে বসবাস করে আসছিলেন।
অ্যানির মৃত্যুতে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের সন্তানদের নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেক অভিভাবক।
যাদের মধ্যে আছেন অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল মতিন, রাজনৈতিক নেতা শাহে জামান টিটু, সাংস্কৃতিক সংগঠন আমাদের কথার প্রধান পূরবী পারমিতা বোস, টেলিকমিউনিকেশন সংস্থা টেলিওজের প্রধান নির্বাহী জাহাঙ্গীর আলম, অস্ট্রেলিয়ায় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি রতন কুণ্ডু, সংগীতশিল্পী ফায়িজা কালাম রুবা, আওয়ামীলীগ নেতা হাসান শিমুন ফারুক, প্রমুখ।
এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত বিজয় কণ্ঠ'র সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ বলেন, 'অস্ট্রেলিয়ার আইনকে মান্য করেই আমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। সঙ্গী নির্বাচনের ব্যাপারে ভালো-মন্দ ও এর ভবিষ্যৎ পরিণতির বিষয়ে তাদের বোঝাতে হবে।'
অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুসারে, সন্তানের বয়স ১৮ বছর হওয়ার পর সে তার অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই নিজের পছন্দমতো সঙ্গী বেছে নিতে পারে।
নিহত অ্যানির বাবা আবু হায়াত ও মা মাহাফুজা আক্তার ডেইলি মেইল অস্ট্রেলিয়া'কে বলেছেন, তাদের মেয়েকে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ভর্তি একটি বাথটাবে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এর বিচারের জন্য তারা লড়াই চালিয়ে যাবেন।
বাবা আবু হায়াত বলেন, 'যা করা হয়েছে তার জন্য আমি আমার মেয়ের মুখটি দেখতে পাচ্ছি না'।
অ্যানিকে হত্যার অভিযোগে আটক মেরাজ জাফরের (২০) এক স্কুলবন্ধু জানান, তিনি একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার ও একজন পাকিস্তানি অভিবাসীর ছেলে। পাবলিক স্কুলে যাওয়ার আগে তিনি মালেক ফাহদ ইসলামিক স্কুলে পড়তেন। স্কুলে তিনি পরিচিত ছিলেন একজন উদাসীন শিক্ষার্থী হিসেবে।
জানা যায়, অ্যানির বাবার সঙ্গে মেরাজের ২ দফায় তর্ক হয়। এরপর থেকে অ্যানি ও মেরাজ আলাদা বাস করতে শুরু করেন। এ সময়টাতে অ্যানি পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
অ্যানির বাবা আবু হায়াত বলেন, 'ওর (অ্যানি) বডিটা নষ্ট হয়ে গেছে। পুলিশ ওর বডিটা আইডেন্টিফাই করতে পারছে না। এ জন্য গোয়েন্দা পুলিশ আমার ও আমার স্ত্রীর ডিএনএ নমুনা নিয়ে গেছে। এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর লাশ হস্তান্তর করা হবে।
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments