অস্ট্রেলিয়ায় প্রযুক্তির অপব্যবহার বাড়ছে
অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি ৪ জনের একজন প্রযুক্তির অপব্যবহার করছেন বলে নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
মোনাশ ইউনিভার্সিটির ডক্টর অ্যাশার ফ্লিন ও আরএমআইটি ইউনিভার্সিটির ডক্টর অ্যানাস্তাসিয়া পাওয়েলের নেতৃত্বে 'অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল রিসার্চ অর্গানাইজেশন ফর উইমেনস সেফটি' গবেষণাটি সম্পন্ন করে। ১৮ বছরের বেশি বয়সী ৪ হাজার ৫৮৬ অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকের ওপর ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই জরিপ চালানো হয়। প্রযুক্তির অপব্যবহারে হয়রানির কবলে পড়া প্রায় ৩০ জনের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়।
'অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল রিসার্চ অর্গানাইজেশন ফর উইমেনস সেফটি' এর রিপোর্টে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি ৪ জনের একজন প্রযুক্তির 'অপব্যবহার' করছেন এবং প্রতি ২ জন অপব্যবহারের কবলে পড়ছেন।
সংস্থাটির সিইও পদ্মা রমন বলেন, গবেষণাটি নতুন অন্তর্দৃষ্টি খুলে দিয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের 'অন্য রূপ' আমরা খুঁজে পেয়েছি।
গবেষণায় দেখা গেছে, জরিপ করা অস্ট্রেলিয়ানদের প্রতি ৪ জনের একজন তাদের জীবদ্দশায় কমপক্ষে একবারের জন্য হলেও কাউকে না কাউকে প্রযুক্তির অপব্যবহার করে হেনস্থা করেছেন।
একজন ব্যক্তি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি তার প্রাক্তন সঙ্গীকে ২ ঘণ্টার ব্যবধানে ১৫০ বার ফোন করেছিলেন। কারণ তিনি তার কাছ থেকে উত্তর চেয়েছিলেন, পুনরায় তার সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য।
অনেক অস্ট্রেলিয়ান নতুন কারও সঙ্গে দেখা করতে এবং অন্তরঙ্গ সম্পর্ক তৈরি করতে 'মোবাইল ডেটিং অ্যাপস' নামের একটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন। এই নতুন প্রযুক্তির অগ্রগতি সম্ভাব্য নিপীড়নের সুযোগ করে দেয়।
পদ্মা রমন বলেন, 'অস্থায়ী ভিসাধারীরা এই ধরনের অপব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। প্রযুক্তির অপব্যবহারকারী এবং যিনি নিপীড়নের কবলে পড়ছেন তাকে যে একই দেশে থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। অন্য দেশে থেকেও অস্ট্রেলিয়ায় বাস করা একজনকে নিপীড়ন করা সম্ভব।'
হয়রানিমূলক আচরণের মধ্যে রয়েছে আপত্তিজনক বা হুমকিমূলক বার্তা পাঠানো, গোপনে ক্ষতিকারক ভিডিও ধারণ এবং কারও অজ্ঞাতে তার মোবাইল ফোনে অবাঞ্ছিত সফটওয়্যার ইনস্টল করা।
হয়রানির কবলে পড়া একজন জানিয়েছেন, তার প্রাক্তন সঙ্গী তাকে প্রতিদিন ৫০ বার টেক্সট এবং কল করতেন। যখন তিনি তার নম্বর ব্লক করেন তখনও তিনি তার সঙ্গে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে যোগাযোগের চেষ্টা করেন, এমনকী অফিসের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও চেষ্টা অব্যাহত রাখেন।
ই-সেফটি কমিশনের কমিশনার জুলি ইনম্যান গ্রান্টের মতে, প্রযুক্তির অপব্যবহার অস্ট্রেলিয়ার আইনের অধীনে অপরাধ এবং আদালতে যাওয়ার আগে পুলিশকে রিপোর্ট করা যেতে পারে।
এ আইনে অপরাধগুলোর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে হুমকিমূলক ই-মেইল, টেক্সট পাঠানো, ট্র্যাকিং অ্যাপস ও স্পাইওয়্যার ব্যবহার, অনলাইন বুলিং এবং সম্মতি ছাড়াই অন্তরঙ্গ ছবি বা ভিডিও শেয়ার করার মতো আচরণ।
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments