গ্যাস সংকট আমরা তৈরি করিনি: তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী

toufique_e_elahi.jpg
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। ফাইল ছবি

দেশে চলমান গ্যাস সংকটের জন্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, 'গ্যাস সংকট কিন্তু আমাদের তৈরি না। আজকে যদি রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ না থাকত আর আকাশচুম্বী দাম না হতো তাহলে আপনারা টেরও পেতেন না। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অভাব হতো না।'

আজ মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলার তিতাস গ্যাসের আওতাধীন এলাকায় সিসি ক্যামেরার সাহায্যে গ্যাস সঞ্চালন লাইন মনিটরিং কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম বলেন, আমদানি কমাতে এখন আমরা বিদ্যুৎ ও গ্যাস ব্যবহার কিছুটা সীমিত করার ওপর জোর দিচ্ছি। আগে যেটা ৫ ডলারে বিক্রি হয়েছে এখন সেটা ৩০ ডলার। দাম ৬ গুণ বেড়ে গেছে। কয়লার দাম দুই তিন গুন বেড়েছে। আমাদের চলে মূলত গ্যাস, ফার্নেস অয়েল, ডিজেল ও কয়লা। এগুলোর দাম আকাশচুম্বী।

জ্বালানি সংকটের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, দাম বাড়ায় আমাদের নিজেদের কোনো হাত নেই। ইউরোপীদের হাত আছে। এই আকাশচুম্বী দাম যতদিন থাকবে আমাদের সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ থাকবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা আমাদের আছে। গ্যাস সরবরাহ ক্ষমতাও আছে। এখন সংকট হলো আকাশচুম্বী দাম। আমাদের আয়ের মধ্যে ব্যয় থাকতে হবে। আমরা ইউরোপ না। সেজন্য আমাদেরকে গ্যাসের ব্যাপারেও সর্তক থাকতে হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'কতদিন দাম বেশি থাকবে আমরা কেউ বলতে পারব না। যারা যুদ্ধ চালাচ্ছে তারা বলতে পারবে। তাদের কি স্বার্থ আছে তারা বলতে পারবে। অস্ত্র বিক্রির জন্য যুদ্ধ চালাচ্ছে নাকি তেলের দাম বাড়ানোর জন্য চালাচ্ছে আমরা জানি না। যারা তেল রপ্তানি করে ও বিনিয়োগ করে তারা লাভবান হচ্ছে। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই। আমরা ছোট দেশ। আমরা নিজেদের গুছিয়ে রাখি। আমরা অপচয় না করি।'

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও চুরি বন্ধ করার ব্যাপারে তিনি বলেন, অবৈধ কোনো কানেকশন আপনারা বরদাস্ত করবেন না। এই অবৈধ সংযোগ যদি আমরা কমাতে পারি তাহলে যে পরিমাণ গ্যাস আছে তা বৈধ ব্যবহারকারীরা একটু বেশি পাবে। অনেক জায়গায় দেখা যায় প্রেশার কমে যায়। এগুলো না থাকলে এটা হবে না।'

তিনি বলেন, 'আমাদের মূল কাজ শিল্প ও কৃষিকে বাঁচিয়ে রাখা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বাড়ির কাছে একটু জায়গা থাকলে সেখানে কিছু লাগাও। আমরা সবটুকু জায়গা যদি ব্যবহার করি তাহলে আমাদের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। আজ আমরা খাদ্যশস্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। বড় বিপদ আমাদের ওপর আসবে না। সামর্থ্য যদি ভালোভাবে ব্যবহার করি তাহলে শিল্প কৃষি বেঁচে থাকবে এবং আমরা আরও উন্নয়ন করতে পারব।'

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান, তিতাসের এমডি হারুনুর রশীদ মোল্লা, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রমুখ।

Comments