বন্যায় কিশোরগঞ্জে ২২৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ
বন্যার কারণে কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকায় ১৯১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩৪টি হাইস্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ওই এলাকার বেশির ভাগ রাস্তা-ঘাট ডুবে গেছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার বণিক এ বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বেশির ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ১৯১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এখন পর্যন্ত যে ১৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে ৫১টি চালু করা হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১৩ হাজার মানুষ। তাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মালামাল এবং গবাদিপশুও রয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরও জানান, কিশোরগঞ্জ জেলায় মোট ১ হাজার ৩০০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বন্যার কারণে হাওর অধ্যুষিত ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী, তাড়াইল ও করিমগঞ্জ উপজেলার ১৯১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে শিক্ষকদেরকে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুন নাহার মাকছুদা জানান, বন্যার কারণে কিশোরগঞ্জে ৩৪টি হাইস্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
বুধবার কিশোরগঞ্জের ধনু নদীর পানি ৫০ সেন্টিমিটার ও কালনী নদীর পানি ১৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান।
কিশোরগঞ্জের ১৩টি উপজেলার ১০টি বন্যাপ্লাবিত হয়েছে। জেলার অষ্টগ্রাম, ইটনা, মিঠামইন, করিমগঞ্জ, তাড়াইল, নিকলী, বাজিতপুর ও ভৈরব উপজেলার ২ শতাধিক গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ৩ লাখেরও বেশি মানুষ। বন্যা দুর্গতদের জন্য ২৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ৩ হাজার ১৩৮টি পরিবারের প্রায় ১২ হাজার মানুষকে আশ্রয় নিয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, বন্যা কবলিত মানুষের জন্য এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৭০ মেট্রিক টন চাল, ২ হাজার ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
Comments