টোকিও অলিম্পিকের আলোকে হবে বিপিএলের কোভিড গাইডলাইন
বাংলাদেশ তো বটেই গোটা বিশ্বে ক্রমেই ভয়ানক হয়ে উঠছে করোনাভাইরাস। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে হুহু করে। দেশের এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিপিএল)। আসরটি কী সফলভাবে আয়োজন করতে পারবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)? মূল আলোচনা এখন এ বিষয় নিয়েই।
আগামী শুক্রবার থেকেই মাঠে গড়াতে যাচ্ছে দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে জমজমাট এই আসর। খেলোয়াড়দের জৈব সুরক্ষিত বলয়ে রেখে আয়োজন করা হবে এবারের বিপিএল। এরমধ্যেই খেলোয়াড়দের পিসিআর টেস্ট চালু করেছে সংস্থাটি। সবমিলিয়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রুখতে যে গাইডলাইন তৈরি করেছে বিসিবি, তা অনেকটা টোকিও অলিম্পিকের আদলে। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী বললেন এমনটাই।
'বাংলাদেশ সহ সারা পৃথিবীতে করোনার ঊর্ধ্বমুখী যে প্রবণতা সেই বাস্তবতার মধ্যে আমরা এবারের বিপিএল আয়োজন করছি। খেলার সঙ্গে সম্পর্কিত যারা আছেন, সবার সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে টুর্নামেন্টটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিপিএল যে কমিটি আছেন, তারা একটি গাইড লাইন তৈরি করেছেন। সেই অনুসারে আমাদের কোভিড সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালিত হবে।' - বলেন দেবাশীষ।
আর এ গাইডলাইন টোকিও অলিম্পিকের আদলে হলেও দেশের প্রেক্ষাপটে কিছুটা পরিবর্তন করেই প্রয়োগ করা হবে বলে জানান বিসিবির প্রধান চিকিৎসক, 'করোনার যে গাইডলাইনটা আমরা এই বিপিএলে প্রয়োগ করতে যাচ্ছি এটা টোকিও অলিম্পিকের আলোকে চেষ্টা করা হয়েছে। এখানকার বিদ্যমান বাস্তবতার সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চেষ্টা করছি সেটাকে প্রয়োগ করতে।'
এর আগেও করোনাভাইরাসের সময়ে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। সেই অভিজ্ঞতাও কাজে লাগাতে চান দেবাশীষ, 'আমরা এর আগে বিসিএল সহ অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক যে সিরিজগুলো আয়োজন করেছি মোটামুটি চেষ্টা করেছি স্বাস্থ্য সুরক্ষা যতটুকু সম্ভব নিশ্চিত করার জন্য। মোটামুটি বড় কোন সমস্যা ছাড়াই টুর্নামেন্টগুলো শেষ করতে পেরেছি। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আশা করছি এই বিপিএলটা একইভাবে পরিচালনা করব।'
আগের দিন চারজনের করোনা শনাক্ত হলেও বুধবার কতজন আক্রান্ত হয়েছে তা জানাতে চাননি দেবাশীষ। তিন দিন ব্যাপী এ পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরই জানাবেন। তবে প্রটোকল মেনেই ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানান তিনি, 'যেহেতু এগুলো মেডিকেল ক্লাসিফায়েড ব্যাপার সেহেতু জিনিসগুলো প্রকাশ্যে বলতে পারছি না। কিন্তু যে প্রোটোকল আছে আমাদের কোভিড গাইড লাইন সেই অনুসারে যারা পজিটিভ হচ্ছে তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা আমরা করছি।'
একই সঙ্গে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলোকে ফলাফল সম্পর্কে অবগত করছেন বলে জানান তিনি, 'আমরা প্রতিটি অংশগ্রহণকারীকে টেস্ট করছি, যারা নেগেটিভ হবেন তারা এবং যাদের ডাবল ভ্যাক্সিনেশন আছে তারা বাবলে প্রবেশ করবেন। তো আমরা গতকাল, আজকে এবং আগামিকাল তিনদিন আমরা টেস্ট কার্যক্রম চালাচ্ছি। এর মধ্যে যে রেজাল্টগুলো আসছে সেগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের সঙ্গে শেয়ার করছি।'
গাইডলাইন অনুযায়ী বাবল কেমন হবে তারও কিছু ইঙ্গিত দেন দেবাশীষ, 'ঠিক কঠোর না। আগে যে বায়ো বাবল আমরা বলতাম , এখন আগের সেই কনসেপ্ট থেকে পুরো স্পোর্টস সরে আসছে। এখন কিন্তু বায়োবাবল কথাটা উল্লেখ্য করা হচ্ছে না। এখন ম্যানেজড ইভেন্ট ইনভারমেন্ট (এমইই) বলা হচ্ছে। জিনিসটা বিদ্যমান বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রেন্ডলি করার জন্য বায়োবাবলকে কিছুটা শিথিল করা হচ্ছে। এমনই কনসেপ্টটা টোকিও অলিম্পিকেও দেখা গেছে।'
টোকিও অলিম্পিকে অনেক চেষ্টা করেও অবশ্য করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে পারেনি জাপান। ১৫ দিনের এ আসরে সাড়ে ১১ হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে আক্রান্ত হন ৭৮৮ জন। সেখানে বিপিএলের আয়োজন চলবে মাসব্যাপী। তার উপর করোনাভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন ছড়ায় বেশ দ্রুত। সবমিলিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেই বিসিবি।
Comments